ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

জাবির হল ছাড়ার নির্দেশ, থোড়াই কেয়ার শিক্ষার্থীদের

জাবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২০১ ঘণ্টা, মার্চ ২৬, ২০২৩
জাবির হল ছাড়ার নির্দেশ, থোড়াই কেয়ার শিক্ষার্থীদের

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি): স্নাতকোত্তর পরীক্ষা শেষ হওয়া শিক্ষার্থীদের সাত দিনের মধ্যে হল ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রশাসন। কিন্তু শিক্ষার্থীরা তা থোড়াই কেয়ার করেন।

কোনো নির্দেশ না মেনে তারা হলে থাকছেন বহাল তবিয়তে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন নবীন শিক্ষার্থীরা। নির্দেশ দেওয়ার পর বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনেরও দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যাচ্ছে না।

জানা গেছে, গত ৭ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (চুক্তিভিত্তিক) রহিমা কানিজ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে স্নাতকোত্তর পরীক্ষা শেষ হওয়া শিক্ষার্থীদের সাত দিনের মধ্যে হল ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। তা না হলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলা হয় বিজ্ঞপ্তিতে। কিন্তু ১৬ দিন পার হলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি চোখে পড়েনি।

সাধারণ শিক্ষার্থীদের শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যথাযথ পদক্ষেপ নিচ্ছে না। ফলে অছাত্ররা হল ছাড়ছে না। এতে তৈরি হচ্ছে আসন সংকট। প্রকৃত আসনের দাবিদার শিক্ষার্থীরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

নাম প্রকাশ না করা শর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের মওলানা ভাসানী হলের এক আবাসিক শিক্ষার্থী বাংলানিউজকে বলেন, প্রশাসন থেকে অছাত্রদের হল ছাড়ার নির্দেশ দিলেও তারা তা মানছেন না। এ ব্যাপারে প্রশাসন পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ। ফলে কৃত্রিম আবাসন সংকট সৃষ্টি হয়েছে। নোটিশ দেওয়ার পরে আজ পর্যন্ত হল প্রশাসন থেকে কোনো ধরনের তদারকি করা হয়নি। যে কারণে তারা ব্যর্থ। আর সে কারণেই অবৈধ শিক্ষার্থীরা হল ছাড়ছে না।

এর আগে গত ৫ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোয় গণরুম সংস্কৃতি উচ্ছেদ করে বৈধ শিক্ষার্থীদের আবাসনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করাসহ তিন দফা দাবিতে প্রশাসনিক ভবন অবরোধ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের শর্তসাপেক্ষে অবরোধ তুলে নেন তারা। শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে গত ৭ মার্চ সাত দিনের মধ্যে অছাত্রদের হল ত্যাগের নির্দেশ দিয়ে অফিস আদেশ জারি করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক কনৌজ ক্রান্তি রায় বাংলানিউজকে বলেন, প্রশাসন প্রতিবারই আশ্বাস দেয় অছাত্রদের হল থেকে বের করার। কিন্তু এ ব্যাপারে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। এবারও তাই ঘটছে। কিন্তু প্রশাসনের কোনো কঠোর পদক্ষেপ নেই। প্রশাসন যখন কোনো বিশেষ গোষ্ঠীর লেজুড়বৃত্তি করে তখন এমনটা হওয়ারই কথা।

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে নির্দেশনা দেওয়া হলেও অছাত্রদের বের করে দেওয়ার ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কোনো উদ্যোগ নেই কেন- জানতে চাইলে প্রাধ্যক্ষ কমিটির সভাপতি ও বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক নাজমুল হাসান তালুকদার বাংলানিউজকে বলেন, হল প্রশাসন কঠোর অবস্থানে আছে। হল প্রশাসন সবার সাথে কথা বলেছে। যারা অছাত্র তাদের সবাইকে হল ছাড়তে বলা হয়েছে। হল ছাড়ার ব্যাপারে আবারও নোটিশ দেওয়া হবে। যারা এখনও হলে অবস্থান করছেন, তাদের বলা হয়েছে চলমান ছুটির পরে হল ছেড়ে দিতে। এ ব্যাপারে প্রতিটি হল প্রশাসনকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যদি কেউ হল ছাড়তে না চায় তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক রাশেদা আখতার বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের এ বিষয়ে সভা ছিল। এর আগে তিনটি কমিটিও করা হয়েছিল। সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল কমিটির সদস্যরা অছাত্রদের বের করে দেওয়ার ব্যাপারে কাজ করবে। আগামী সোমবার ফের নোটিশ দেওয়া হবে। আমরা এ ব্যাপারে ছাত্র নেতাদেরও সহযোগিতা কামনা করছি।

বাংলাদেশ সময়: ১২০০ ঘণ্টা, মার্চ ২৬, ২০২৩
এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।