বরিশাল: বরিশালের কীর্তনখোলা নদীতে তেলবাহী ট্যাংকারের ইঞ্জিন রুমে বিস্ফোরণে দুইজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন আরও তিনজন।
বৃহস্পতিবার (১১ মে) বিকেল পৌনে ৫টার দিকে কীর্তনখোলা নদীতে নোঙর করে রাখা এমটি ইবাদি-১ তেলবাহী ট্যাংকারে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
তেলবাহী ট্যাংকারের ডেক টেন্ডর সুমন সেন বলেন, ট্যাংকার চট্টগ্রাম থেকে সাড়ে তিন লাখ লিটার পেট্রল ও ১০ লাখ লিটার ডিজেল নিয়ে দুইদিন আগে বরিশালে আসে। বরিশালের মেঘনা তেলের ডিপোতে এ তেল আজ খালাস করার কথা ছিল, সে অনুযায়ী ট্যাংকারে স্টাফরা ইঞ্জিন রুমে যান। এর কিছুক্ষণ পর বিকট শব্দে সেখানে বিস্ফোরণ ঘটে।
এ তেলবাহী ট্যাংকারে ১৬ জন স্টাফ ছিলেন জানিয়ে সুমন বলেন, গুরুতর আহত অবস্থায় ট্যাংকারের চিফ ড্রাইভার কুতুবউদ্দিন, সেকেন্ড ড্রাইভার রুবেল, ও কামালকে উদ্ধার করে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এছাড়া ঘটনাস্থলেই চট্টগ্রামের বাসিন্দা স্বাধীন (২২) ও বাবুল কান্তি দাস (৬৪) নামে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহত স্বাধীন ট্যাংকারের চিফ ড্রাইভার কুতুবউদ্দিনের ছেলে। তিনি এখানে বেড়াতে এসেছিলেন।
এছাড়া ট্যাংকারের গ্রিজার কাশেমের সন্ধান এখনও মেলেনি।
বরিশাল ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক মিজানুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, খবর পেয়ে তিন মিনিটের মাথায় তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। এরপর দ্রুত তেলবাহী ট্যাংকারে উদ্ধার কাজ শুরু হয়। ঘটনাস্থল থেকে দুজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া আহত তিনজনকে উদ্ধার করে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। নিখোঁজ ব্যক্তিকে উদ্ধারের চেষ্টা চালছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে ট্যাংকারের ইঞ্জিন রুমে কমপ্রেশার মেশিন বিস্ফোরণের কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। তবে বিষয়টি তদন্ত না করে নিশ্চিত কিছু বলা যাচ্ছে না।
এদিকে ইঞ্জিন রুম উত্তপ্ত অবস্থায় থাকায় নিখোঁজ ব্যক্তিকে উদ্ধারে ওই রুমে উদ্ধার অভিযান চালানো যাচ্ছে না জানিয়ে উপ-পরিচালক মিজানুর বলেন, ইঞ্জিন রুম কিছুটা ঠাণ্ডা হলে নিখোঁজ ব্যক্তিকে উদ্ধার করা সম্ভব হবে। ধারণা করা হচ্ছে, এয়ার কম্প্রেসার বিস্ফোরণে ট্যাংকারে আগুনের সূত্রপাত হয়।
তেলবাহী ট্যাংকারের বার্বুচি দুলাল বলেন, আমরা কাজ করছিলাম। এ সময় বিকট শব্দে ট্যাংকারের ইঞ্জিন রুমে বিস্ফোরণ হয়। পরে পুরো রুমে আগুন লেগে যায়।
তিনি বলেন, জাহাজের মোট ১৬ জন স্টাফ। এর মধ্যে দু’জন ছুটিতে বাড়ি গেছেন। তিনজন হাসপাতালে ভর্তি, দু’জন বিস্ফোরণে নিহত হয়েছেন। আটজন অক্ষত। বিকেলে একজন ইঞ্জিন স্টার্ট দিতে গিয়েছিলেন, তখনই বিস্ফোরণ ঘটে।
এদিকে বরিশালের জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
তিনি জানান, নিহত দু’জনের পরিবারের জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২০ হাজার টাকা দেওয়া হবে। এছাড়া আহতদের চিকিৎসার সার্বিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর এ ঘটনায় জেলা প্রশাসন ও ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে আলাদা দুটি তদন্ত কমিটি করা হবে।
এদিকে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, আহতদের উন্নত চিকিৎসার জন্য সন্ধ্যায় ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২৮ ঘণ্টা, মে ১১, ২০২৩/আপডেট ২০১৫ ঘণ্টা।
এমএস/আরআইএস