রাজশাহী: প্রান্তিক মানুষের ভূমি সেবা প্রাপ্তির অন্যতম নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠান হয়ে উঠেছে উপজেলা ভূমি অফিস। প্রধানমন্ত্রীর স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ও ভূমি সেবা প্রাপ্তিতে সাধারণ মানুষের হয়রানি বন্ধে ভূমি মন্ত্রণালয় যেসব ডিজিটাল সেবা দিয়েছে তার মধ্যে ই-নামজারি সেবা অন্যতম।
আর এসব উদ্যোগ মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়িত হচ্ছে উপজেলা ভূমি অফিসের মাধ্যমে। উপজেলা ভূমি অফিসে আসা সেবা প্রার্থীদের মধ্যে শতকরা ৭০ শতাংশ আসেন ই-নামজারি সেবা নিতে।
তাই ই-নামজারি সেবাকে আরও স্বচ্ছ ও জনবান্ধব করার লক্ষ্যে ভূমি মন্ত্রণালয় তাদের ওয়েবসাইটে (land.gov.bd) এলাকাভিত্তিক নামজারি তথ্যচিত্র উপস্থাপন করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ ওয়েবসাইটে সমগ্র বাংলাদেশের বিগত ৯০ দিনের তথ্যচিত্র প্রদর্শিত হচ্ছে।
এ ভূমি অফিসে গিয়ে দেখা গেছে, প্রতিদিন বিপুল সংখ্যক সেবা প্রার্থী ই-নামজারি সেবা গ্রহণে এ ভূমি অফিসে আসেন। হয়রানি ছাড়া সেবা পেয়ে তারা অনেকেই খুশি ও সন্তুষ্ট।
সেখানে সেবা নিতে আসা পবা উপজেলার পারিলা ইউনিয়নের তেবাড়িয়া গ্রামের রেজাউল ইসলাম মাত্র তিন দিনের ব্যবধানে ই-নামজারি করতে পেরে আবেগ আপ্লুত হয়ে জানান, গত ৬ আগস্ট অনলাইনে নামজারি আবেদন করেন। এরপর মোবাইলে আসা এসএমএস অনুযায়ী তিনি ৮ তারিখ শুনানিতে উপস্থিত হয়ে তার ই-নামজারি কার্যক্রম সম্পন্ন হয়ে যায়। অতীতের হয়রানির ঘটনা এখন ইতিহাস। খুব সহজেই এখানে সব ধরনের সেবা পাওয়া যায়। অফিসে মন্তব্যের জন্য বই খোলা হয়েছে- সেখানে রক্ষিত বইয়ে তাই অনেকেই ভালো মন্তব্য লিখছেন।
প্রাপ্ত তথ্যচিত্র অনুযায়ী রাজশাহী বিভাগের গড় নিষ্পত্তি দিনের ভিত্তিতে শীর্ষ অবস্থানে আছে পবা উপজেলা ভূমি অফিস। গত ১০ জুলাই এর তথ্য অনুযায়ী পবা উপজেলায় গড় নিষ্পত্তি সময় ২০ দিন, যা রাজশাহী বিভাগের মধ্যে সবচেয়ে কম। বিগত বছর এ সময় পবা উপজেলার গড় নিষ্পত্তি সময় ছিল ৭৩ দিন। ই-নামজারি সেবা সহজীকরণে ও জনগণকে স্বল্পতম সময়ে এ সেবা দিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) অভিজিত সরকার।
অভিজিত সরকার বলেন, ই-নামজারি সেবা দেওয়া একটি টিম ওয়ার্ক। এখানে অফিসের স্টাফরা যেমন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন, ঠিক তেমনি একজন গ্রাহক সময় মতো উপস্থিত হয়ে সহযোগিতা করতে পারেন।
তিনি বলেন, বর্তমান রাজশাহী জেলা প্রশাসকের নির্দেশনা মোতাবেক ই-নামজারি সেবা দিতে আমরা বদ্ধপরিকর। যখন আমি এ উপজেলার দায়িত্ব গ্ৰহণ করি তখন গড় নিষ্পত্তি সময় ছিল ৭৩ দিন। ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা, সার্ভেয়ার, কানুনগো, অফিস সহকারীসহ সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতায় এ সেবা বর্তমানে ২০ দিনে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে। ভবিষ্যতে আরও স্বল্প সময়ে এ সেবা দেওয়ার জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
রাজশাহী জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ বলেন, ই-নামজারি সেবা দিতে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত সময় ২৮ দিন। তবে রাজশাহী জেলায় বর্তমানে কর্মরত সহকারী কমিশনারদের (ভূমি) যতদূর সম্ভব আইনসম্মতভাবে জনগণকে সেবা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শস্য ও স্মার্ট ভূমি সেবা দিতে জেলা প্রশাসন সর্বদা সচেষ্ট। ই-নামজারির পাশাপাশি অন্য ভূমি সেবা দেওয়া আরও সহজ ও জনবান্ধব করতে তারা প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৮ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০২৩
এসএস/আরবি