নরসিংদী: নরসিংদীর মনোহরদীতে বিদ্যালয়ে পাঠদানের সময় ৩০ শিক্ষার্থী শ্রেণিকক্ষে অসুস্থ হয়ে পড়েছে।
রোববার (৫ মার্চ) দুপুরে উপজেলার চালাকচর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, সকালে প্রতিদিনের মতো মাঠে শিক্ষার্থীরা প্রাত্যাহিক সমাবেশে অংশ নিয়েছিল। এ সময় ৩ জন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করে শ্রেণিকক্ষে পাঠানো হয়। শ্রেণিকক্ষগুলোতে প্রথম বিষয়ের পাঠদান শেষ হতেই শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হতে থাকে। তাদের কারো মাথা ঝিমঝিম করে, কারো মাথা ঘুরে, কেউ শ্বাসকষ্টসহ নানা উপসর্গ নিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়তে থাকে। তাদের বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়। কিন্তু ধীরে ধীরে ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণির ৩০ জন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জানালে তারা অ্যাম্বুলেন্স পাঠালে পরে শিক্ষার্থীদের হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। সেখানে বেশিরভাগ শিক্ষার্থীই প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হলে অভিভাবকরা তাদের বাড়ি নিয়ে যায়। অসুস্থ শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৫ জনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভর্তি করা হয়েছে।
এ ঘটনার খবর পেয়ে মনোহরদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রেজাউল করিম, উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প. কর্মকর্তা ডা. রাশেদুল হাসান মাহমুদ , উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শহীদুর রহমান বিদ্যালয় পরিদর্শন করেছেন। এ সময় স্কুলটি ৩ দিনের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। পাশাপাশি ঘটনার কারণ উদঘাটনে উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প. কর্মকর্তা, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও স্কুলটির প্রধান শিক্ষককে নিয়ে ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি শিক্ষার্থী মাইশা বলেন, সকালে বাড়ী থেকে নাশতা খেয়ে আসতে পারিনি। সমাবেশ চলার সময়ই খারাপ লাগছিলো তার। পরে দ্বিতীয় ক্লাসে মাথা ঘুরে পড়ে যাই।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মোস্তফা হোসেন বলেন, গত বৃহস্পতিবার ও পাঠদানের সময় একইভাবে ৯ জন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়েছিল। পরে আমি অসুস্থ শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারি তারা সকালে নাশতা না করেই বিদ্যালয়ে এসেছিল। দিনের গরমের তীব্রতা ও না খেয়ে থাকার কারণে তারা অসুস্থ হয়ে যায়। আর কয়েকজনের আগে থেকেই মাথা ব্যথ্যা, শ্বাসকষ্টের সমস্যা রয়েছে। তারা এর চিকিৎসা নিচ্ছে। বেশিরভাগই ছোট বাচ্চা, তারা সকালে বাবা-মায়ের কথা না শোনে না খেয়ে স্কুলে আসে, আর দুর্বল হয়ে অসুস্থ হয়ে যায়। আমরা সবাইকে সকালে নাশতা করে স্কুলে আসতে বলেছি।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প. কর্মকর্তা ডা. রাশেদুল হাসান মাহমুদ বলেন, শিক্ষার্থীদের অধিকাংশই শারীরিকভাবে দুর্বল। বেশিরভাগই বাড়ি থেকে না খেয়ে আসাসহ মানসিক কারণ ও ভয় পাওয়ার কারণে তারা অসুস্থ হয়ে পড়েছে। তাদের চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে সবাই এখন সুস্থ আছে।
মনোহরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম বলেন, খবর পেয়ে আমি বিদ্যালয়ে গিয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ করে শিক্ষার্থীদের ছুটি দেওয়া হয়। আগামী ৩ দিনের জন্য বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়। দুইদিন শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে যাওয়ার কারণ উদঘাটনে ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়েছে। কমিটির রিপোর্ট পাওয়ার পরে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২০৫৮ ঘণ্টা, মার্চ ৫, ২০২৩
জেএইচ