ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢাকা) হাসপাতালে অবহেলায় এক শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ করে আত্মীয়-স্বজন ও হাসপাতালের স্টাফদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা ও হট্টগোল হয়েছে। পরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়।
শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) রাতে হাসপাতালের পুরাতন ভবনের ২১০ নম্বর ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে বলে জানান ঢাকা মেডিকেল পুলিশ ইনচার্জ ইন্সপেক্টর মো. ফারুক।
তিনি বলেন, পুরান ঢাকা থেকে একটি শিশুকে অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসে তার স্বজনরা। পরে পুরাতন ভবনের ২১০ নম্বর ওয়ার্ডে কর্তব্যরত চিকিৎসক পরীক্ষার পরে তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে শিশুর স্বজনরা ২১০ নম্বর ওয়ার্ডে ওই শিশুর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে হট্টগোল করেন। একপর্যায়ে মৃত শিশুকে নিয়ে হাসপাতালে জরুরি বিভাগ দিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার সময় দায়িত্বরত আনসার সদস্যরা স্বজনদের কাছে হাসপাতালের ছাড়পত্র দেখতে চান। কিন্তু মৃত শিশুর আত্মীয়-স্বজনরা ছাড়পত্র দেখতে চাওয়াকে কেন্দ্র করে আরও উত্তেজিত হয়ে পড়েন।
একপর্যায়ে স্বজনরা ফোনের মাধ্যমে আরও কিছু লোকজনকে হাসপাতালে উপস্থিত করে জরুরি বিভাগে হট্টগোল শুরু করেন। এরই মধ্যে মৃত শিশুটির আত্মীয়-স্বজনরা বেসরকারি এক ট্রলিম্যানকে ব্যাপক মারধর করেন। পরে শাহবাগ থানা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ এনে পরিস্থিতি আয়ত্তে আনা হয়।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, আনুমানিক রাত সোয়া নয়টার দিকে বংশাল এলাকা থেকে রোগে আক্রান্ত শিশু সাফওয়ানকে (৪) হাসপাতালের জরুরি বিভাগ চিকিৎসকদের পরামর্শে ২১০ নাম্বার ওয়ার্ডে নিয়ে গেলে সেখানে শিশুটি মারা যায়। এ ঘটনার পর রোগীর স্বজনেরা চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ করে উত্তেজিত হয়ে ওয়ার্ডের দরজা-জানালা ভাঙচুর করে ও জোরপূর্বক মরদেহ নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে।
এ সময় আনসার সদস্যরাসহ বেসরকারি কর্মচারী জুয়েল বাধা দিলে তাকে ব্যাপক মারধর করে। বর্তমানে জুয়েল ঢামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ৩ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন আছেন তবে তার অবস্থা গুরুতর।
হাসপাতালের আনসারদের প্লাটুন কমান্ডার (পিসি) মো. সেলিম মিয়া জানান, শিশুটিকে অচেতন অবস্থায় তার স্বজনরা হাসপাতালে নিয়ে এলে নিয়ম অনুযায়ী ২১০ নম্বর ওয়ার্ডে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণার পরপরই তারা উত্তেজিত হয়ে ওয়ার্ডের দরজা ও জানালা ভাঙচুর করেন। আনসারদের ওপর হামলা চালান। এক পর্যায়ে জরুরি বিভাগ দিয়ে লাশটি নিয়ে যাওয়ার সময় দায়িত্বরত আনসাররা ডেড সার্টিফিকেট দেখতে চাইলে, এতে মৃত শিশুর আত্মীয়-স্বজনরা আরও উত্তেজিত হয়ে হট্টগোল শুরু করেন। এক পর্যায় হাসপাতালের বেসরকারি কর্মচারীকে মারধর করেন।
শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খালিদ মনসুর জানান, ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে এক শিশুর মৃত্যুর ঘটনার কেন্দ্র করে আত্মীয়-স্বজন ও হাসপাতালের লোকজনদের সঙ্গে হট্টগোলের ঘটনা ঘটে। পুলিশ হাসপাতালে উপস্থিত হয়ে বিষয়টি মীমাংসা করেছে।
এজেডএস/এমজেএফ