ঢাকা, শুক্রবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ভ্যাপসা গরমে প্রাণ জুড়াচ্ছে নির্ভেজাল তালের শাঁস

এইচ এম নাঈম, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৩৩ ঘণ্টা, মে ৭, ২০২৩
ভ্যাপসা গরমে প্রাণ জুড়াচ্ছে নির্ভেজাল তালের শাঁস

ঝালকাঠি: বৈশাখের এই কাঠফাটা রোদ ও ভ্যাপসা গরমে জনজীবন যখন অতিষ্ঠ, সবাই যখন একটু শীতল ছায়া আর তৃষ্ণা নিবারণের জন্য পানীয় খুঁজছেন, তখন সেই চাহিদা মেটাচ্ছে নির্ভেজাল, রাসায়নিক সার ও কীটনাশকমুক্ত তালের শাঁস।  

একসময় প্রচণ্ড গরমে জনসাধারণের তৃষ্ণা নিবারণের অন্যতম পানীয় ছিল ডাবের পানি।

কিন্তু এ বছর ডাবের দাম অত্যধিক (জেলায় ৬০/৭০ টাকা) হওয়ায় অনেকের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে।  

এখন শহর থেকে শুরু করে গ্রামেও বেশ চড়া দামে বিক্রি করা হচ্ছে ডাব। যে কারণে সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে গেছে অতিপ্রিয় এই পানীয় ফল। ঠিক সেই জায়গাটা দখল করে নিয়েছে তালের শাঁস।

দামে সস্তা ও নির্ভেজাল হওয়ায় সবার কাছে প্রিয় হয়ে উঠেছে তালের শাঁস। পাশাপাশি অন্যসব পানীয়ের বিকল্প হিসেবে মানুষ গ্রহণ করছে এই ফলকে।  

জেলা শহরের কালিবাড়ি রোড ও চাঁদকাঠিসহ বিভিন্ন জায়গার বিক্রেতারা বলেন, মূলত সারা বছরই ডাব বিক্রি করি। কিন্তু এ বছর ডাবের দাম বেশি হওয়ায় বিক্রি কমে গেছে। এখন তালের শাঁস বিক্রি করি। দামে কম হওয়ায় প্রতিদিন বেশ ভালোই বিক্রি হয়। প্রতিদিন পাঁচ শতাধিক তালের শাঁস বিক্রি করেন বলে জানিয়েছেন তারা।  

সাইজ অনুযায়ী ১০ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ২০ টাকার মধ্যেই পাওয়া যাচ্ছে একটি তাল। এক একটি তালের ফলে ২/৩টি করে শাঁস পাওয়া যায়। শহর ঘুরে দেখা যায়, ডাব বিক্রির প্রায় সব দোকানেই বিক্রি হচ্ছে তালের শাঁস।

এছাড়া ভ্যানগাড়িতে করেও শহরে ঘুরে ঘুরে অনেকে বিক্রি করছেন এই তালের শাঁস। এমনই একজন বিক্রেতা মো. শাহিন হাওলাদার। তিনি আগে স্থানীয় ইটভাটায় কাজ করতেন। এখন ভ্যানগাড়িতে করে তালের শাঁস বিক্রি করছেন।  
শাহিন জানান, তালগাছের মালিকের কাছ থেকে প্রতি পিস তাল ৫ টাকা করে ক্রয় করেন। তবে গাছে ওঠানোর জন্য তাদের আলাদা লোক ভাড়া করতে হয়, তাকে গাছ প্রতি দিতে হয় একশ টাকা। সবমিলিয়ে তাদের প্রতি পিস তালে গড়ে ৭ টাকার মতো খরচ পড়ে। তবে ক্রয়ের সময় তাদের ছোট-বড় একই দাম দিতে হয়। কিন্তু তারা নিজেদের খরচ অনুযায়ী লাভের হিসেব রেখে ছোট-বড় ভেদে দাম কম-বেশি করে বিক্রি করে থাকেন।

আব্দুর রহমান হাওলাদার নামের এক ক্রেতা বলেন, অন্যান্য জিনিসের যে দাম, তার থেকে এগুলো অনেক ভালো, দামেও সস্তা, এছাড়া বাচ্চারও পছন্দ। এটাতে নেই কোনো ভেজাল, ফরমালিন, রাসায়নিক সার ও কীটনাশক। একদম প্রাকৃতিক একটি খাবার পানীয়, তাই অনেকগুলো কিনে বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছি।

ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) মেহেদী হাসান সানি বলেন, তালের শাঁস স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। এর কোনো খারাপ দিক নেই। এতে রয়েছে প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও মিনারেল। গরমে পানিশূন্যতা পূরণে খুবই কার্যকরী। তবে যে ছুরি বা দা দিয়ে এটা কাটা হয় বা যেখানে রাখা হয়, তা অবশ্যই পরিস্কার-পরিছন্ন হতে হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫০৯ ঘণ্টা, মে ৭, ২০২৩
এনএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।