ঢাকা, বুধবার, ২২ মাঘ ১৪৩১, ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৫ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

টেকনাফে ডাকাতের অস্ত্র কারখানার সন্ধান, আটক ৬

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮১১ ঘণ্টা, আগস্ট ১৯, ২০২৩
টেকনাফে ডাকাতের অস্ত্র কারখানার সন্ধান, আটক ৬

কক্সবাজার: জেলার টেকনাফের হ্নীলা রঙ্গীখালি এলাকার দুর্গম পাহাড়ে অস্ত্র তৈরির কারখানা ও ডাকাত দলের আস্তানায় অভিযান চালিয়ে ছয় ডাকাতকে আটক করেছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব-১৫)।

এ সময় ডাকাত দলের অস্ত্রের কারখানা থেকে দুইটি একনলা লম্বা বন্দুক, চারটি এলজি, একটি অর্ধনির্মিত এলজি, সাত রাউন্ড শটগানের কার্তুজ, ১০ রাউন্ড রাইফেলের কার্তুজ, একটি ড্রিল মেশিন, একটি আগুন জ্বালানোর মেশিন, দুইটি লেদ মেশিন, দুইটি বাটাল, একটি শান দেওয়ার রেত, দুইটি লোহার পাইপ, দুইটি প্লাস, একটি কুপি বাতি এবং তিনটি স্মার্ট ফোন উদ্ধার করা হয়।

শনিবার (১৯ আগস্ট) দুপুরে কক্সবাজার র‍্যাব-১৫ সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান উপ-অধিনায়ক মেজর সৈয়দ সাদিকুল হক।

আটকরা হলেন হ্নীলা রঙ্গিখালী এলাকার গুরা মিয়ার ছেলে ফয়সাল উদ্দিন ওরফে ফয়সাল (৪০), টেকনাফ পশ্চিম সাতঘরিয়াপাড়ার নজির আহম্মদের ছেলে মো. বদি আলম ওরফে বদাইয়া (৩৫), একই এলাকার বাছা মিয়ার ছেলে মো. সৈয়দ হোসেন (৩২), পূর্ব সাতঘরিয়াপাড়ার মৃত বনি আমিনের ছেলে মো. দেলোয়ার হোসেন (৩৫), দক্ষিণ আলীখালীর জানে আলমের ছেলে মো. কবির আহাম্মদ (৪৩) ও উলুছামারি কুনারপাড়ার জাহিদ হোসেনের ছেলে মো. মিজানুর রহমান (২৬)।

মেজর সৈয়দ সাদিকুল বলেন, কক্সবাজারের টেকনাফের হ্নীলা অঞ্চলের গহীন পাহাড়ে একাধিক ডাকাত চক্র দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয় আছে। ডাকাত চক্র প্রতিনিয়ত এলাকাবাসী এবং অন্যান্য এলাকা থেকে আগত পর্যটকদের নানাভাবে হয়রানিসহ খুন, অপহরণ ও ধর্ষণ জাতীয় অপরাধ সংঘটিত করে আসছে। র‌্যাব-১৫ শুরু থেকেই এ সব ডাকাত দলের গতিবিধি এবং অবস্থান নজরদারিতে রাখার পাশাপাশি তাদের ধরার জন্য তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র‌্যাব-১৫ এর একটি দল অভিযান চালায়। অভিযানের সময় অস্ত্র তৈরির কারখানা সম্পর্কে জানতে পারি।

তিনি আরও বলেন, এ সময় উপস্থিতি টের পেয়ে ডাকাতরা র‌্যাব সদস্যদের লক্ষ্য করে গুলি বর্ষণ করে। এক পর্যায়ে ফয়সাল বাহিনীর প্রধান ফয়সালকে আটক করা হয়। পরে তার স্বীকারোক্তি মতে আরও পাঁচ ডাকাতকে আটক করা হয়।

র‍্যাব-১৫ এর উপ-অধিনায়ক বলেন, ফয়সাল ডাকাতের নেতৃত্বে ডাকাতি, অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায়, ধর্ষণ, মাদক ও অস্ত্র ব্যবসা এবং হত্যাসহ বিভিন্ন অপরাধ কর্মকাণ্ড সংঘটিত হয়। এছাড়াও দুর্গম পাহাড়ি এলাকা হওয়ায় তারা সেখানে অস্ত্র তৈরির কারখানা গড়ে তোলে।

জিজ্ঞাসাবাদে ডাকাত সদস্যরা জানায়, নানা অপরাধের পাশাপাশি তারা টেকনাফের বিভিন্ন স্থান থেকে অপহরণ করে রঙ্গিখালীর গহীন পাহাড়ে তাদের আস্তানায় বন্দী করে পরিবারের কাছ থেকে মুক্তিপণ আদায় করত। মুক্তিপণ না দিলে অপহৃতের ওপর চালানো হত পৈশাচিক নির্যাতন।

র‍্যাব জানায়, ফয়সালের বিরুদ্ধে হত্যা, ধর্ষণসহ টেকনাফ থানায় তিনটির অধিক মামলা রয়েছে। এছাড়াও আটক বদি আলম ওরফে বদাইয়ার বিরুদ্ধে হত্যা, মাদক, অস্ত্র, ডাকাতি ও অন্যান্য অপরাধে টেকনাফ থানায় ১৪টি, মো. কবির আহাম্মদের বিরুদ্ধে দুইটি, মো. সৈয়দ হোসেনের বিরুদ্ধে তিনটি, মো. দেলোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে তিনটি এবং মো. মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে একটি মামলা রয়েছে।  

তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলেও জানিয়েছেন র‍্যাবের এই কর্মকর্তা।

বাংলাদেশ সময়: ১৮১০ ঘণ্টা, আগস্ট ১৯, ২০২৩
এসবি/এসআইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।