ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

নিয়মিত জরিমানায়ও অস্থিরতা কমছে না ভোলার বাজারে

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০১ ঘণ্টা, মার্চ ২৭, ২০২৩
নিয়মিত জরিমানায়ও অস্থিরতা কমছে না ভোলার বাজারে

ভোলা: ভোলার বাজারে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমছেই না। বিশেষ করে ছোলা, চিনি, শসা, বেগুন ও মাছ-মাংসের বাজারে যেন আগুন লেগেছে।

রমজান মাসে বাজার দাম স্বাভাবিক থাকার কথা থাকলেও বাস্তবে সেটি আর হচ্ছে না।

বাধ্য হয়েই ক্রেতাদের অতিরিক্ত দামে পণ্য কিনতে হচ্ছে। এতে নিম্ন ও মধ্য আয়ের পরিবারগুলো চরম সংকটে পড়েছে। আয়ের সঙ্গে ব্যায়ের হিসাব মেলাতে পারছেন না তারা।

এদিকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাজার দাম নিয়ন্ত্রণে শক্ত অভিযানের কথা জানানো হয়েছে। কিন্তু ক্রেতাদের মধ্যে দাম নিয়ে ক্ষোভ আর অসন্তোষ রয়েই গেছে।

সরে জমিন ঘুরে দেখা গোছে, ভোলার বাজারে সবজিসহ বিভিন্ন পণ্যের ভালো সরবরাহ আছে। এমনটি দেখে অনেকেরই মনে হতে পারে দামটাও তাহেলে নাগালের মধ্যেই থাকবে। কিন্তু বাস্তবে ঠিক এর উল্টো চিত্রটাই ঘটছে।

বেড়েছে শশা, বেগুন, ছোলা ও চিনির দাম। এটি একদিনের ব্যবধানেই বেড়েছে ৫ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত। শশা বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ৫০ থেকে ৬০ টাকা যেটি আগে ছিল ২০ টাকা।

একই অবস্থা মুরগি, মাছ ও মাংসের বাজারে। দেশি মুরগি ৬৫০ টাকা, ব্রয়লার ২৩০ টাকা ও সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ২৮০ টাকা করে। কমেনি গরু ও খাসির মাংসের দামও। গরুর মাংসের কেজি ৭৫০ টাকা আর খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার টাকা কেজি করে।

এছাড়া চিনির দামও বেড়ে হয়েছে ১১৫ টাকা কেজি। অনান্য পণ্যের মধ্যে দাম বেড়েছে সরবতে ব্যবহৃত ইসুফ গুলের ভূষির। এটি ১ হাজার ২০০ টাকা থেকে বেড়ে ১ হাজার ৩০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। মসলার মধ্যে এলাচি ১ হাজার ৩০০ টাকা, দারুচিনি ৩৪০ টাকা, আদা ৯০ টাকা, জিরা বিক্রি হচ্ছে ৬৮০ টাকা করে।

বেড়েছে চিড়া-মুড়ির দামও। যেই চিড়া আগে ৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হতো সেটি হয়েছে ৫০ টাকা।

তবে আগের মতোই আছে আলু, পেয়াজ ও রসুনের দাম। বাজারে মৌসুমি তরমুজ আসলেও তার দাম চড়া। প্রতি পিস তরমুজ প্রকার ভেদে বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত।

এমন চড়া দামের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের পরিবারগুলো। চরম সংকটের সময় পার করছেন তারা।

ক্রেতা রহিমা আক্তার বলেন, রমজান মাসে পণ্যের দাম কম থাকার কথা থাকলেও কমছে না। এ জন্য চাহিদার অর্ধেক পণ্য কিনে কম খেতে হচ্ছে।

আরেক ক্রেতা নুরু উদ্দিন ও জসিম বলেন, বাজার মনিটরিং করা হলেও কমছে না পণ্যের দাম। বিক্রেতারা নিজেদের ইচ্ছে মতো পণ্যের দাম হাকাচ্ছেন।

এদিকে পণ্যের দাম বৃদ্ধির কোনো সুনিদিষ্ট কারণ জানা নেই বিক্রেতাদের। তারা বলছেন ভিন্ন কথা।

ভোলা কাঁচা বাজার বাযবসায়ী সমিতির সভপতি রফিকুল ইসলাম বলেন, পাইকারি বাজারে পণ্যের দাম বেশি থাকায় আমাদেরও বেশিতে বিক্রি করতে হচ্ছে। তবে এখন বাজারে ক্রেতা কম। তাই বিক্রি কম হচ্ছে। পণ্যের দামও কমতে শুরু করেছে।

এদিকে রমজান উপলক্ষ্যে নিত্য পন্যের দাম নিয়ন্ত্রণে নেমেছে জেলা প্রশাসন। অতিরিক্ত দামে পণ্য বিক্রির অভিযোগে নিয়মিত জরিমানা করা হলেও বাজার অস্থিরতা কমছে না।

জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আলী সুজা বাংলানিউজকে বলেন, রমজানে আমাদের বাজার মনিটরিং চলছে। নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। কেউ বেশি দামে পণ্য বিক্রি করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এরই মধ্যে তিনজনকে ১০ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। এমন অভিযান নিয়মিতই পরিচালনা করা হবে।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মাহমুদুল হাসান বলেন, অভিযান পরিচালনা করে আমরা বাজার মনিটরিংয়ের চেষ্টা করছি।

এদিকে ক্রেতারা নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে আরও বেশি ভ্রাম্যমাণ অভিযান পরিচালনা করার দাবি জানাচ্ছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৯ ঘণ্টা, মার্চ ২৭, ২০২৩
এফআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।