ঢাকা: তারল্য সংকট পুঁজিবাজারে সমস্যা তৈরি করেছিল। তারল্য সংকট কমতে শুরু করেছে, পুঁজিবাজারেও সমস্যা কমছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম।
মঙ্গলবার (১১ জুলাই) রাজধানীর পুরানা পল্টনে রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) অডিটোরিয়ামে পুঁজিবাজার নিয়ে আয়োজিত এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, তারল্য কমে যাওয়ার কারণে ব্যাংকগুলো এলসি খুলতে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ সীমার ২৫ শতাংশের ১২/১৩ শতাংশ নামিয়ে এনেছিল; পুঁজিবাজার থেকে প্রত্যাহার করে নিয়েছিল। ব্যাংকগুলোতে তারল্য বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে তারা শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ বাড়িয়ে আবার ১৬ শতাংশ করেছে। কোনো কোনো ব্যাংকের বিনিয়োগ ১৯ শতাংশ পর্যন্ত উঠেছে। এখন বিদেশি বিনিয়োগুলোও আসছে, আরও আসবে।
তিনি বলেন, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমেছিল, আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে। কয়েকদিন আগে ৩১ বিলিয়ন ডলারে উঠেছিল। আকুর বিল পরিশোধ করার পর ৩০ বিলিয়ন ডলারে নেমেছে। আবার বাড়বে। এর প্রভাব বৈদেশিক মুদ্রাবাজারে পড়বে। ডলারের বিনিময় হার ৮৫ টাকা থেকে ১১০ টাকার কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছে, ডলারের সরবরাহ বেড়ে গেলে আস্তে আস্তে ৯০ টাকাতে নেমে আসবে। তখন জিনিষপত্রের দাম কমে আসবে। মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বাড়বে। পুঁজিবাজারেও এর প্রভাব পড়েবে।
বিএসইসি চেয়ারম্যান আরও বলেন, পুঁজিবাজার ওঠানামা করলে লাভের সুযোগ বেশি থাকে। সব সময় যদি ভালো থাকে, তাহলে লাভ হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে।
শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, বেশিরভাগ বিনিয়োগকারীরা আমার কাছে জানতে চান ফ্লোর প্রাইস কবে উঠবে। আমি বলছি, আমি ফ্লোর প্রাইজের পক্ষে না। কিন্তু ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের কারণে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থরক্ষায় ফ্লোর প্রাইজ আরোপ করেছি। আমি ফ্লোর প্রাইস তুলে দিতে চাই, ফ্লোর প্রাইস যত দ্রুত সম্ভব তুলে দেব। তবে বাজারে ফ্লোর প্রাইস তোলার মতো পরিস্থিতি হতে হবে। বিনিয়োগকারীদের পুঁজি নিরাপদ হলে আমি ফ্লোর প্রাইস তুলে দেব।
তিনি বলেন, শেয়ারবাজারের জন্য বিদেশি বিনেযোগ খুবই জরুরি। কিন্ত বিদেশি বিনিয়োগের পথে বাধা নেতিবাচক প্রচারণা ও নেতিবাচক ইমেজ। বিদেশিরা মনে করে বাংলাদেশ ঝড়-ঝঞ্ঝা, বন্যা, রাজনৈতিক অসেন্তাষের দেশ। কিন্তু যখন আমরা রোড শো করেছি তখন বিষয়টি জানার পর তারা বলেছে, বাংলাদেশ সম্পর্কে তাদের ধারণা বদলে গেছে। তারা বলেছে, বাংলাদেশ সম্পর্কে সাম্প্রতিক সময়ের ধারণা নেই।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ইআরএফের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম। এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ইআরএফের সভাপতি রেফায়েত উল্লাহ মৃধা। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনা করেন ইআরএফের সদস্য মুহাম্মদ মোফাজ্জল।
আরও বক্তব্য রাখেন, ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ডের চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান, ডিএসইর চেয়ারম্যান হাফিজ মোহাম্মদ হাসান বাবু, সিএসইর চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম, এনআরবিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান এস এম পারভেজ তমাল, অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ড অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট হাসান ইমাম প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৬ ঘণ্টা, জুলাই ১১, ২০২৩
জেডএ/এমজেএফ