ঢাকা, শুক্রবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে স্বস্তিদায়ক হবে ঈদযাত্রা 

সুজন বর্মণ, ডিস্ট্রিক করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩০৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ৯, ২০২৩
ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে স্বস্তিদায়ক হবে ঈদযাত্রা 

নরসিংদী: ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে এবার নরসিংদী জেলার প্রায় ৫৩ কিলোমিটার অংশে খানাখন্দ নেই। একইসঙ্গে বাসস্ট্যান্ডগুলোতে ট্রাফিক তৎপরতা বৃদ্ধির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

ফলে আসন্ন ঈদযাত্রা স্বস্তিদায়ক হবে বলে মনে করছেন সড়ক ও জনপথের সংশ্লিষ্টরা।

ঈদকে ঘিরে ঢাকা-সিলেটসহ কিশোরগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নেত্রকোনায় চলাচলকারী যানবাহন নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারবে বলে আশাবাদী সংশ্লিষ্টরা।

সড়ক ও জনপথ বিভাগ এবং হাইওয়ে পুলিশ জানায়, রাজধানী ঢাকা ও পাশ্ববর্তী শিল্পোন্নত জেলাগুলোতে বিপুল সংখ্যক সিলেট অঞ্চলের লোকের কর্মসংস্থান। ঈদকে সামনে রেখে ঘরমুখী সেই মানুষের সিংহভাগ ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে যাতায়াত করে। সেই সঙ্গে ঈদকে ঘিরে সিলেটসহ কিশোরগঞ্জ, ব্রা‏হ্মণবাড়িয়া, নেত্রকোনায় চলাচলকারী যাত্রীবাহী পরিবহনের চাপ বাড়ে এই সড়কে। এবার মহাসড়কটিতে তেমন খানাখন্দ ও গর্ত নেই। যেখানেই রাস্তায় কোনো সমস্যা দেখা দিচ্ছে সড়ক ও জনপথ বিভাগের ভ্রাম্যমাণ দল দ্রুত মেরামত করে ফেলছে। ফলে মহাসড়ক দিয়ে চলাচলকারী চালক ও যাত্রীদের কোনো ভোগান্তিতে পড়তে হবে না।

ঢাকা থেকে সুনামগঞ্জ যাচ্ছিলেন কাদির হোসেন। তিনি বলেন, ঢাকায় প্রবেশ ও বের হওয়ার সময় কিছুটা যানজটে পড়ার সম্ভাবনা থাকে। তবে নরসিংদীর অংশে রাস্তা ভালো থাকায় খুব আরামেই দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছা যাবে।

আরেক যাত্রী নাসরিন বেগম বলেন, বাসস্ট্যান্ডগুলোতে লোকাল বাসগুলোর কারণে অল্প যানজটে পড়তে হয়। বাকি রাস্তায় চালকরা স্বাভাবিক গতিতে গাড়ি চালিয়ে যেতে পারছে। তাই এবার ঈদে রাস্তায় আমাদের কোনো ভোগান্তিতে পড়তে হবে না।

তবে মহাসড়কটি চার লেন না হওয়ায় সরু সড়কের পাশে সবজির হাট বসার কারণে ও বাসস্ট্যান্ডগুলোতে যত্রতত্র যাত্রী উঠানামার কারণে সাময়িক যানজট সৃষ্টির আশঙ্কা চালকদের। একই সঙ্গে ঢাকার প্রবেশ মুখে যানজট ভোগাতে পারে ঈদযাত্রীদের। সুনামগঞ্জগামী শ্যামলী পরিবহনের চালক রিয়াজ হোসেন বলেন, মহাসড়কে কোনো খানাখন্দ নেই। আমরা স্বাভাবিক ভাবে গাড়ি চালাতে পারি। কিন্তু বাসস্ট্যান্ডগুলোতে লোকাল বাসগুলো নিয়ম নীতি না মেনে যাত্রী উঠানোর কারণে জ্যাম লেগে যায়। এই বিষয়গুলো ট্রাফিক পুলিশ কঠোরভাবে আইন প্রয়োগ করলে এবারের ঈদযাত্রা স্বস্তিই হবে।

আরেক চালক নাসির হোসেন বলেন, মহাসড়কে সবজির হাট, অটোরিকশার কারণে আমাদের গাড়ি চালাতে বেগ পেতে হয়। এছাড়া রাস্তার অবস্থা খুবই ভালো। আমাদের ঈদে গাড়ি চালানো এবার আরামদায়ক হবে।

এদিকে মহাসড়কে যানযটবিহীন যাত্রী ও চালকদের স্বস্তির ঈদ যাত্রা দিতে কাজ করছে ট্রাফিক পুলিশ ও হাইওয়ে পুলিশ। ইতোমধ্যে তারা মাধবদী বাসস্ট্যান্ড, শেখেরচর-বাবুরহাট বাসস্ট্যান্ড, পাঁচদোনা বাসস্ট্যান্ড, ভেলানগর বাসস্ট্যান্ড ও ইটাখলা বাসস্ট্যান্ডকে যানযট প্রবণ এলাকা বলে চিহ্নিত করেছে। এসব এলাকায় যানজট যেন না হয় সেজন্য ট্রাফিক পুলিশ ও হাইওয়ে পুলিশ কাজ করছে।

নরসিংদী ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক (প্রশাসন) মো. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ঈদকে সামনে রেখে মহাসড়কের যানযট প্রবণ এলাকাগুলোকে চিহ্নিত করে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের সঙ্গে সভা করে তাদের ট্রাফিক আইন মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছি। তারা যেন সড়কে ফিটনেসবিহীন গাড়ি না চালায়, সড়কে যেখানে সেখানে যাত্রী না তোলার জন্য বলা হয়েছে। মহাসড়কে কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে বা যানযট লাগলে তা দূরীকরণে ট্রাফিক পুলিশের কুইক রেসপন্ড টিম কাজ করবে। পাশাপাশি পরিবহন মালিকদের সঙ্গে নিয়ে ঈদযাত্রায় ট্রাফিক পুলিশ কাজ করছে। আর আঞ্চলিক সড়ক ও শহরের ভেতরেও যানজট নিরসনে ট্রাফিক পুলিশ কাজ করছে। আশা করছি এবারের সবার ঈদযাত্রা আনন্দদায়ক হবে।

ইটাখোলা হাইওয়ে পুলিশের পরিদর্শক নূর হায়দার তালুকদার বলেন, ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক দিয়ে ৬টি জেলার যাত্রীরা চলাচল করে। আমরা এবারের ঈদে ট্রাফিক পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করছি। আসন্ন ঈদকে সামনে রেখে আমাদের নিয়মিত টহল বৃদ্ধি করা হয়েছে। পাশাপাশি দুর্ঘটনারোধে গতি নিয়ন্ত্রণে স্পিডগান ব্যবহার করা হচ্ছে। কেউ গতি সীমা না মানলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। আর মহাসড়কে কোনো পরিবহনে চাঁদাবাজির অভিযোগ পেলে আমরা সঙ্গেসঙ্গে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

সড়ক ও জনপথ বিভাগ জানিয়েছে, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের নরসিংদী অংশে কোনো খানাখন্দ না থাকায় যান চলাচলে কোনো সমস্যা হচ্ছে না। এরপরও যেসব স্থানে নতুন করে খানাখন্দ সৃষ্টি হচ্ছে সেসব স্থানে ভ্রাম্যমাণ দল কাজ করছে।

নরসিংদী সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হামিদুল ইসলাম বলেন, ঈদে এবার স্বাচ্ছন্দ্যে ঘরমুখী মানুষ চলাচল করতে পারবে। বর্ষায় ও ঈদের গাড়ির চাপের কারণে মহাসড়কের কোনো অংশে মেরামতের প্রয়োজন হলে আমাদের ভ্রাম্যমাণ দল সেখানে গিয়ে মেরামত কাজ করবে। আমরা এবারের ঈদে সবার যাত্রা যেন আনন্দময় হয় সেজন্য পুলিশ প্রশাসন, ট্রাফিক বিভাগ ও হাইওয়ে পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করছি। অতীতের যেকোন সময়ের থেকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে এবারের ঈদ যাত্রা হবে স্বস্তিদায়ক।

বাংলাদেশ সময়: ১২৫০ ঘণ্টা,  এপ্রিল ০৯,২০২৩
এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।