রাজশাহী: রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) অনন্য উদ্যোগে সহিংসতার অন্ধকারময় জীবন ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন জঙ্গিরা। অভিযুক্ত এবং বিভিন্ন সময়ে জামিনপ্রাপ্ত এমনই ১১১ জন এখন হাঁটতে শুরু করেছেন আলোর পথে।
এর মধ্যে অভিযুক্ত ও জামিনপ্রাপ্ত ৩৩ জন আজ বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে রাজশাহীর বেলপুকুর থানায় হাজির হন।
তারা নিয়মিত মনিটরিংয়ের আওতায় বেলপুকুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মনিরুজ্জামানের কাছে হাজিরা দেন। এ সময় গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে তারা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার কথা জানান।
এ বিষয়ে আরএমপির অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) রফিকুল আলম জানান, রাজশাহীর ১২টি থানার মধ্যে যথাক্রমে বোয়ালিয়া, রাজপাড়া, মতিহার, বেলপুকুর, পবা ও চন্দ্রিমা- এই ৬টি থানায় এখন জঙ্গি সংক্রান্ত ২৬টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে ৯টি মামলার বিচার কাজ শেষ হয়েছে, ১৪টি বিচারাধীন ও ৩টি তদন্তাধীন।
তিনি আরও জানান, এসব মামলায় ১১১ জনের মধ্যে জেএমবির ৮৬ জন, হিযবুত তাহরীরের ১৫ জন, শাহাদৎ আল হিকমার একজন, আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের একজন এবং আনসার আল ইসলামের ৮ জন রয়েছেন। তারা প্রত্যেকেই আজ স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার লড়াই করছেন।
এতো সংখ্যক জঙ্গিবাদ মামলার আসামিকে এ ধরনের কর্মসূচির আওতায় আনা আরএমপির একটি নজিরবিহীন উদ্যোগ বলেও উল্লেখ করেন আরএমপির এই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।
জঙ্গিদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসা প্রসঙ্গে আরএমপি কমিশনার মো. আনিসুর রহমান বলেন, এটি আরএমপির প্রতিরোধমূলক কার্যক্রম। থানায় তাদের নিয়মিত হাজিরার ব্যবস্থা করা হয়েছে। জামিনে মুক্ত জঙ্গি মামলার আসামিরা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার অঙ্গীকার করেছেন। আর আমরাও চাই, জঙ্গি মামলার আসামিরা জঙ্গিবাদ হতে মুক্ত হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসুক। প্রাথমিকভাবে রাজশাহীর বেলপুকুর থানাকে এই কার্যক্রমের মডেল হিসেবে নেওয়া হয়েছে। জঙ্গিরা থানায় এসে নিয়মিত হাজিরা দিচ্ছেন। পরে অন্য থানাগুলোতেও এই কার্যক্রম অনুসরণ করা হবে।
আরএমপি সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের বেলপুকুর থানায় মোট ৩৮ জন তালিকাভুক্ত জঙ্গি রয়েছেন। এর মধ্যে ৩৩ জন নিয়মিত থানায় হাজিরা দিচ্ছেন ও একজন কারাগারে রয়েছেন।
থানায় হাজিরা দেওয়া ৩৩ জনের মধ্যে ৩ জন যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি হাইকোর্টের আদেশে জামিনে মুক্ত রয়েছেন। বাকি ৩০ জনের মধ্যে ২৯ জন বিচারাধীন আদালত থেকে জামিনে মুক্ত আছেন এবং একজনকে মামলা তদন্তকালে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
বাকি ৪ জঙ্গির তথ্য সংগ্রহ সংক্রান্ত কার্যক্রম চলমান। আপাতত পরীক্ষামূলক বেলপুকুর থানায় ৩৩ জনের হাজিরার মাধ্যমে এ কার্যক্রম শুরু হলো। এপ্রিলে আরও চার থানায় এ কর্মসূচি শুরু হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২০২৭ ঘণ্টা, মার্চ ১৬, ২০২৩
এসএস/এনএস