ঢাকা, শনিবার, ৪ মাঘ ১৪৩১, ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১৭ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

বাগেরহাটে জমে উঠেছে পশুর হাট, দাম নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫৮ ঘণ্টা, জুন ২৬, ২০২৩
বাগেরহাটে জমে উঠেছে পশুর হাট, দাম নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া ছবি: বাংলানিউজ

বাগেরহাট: মুসলমানদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা। এদিন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা প্রিয় বস্তু কোরবানির মাধ্যমে মহান আল্লাহ পাকের সান্নিধ্য অর্জনের চেষ্টা করেন।

এ কারণে ঈদের কয়েকদিন আগে থেকেই তোড়জোড় শুরু হয় কোরবানির পশু কেনাবেচার। এ বছর বাগেরহাটে পশু বেচাকেনার ছোট-বড় ২২টি হাট বসেছে। এর মধ্যে অন্যতম বড় হাট ফকিরহাটের বেতাগা পশুর হাট।

সোমবার (২৬ জুন) সকাল থেকেই হাজার গরুর সমারোহ আর ক্রেতা-বিক্রেতাদের হাঁক-ডাকে জমে উঠেছে হাটটি। ক্রেতারা পছন্দমতো গরু ক্রয় করে ফিরছেন বাড়িতে। ব্যবসায়ী ও খামারিরা বিক্রির টাকা নিয়ে ফিরছেন, কেউবা এখনও বিক্রির অপেক্ষা করছেন।

মোল্লাহাট থেকে গরু নিয়ে আসা ফারুক হোসেন বলেন, সকাল ৮টায় হাটে এসেছি। হাটে লোকও যেমন অনেক, আজকে গরু-ছাগলও এসেছে বেশি। ১২টি নিয়ে আসছিলাম, ৮টি বিক্রি করেছি। সন্ধ্যার মধ্যে বাকি চারটিও বিক্রি করতে পারব বলে মনে হয়।

খুলনার ডুমুরিয়া থেকে গরু নিয়ে এসেছেন তারক বৈরাগি। তিনি বলেন, অন্য ধর্মের হলেও প্রায় ১৫ বছর ধরে কোরবানি উপলক্ষে গরু লালন পালন করি। এবার চারটি গরু ছিল, একটি বাড়ি থেকে বিক্রি করেছি। এই হাটে তিনটি বিক্রি করলাম। দাম ভালো পেয়েছি, তবে খাবারের দাম অতিরিক্ত হওয়ায় এবার লাভ কিছুটা কম হয়েছে।

খুলনা জেলার বটিয়াঘাটা এলাকা থেকে ২০টি গরু নিয়ে এসেছে ছিলেন ব্যবসায়ী সেলিম মোল্লা। দুপুর পর্যন্ত ১৫টি গরু বিক্রি করেছেন। অপেক্ষায় আছেন অবশিষ্ট পাঁচটি বিক্রি করে বাড়ি ফেরার।

গরু কিনতে আসা কচুয়া উপজেলার ভান্ডারকোলা গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা মোহাম্মাদ আফজাল শেখ বলেন, এবার কোরবানিতে গরুর দাম অনেক বেশি। এক লাখ ২০ হাজার টাকায় একটা কিনেছি। তবে এর দাম এক লাখ টাকার মধ্যে হলে ভালো হত।

ফকিরহাট উপজেলার কাঁঠালতলা এলাকা থেকে গরু কিনতে আসা মৌলভী আমির হোসেন বলেন, মধ্যবিত্ত পরিবারে অনেক হিসেব-নিকেশ করে গরু কিনতে হয়। দেখছি, দামে মিললে কিনব।

হাট ইজারাদার আনন্দ দাস বলেন, কোরবানির আর মাত্র দুই দিন আছে। তাই সবাই আজকের হাটেই গরু কেনার চেষ্টা করছেন। আজকে অনেক গরু-ছাগল বিক্রি হয়েছে। সন্ধ্যা পর্যন্ত আরও কিছু গরু বিক্রি হবে।

তিনি আরও বলেন, সাধারণত সপ্তাহে শুক্র ও সোমবার আমাদের গরুর হাট বসে। কিন্তু কোরবানি উপলক্ষে যদি ব্যবসায়ীরা চায় আগের দিন রাত পর্যন্ত এখানে গরু ক্রয়-বিক্রয় করতে পারবেন।

বাগেরহাট জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ শরিফুল ইসলাম বলেন, কোরবানি উপলক্ষে বসানো প্রতিটি হাটে আমাদের ভ্রাম্যমাণ মেডিকেল টিম রয়েছে। এছাড়া কোনো অসাধু ব্যবসায়ী যাতে হরমোন বা অন্য কোনো খারাপ রাসায়নিক দিয়ে গরু বিক্রি করতে না পারে সেজন্য প্রাণিসম্পদ বিভাগের নজরদারি রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, এবার কোরবানির জন্য আট হাজার খামারি এক লাখ দুই হাজার পশু লালন পালন করেছেন। জেলার ৯টি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ২২টি পশুর হাট বসেছে। স্থানীয় ব্যবস্থাপনায়ও কিছু হাট বসেছে বিভিন্ন এলাকায়। শুধু হাট নয়, এবার কোরবানিতে অনলাইনেও পশুর বিক্রির ব্যবস্থা করেছে প্রাণিসম্পদ বিভাগ। সেই সঙ্গে খামারিরা নিজ বাড়িতে বসেও কোরবানির পশু বিক্রি করছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করেও অনেকে গরু-ছাগল বিক্রি করছেন।

বাংলাদেশ সময়: ২০৫৫ ঘণ্টা, জুন ২৩, ২০২৩
এসআইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।