ঢাকা, সোমবার, ১৫ বৈশাখ ১৪৩২, ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ০০ জিলকদ ১৪৪৬

জাতীয়

লালমনিরহাটে বিপৎসীমার ওপরে তিস্তার পানি, বাম তীরে বন্যা 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০:১৯ এএম, জুলাই ১৩, ২০২৩
লালমনিরহাটে বিপৎসীমার ওপরে তিস্তার পানি, বাম তীরে বন্যা  ফাইল ফটো

লালমনিরহাট: উজানে পাহাড়ি ঢল ও ভারি বর্ষণে তিস্তা নদীতে পানি প্রবাহ বেড়ে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে তিস্তা নদীর বাম তীরে লালমনিরহাটের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) সকাল ৯টায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার তিস্তা ব্যারেজ ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ৩৪মিটার। যা (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ১৫মিটার) বিপৎসীমার ১৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

ব্যারেজ ও নদী তীরবর্তী মানুষ বাংলানিউজকে জানান, গত কয়েকদিন থেমে থেমে ভারী বর্ষণ আর উজানের পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি প্রবাহ বেড়ে যায়। পানি প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করতে তিস্তা ব্যারাজের সব জলকপাট খুলে দেওয়া হয়েছে। বুধবার রাত থেকে পানি বাড়তে থাকে বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ১৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। যা সকাল ৯টা পর্যন্ত অপরিবর্তিত থাকে। সকাল ৯টায় পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২দশমিক ৩৪ মিটার। যা বিপৎসীমার মাত্র ১৯ সেন্টিমিটার ওপরে। ভারতের গজলডোবায় তিস্তার পানি প্রবাহ বেড়ে যাওয়ায় উজানের ঢেউ বেড়ে ডালিয়া পয়েন্টে পানি প্রবাহ বেড়েছে বলে জানিয়েছে ব্যারেজ কর্তৃপক্ষ।

নদীপাড়ের মানুষজন জানায়, পানি বেড়ে যাওয়ার কারণে তিস্তা নদীর বাম তীরে লালমনিরহাট জেলার নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়েছে। নিম্নাঞ্চলের আবাদকৃত ফসলের ক্ষেতে পানি উঠেছে। শত শত পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। যার সংখ্যা ক্রমে বাড়ছে। ইতোমধ্যেই চরাঞ্চলের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

মহিষখোচা এলাকার মানজেদুল ইসলাম জানান, রাত থেকে পানি বাড়ছে তিস্তায়। নদীপাড়ের নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়েছে। ডুবে গেছে ফসলের ক্ষেত রাস্তাঘাট ও পুকুর। চরাঞ্চলে হেঁটে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। এক বাড়ি থেকে অন্য বাড়ি যেতে নৌকা ব্যবহার করতে হচ্ছে। নিম্নাঞ্চলের কয়েক হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

ভোটমারীর শৌলমারী চরের কফিল উদ্দিন বলেন, নদীতে পানি বাড়লেই চরাঞ্চলের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে। বর্ষাকালে বন্যা নিয়ে আতঙ্কে থাকতে হয়। রাত থেকে পানিবন্দি হয়ে পড়েছি। ক্রমেই বাড়ছে পানি। চারদিকে শুধু পানি আর পানি। পরিবার পরিজন নিয়ে মাচাংয়ের ওপর বসে নির্ঘুম রাত কাটাতে হচ্ছে নদীপাড়ের মানুষদের। এসব এলাকায় শিশু বৃদ্ধ আর গবাদি পশুপাখি নিয়ে চরম বিপদে রয়েছেন তারা।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) তিস্তা ব্যারেজ ডালিয়া শাখার নির্বাহী প্রকৌশলী আসফা উদ দৌলা বাংলানিউজকে বলেন, বৃষ্টি আর উজানের ঢলে তিস্তার পানি প্রবাহ বেড়েছে। সবগুলো জলকপাট খুলে পানি প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা এবং সকাল ৯টায় বিপৎসীমার ১৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে। টানা কয়েক ঘণ্টা বিপৎসীমার ওপরে থাকায় তিস্তার তীরবর্তী এলাকায় বন্যা দেখা দিয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১০১৫ ঘণ্টা, জুলাই ১৩, ২০২৩
আরএ

বাংলাদেশ সময়: ১০:১৯ এএম, জুলাই ১৩, ২০২৩ /

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।