ঢাকা, বুধবার, ৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ১৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

রং-চিনি দিয়ে বানানো হচ্ছে ‘খেঁজুর গুড়’, বাড়ছে স্বাস্থ্য ঝুঁকি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১১৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২৩
রং-চিনি দিয়ে বানানো হচ্ছে ‘খেঁজুর গুড়’, বাড়ছে স্বাস্থ্য ঝুঁকি

মাদারীপুর: মাদারীপুরের ঐতিহ্যবাহী খেজুর গুড়ে মেশানো হচ্ছে রং আর চিনি। জেলাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়ায় সেসব গুড় কিনে প্রতারিত হচ্ছেন ক্রেতারা।

বাড়ছে স্বাস্থ্য ঝুঁকিও।

তবে গুড়ে ভেজাল বন্ধে ও জেলার সুনাম ধরে রাখতে গাছি আর ব্যবসায়ীদের প্রশিক্ষণ-প্রনোদণা দেওয়ার কথা জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলার বিভিন্ন স্থানের গুড় বিক্রেতারা অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা পরিবেশে বাড়িতে বসেই তৈরি করছের ভোজাল খেঁজুর গুড়। জেলার জাফরাবাদ, তাল্লুক, ঘটমাঝি, ঝিকরহাটি, মোস্তফাপুরসহ অন্তত ২৫ থেকে ৩০টি স্থানে নিয়মিত এমন গুড় তৈরি হয়।

সামান্য খেঁজুর রসের সঙ্গে পানি, চিনি আর রঙের মিশ্রণে তৈরি করা হচ্ছে গুড়। যা দেখে বোঝার উপায় নেই কোনটি আসল আর কোনটি নকল। এক কেজি খাঁটি গুড়ের দাম যেখানে ৬০০-৮০০ টাকা, কিন্তু এসব ভেজাল গুড় প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ২০০ টাকায়।  

তবে বিক্রেতাদের দাবি, শুধু রস দিয়ে গুড় তৈরি করলে তার নায্য দাম পাওয়া যায় না। তাই বাড়তি লাভের আশায় গুড়ে ভেজাল দিচ্ছেন তারা। এছাড়া জেলায় পর্যাপ্ত খেঁজুর গাছও নেই। তাই খেজুর রসও কম পাওয়া যাচ্ছে।

ক্রেতারা বলছেন, এক সময় মাদারীপুরের খেঁজুর গুড়ের সুনাম ছিল। কিন্তু এখন চারদিকে ভেজাল গুড়ে সয়লাব। চিনি আর রঙের মিশ্রণে তৈরি গুড় কিনে প্রতিনিয়ত প্রতারিত হচ্ছি আমরা। এর প্রতিকার হওয়া দরকার।

মোস্তফাপুরের গুড় তৈরিকারক ও গাছি কুদ্দুস শিকদার বলেন, খাঁটি গুড় তৈরি করলে ক্রেতারা বেশি দাম দিতে চান না। এতে সেগুলো পড়ে থেকে অনেক লস্ (ক্ষতি) হয়। তাই একটু বাড়তি লাভের আশায় খেঁজুর গুড়ে চিনি যোগ করতে হচ্ছে।

মাদারীপুরের সিভিল সার্জন ড. মুনীর আহম্মেদ খান বলেন, ইটভাটায় খেঁজুর গাছ ব্যবহার করায় গাছের সংখ্যা অনেক কমেছে। এতে রসের সংকট দেখা দিয়েছে। এই সুযোগে অসাধু ব্যবসায়ীরা ভেজাল গুড় করছেন। সেটি খেলে ক্যান্সারসহ ভয়ানক রোগ হতে পারে। তাই সেসব ভেজাল গুড় তৈরি ও বিক্রি বন্ধ করা অতি জরুরি।

মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন বলেন, এমন অসাধু গুড় বিক্রেতাদের আইনের আওতায় আনা হবে। এছাড়া কয়েক লাখ খেঁজুর গাছের চারা রোপণ করা হবে। ভবিষ্যতে রসের চাহিদা মেটাতে এ পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১১১০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২৩
এফআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।