ঢাকা, রবিবার, ২৯ বৈশাখ ১৪৩১, ১২ মে ২০২৪, ০৩ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

উন্নয়নে জাপানের টেকসই সহযোগিতার প্রশংসা শেখ হাসিনার

মহিউদ্দিন মাহমুদ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৪৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৬, ২০২৩
উন্নয়নে জাপানের টেকসই সহযোগিতার প্রশংসা শেখ হাসিনার

টোকিও (জাপান) থেকে: বহু বছর ধরে বাংলাদেশের উন্নয়নে উদার ও টেকসই সহযোগিতার প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জাপান বাংলাদেশের বৃহত্তম উন্নয়ন অংশীদার।

বুধবার (২৬ এপ্রিল) টোকিওতে প্রধানমন্ত্রীর সফরকালীন আবাসস্থল আকাসাকা প্যালেসে (রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন) জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়োশিমাসা হায়াশিকে সৌজন্য সাক্ষাৎ প্রদানকালে তিনি এ কথা বলেন।

পরে প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব কেএম শাখাওয়াত মুন সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বহু বছর ধরে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে জাপানের উদার এবং টেকসই সহযোগিতার জন্য দেশটিকে ধন্যবাদ জানাই।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের নেওয়া বড় বড় উন্নয়ন উদ্যোগে জাপানের অবদান সুস্পষ্ট।

শেখ হাসিনা বলেন, ভিশন-২০৪১ এর আলোকে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে ‘স্মার্ট বাংলাদেশে’ রূপান্তরে জাপানের অব্যাহত সমর্থন ও সহযোগিতার ওপর নির্ভর করছে বাংলাদেশ।

এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট পদের জন্য জাপানের সমর্থন চান প্রধানমন্ত্রী। একই সঙ্গে আগামী ১৭-১৮ জুলাই লন্ডনে অনুষ্ঠিতব্য আইএমও-এর কাউন্সিল সদস্য দেশ হিসেবে সংস্থাটির মহাসচিব পদে বাংলাদেশের প্রার্থিতার বিষয়ে জাপানের সমর্থন চান তিনি।

জাপানের উন্নয়ন মডেলের অভিজ্ঞতা থেকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশকে গড়ে তোলার কথা স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু জাপানের উন্নয়ন মডেলের একজন প্রবল অনুরাগী ছিলেন এবং জাপানের অভিজ্ঞতা দিয়ে নিজের যুদ্ধ বিধ্বস্ত বাংলাদেশ গড়তে অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়োশিমাসা হায়াশি দুই দেশের বিদ্যমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কথা উল্লেখ করেন।

তারা বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশ এবং জাপান খুবই বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক উপভোগ করছে, দিনে দিনে এ সম্পর্ক আরও শক্তিশালী হচ্ছে।

শেখ হাসিনা বলেন, দুই দেশের সম্পর্ক বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য জাপানি জনগণের অটল সমর্থন থেকে উদ্ভুত।

স্বাধীনতার পর পরই ১৯৭২ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশকে জাপানের স্বীকৃতির কথা উল্লেখ করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত বছর (২০২২) আমরা দুই দেশের কুটনৈতিক সম্পর্কের ৫০তম বার্ষিকী উদযাপন করেছি।

জাপান সরকার ও জনগণকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, এই উদযাপন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করার পাশাপাশি দুই দেশের জনগণের মধ্যেকার বন্ধনকে মজবুত করবে।

জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়োশিমাসা হায়াশি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে কৃষি, শিক্ষা, তথ্য প্রযুক্তি এবং স্বাস্থ্য খাতে বাংলাদেশের বর্তমান উন্নতির প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, আপনি আপনার দেশকে এগিয়ে নিচ্ছেন।

মন্ত্রী বলেন, জাপান সব সময় বাংলাদেশের উন্নয়নে পাশে ছিল এবং ভবিষ্যতেও পাশে থাকবে।

এ সৌজন্য সাক্ষাতের সময় অন্যান্যের মধ্যে ‍উপস্থিত ছিলেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন, কৃষি মন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।

জাপান সফরের দ্বিতীয় দিন ব্যস্ত সময় কাটিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সকাল থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার সফরকালীন আবাসস্থল আকাসাকা প্যালেসে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন জাপান-বাংলাদেশ কমিটি ফর কর্মাসিয়াল অ্যান্ড ইকোনোমিক কো-অপারেশন (জেবিসিসিইসি) চেয়ারম্যান ফুমাইয়া কোকুবু; জাইকার প্রেসিডেন্ট তানাকা আকিহিকো; জেট্রো চেয়ারম্যান অ্যান্ড সিইও ইশিগুরো নোরিহিকো; জাপান-বাংলাদেশ পার্লামেন্টরি ফ্রেন্ডশিপ লিগ (জেবিপিএফএল) এর প্রেসিডেন্ট তারো আসো।

এর আগে জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার আমন্ত্রণে মঙ্গলবার (২৫ এপ্রিল) দ্বিপাক্ষিক সফরে টোকিও আসেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এ যাত্রায় তিন দেশ সফর করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জাপান সফর শেষে শুক্রবার (২৮ এপ্রিল) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টোকিও থেকে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন যাবেন। যুক্তরাষ্ট্র সফর শেষে বৃহস্পতিবার (০৪ মে) যুক্তরাজ্যের লন্ডন যাবেন প্রধানমন্ত্রী।

তিন দেশ সফর শেষে ৯ মে সকালে দেশে ফিরবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বাংলাদেশ সময়: ২১৪২ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৬, ২০২৩
এমইউএম/এসএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।