ঝিনাইদহ: বিকেল গড়িয়ে আসছে সন্ধ্যা, তাই প্রতিদিনের মতো স্টেশন থেকে বোতলে কেরোসিন তেল নিয়ে সিগন্যালের ল্যাম্প (কেরোসিন বাতি) জ্বালাতে ছুটে চলেছেন পয়েন্ট অপারেটর। এরপর তিনি চিমনি মুছে সেখানে বাতি জ্বালিয়ে দিচ্ছেন।
শুধু কালীগঞ্জ নয়, এমন চিত্র জেলার চারটি রেল স্টেশনেরই।
পুরোনো সিগন্যাল ব্যবস্থা, অপারেটিং ত্রুটি, চালকদের অসচেতনতাসহ নানা সমস্যার কারণে ঝিনাইদহে প্রায়ই যাত্রী ও মালবাহী ট্রেন লাইনচ্যুত হচ্ছে, ঘটছে দুর্ঘটনা। এতে বেশ কয়েক কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
এসব প্রতিটি দুর্ঘটনাই ঘটেছে সন্ধ্যা ও রাতের বিভিন্ন সময়। এমন পরিস্থিতিতে ট্রেন দুর্ঘটনা এড়াতে সিগন্যাল ব্যবস্থা আধুনিকীকরণ জরুরি বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
প্রতিদিনই সন্ধ্যার আগে বাতি জ্বালিয়ে দিলেও সেগুলোর অধিকাংশের আলো বাতাস, কিংবা নানা কারণে নিভে যায়। মাঝে মধ্যে রাতে সেগুলো আবার জ্বালিয়ে দেওয়া হলেও তেমনটি কাজে আসে না, আবার নিভে যায়। ফলে প্রায়ই সিগন্যাল দেখতে না পাওয়ায় পথে দাঁড়িয়ে থাকে ট্রেন, কখনও লাইনচ্যুতি কিংবা অন্য দুর্ঘটনা ঘটে। তবে রেল শ্রমিকদের দাবি, স্টেশনে ঢোকার সময় চালকদের অসচেতনাও দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ।
তবে চালকরা এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, সিগন্যাল ব্যবস্থা সব চেয়ে বেশি খারাপ। রাতে দূর থেকে কিছু দেখা যায় না বলেই সমস্যা হয়।
এমন সমস্যায় ট্রেন দুর্ঘটনা কবলিত হলে বাড়ে যাত্রীদের দুর্ভোগ। তবে ব্রিটিশ আমলের এসব সিগন্যাল অপারেট করতেও পড়তে হয় সমস্যায়। তাই সঠিকভাবে সিগন্যাল পরিচালনা করতে ও দুর্ঘটনা এড়াতে কালার বাতি ও আধুনিক কম্পিউটার অপারেটিং সিস্টেম জরুরি বলে মনে করছেন বিভিন্ন স্টেশনের সিগন্যাল অপারেটররা।
মোবারকগঞ্জ রেলস্টেশনের মাস্টার শাজাহান শেখ বাংলানিউজকে জানান, সিগন্যাল ব্যবস্থা আধুনিক করনের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অনেক বার জানানো হয়েছে। তারা উদ্যোগ নিলেই সমস্যার সমাধান হবে বলে মনে করছি।
কোটচাঁদপুরের সাফদারপুর রেল স্টেশনমাস্টার মোহাম্মদ আলী বাংলানিউজকে জানান, ঝিনাইদহ জেলায় ৪৫ কিলোমিটার রেলপথে সিগন্যাল বাতি রয়েছে ৪২টি। এর মধ্যে ৩০টি কেরোসিন (কুপি/ল্যাম্প) এবং ১২টি সোলার সিস্টেমে চলে।
স্টেশন মাস্টারদের দেওয়া তথ্য মতে, এ রেলপথ দিয়ে প্রতিদিন গড়ে খুলনা, ঢাকা, রাজশাহীসহ বিভিন্ন রুটে আপ অ্যান্ড ডাউন মিলিয়ে ৩০টি ট্রেন যাতায়াত করে থাকে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৩০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০২৩
এসআই