নীলফামারী: নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা ভেঙে পড়েছে। অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে গোটা হাসপাতালে।
হাসপাতালটিতে প্রতিদিন দুর্ভোগে পড়ছেন চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনরা। তারা জানান, সেখানে হাত-মুখ ধোয়ার বেসিন নেই, পানির কল নষ্ট। টয়লেটের ভেতরে ময়লা ভর্তি আর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বলতে প্রায় কিছুই নেই।
জানা গেছে, ২০১৯ সালের ৩০ জানুয়ারি হাসপাতালটি ১০০ শয্যা থেকে ২৫০ শয্যায় উন্নীত হয়। এরপর ২০২০ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয় পুরোদমে কার্যক্রম। হাসপাতালের শৌচাগারগুলো দিনে অন্তত একবার পরিষ্কার করার কথা। কিন্তু পর্যাপ্ত জনবলের অভাবে সেগুলো আর পরিষ্কার করা হয় না। রোগীর চাপ থাকায় শৌচাগারগুলো অনেক তাড়াতাড়ি নোংরা হয়।
সরেজমিনে দেখা যায়, ডায়রিয়া ওয়ার্ডে একটি টয়লেটে পানি জমে আছে। বাকি শৌচাগারগুলো নোংরা ও অপরিষ্কার। পুরুষ ওয়ার্ডের শৌচাগারের অবস্থাও একই। প্যানের ওপর ময়লা ভেসে আছে। নেই স্বাস্থ্যবিধির কোনো বালাই। এছাড়া ওয়ার্ডে অবাধে চলাফেরা করছে কুকুর। সার্জারি ওয়ার্ডে শৌচাগারের অবস্থা আরও শোচনীয়। টয়লেটের উপরিভাগে আবর্জনার স্তুপ পড়ে গেছে।
হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স রোকসানা পারভীন বলেন, চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের অধিকাংশই গ্রামের। তারা অতোটা সচেতন না। বার বার বলার পরও তারা দেয়ালে পানের পিক, টয়লেটের ওপরে পায়খানা-প্রস্রাব করেন। তাদের বলার কিছু নেই। পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা প্রতিদিন সকালে টয়লেটগুলো পরিষ্কার করে চলে যান। কিন্তু কিছু সময় পার হতেই সেগুলো আবার নোংরা হয়ে যায়।
রোগীরা জানান, সার্জারি ওয়ার্ডের টয়লেটগুলোর অবস্থা এতটাই খারাপ যে সুস্থ মানুষ সেখানে গেলে অসুস্থ হয়ে পড়বে। সবাই নাক-মুখ চেপে ধরে টয়লেট ব্যবহার করছে। অনেকেই আশেপাশের বাড়িতে গিয়ে শৌচকার্য সারেন।
নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. মো. গোলাম রসুল রাখি বলেন, আমি ছুটিতে আছি। বিষয়টি নিয়ে কিছুই বলতে পারবো না।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. আবু আল হাজ্জাজ বলেন, শুধু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে দায়ী করলে চলবে না। যারা সেবা নিতে আসেন, তাদেরও একটা দায়িত্ব আছে। কিন্তু তারা সেটা পালন করেন না। এছাড়া পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা কর্মস্থলের বাইরে থাকায় এমন ঘটনা ঘটে।
বাংলাদেশ সময়: ১২২৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৮, ২০২৩
এফআর