ঢাকা, বুধবার, ২২ মাঘ ১৪৩১, ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৫ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

‘লেখক-শিল্পীরা ঐক্যবদ্ধ না হলে ধ্বংস কেউ ঠেকাতে পারবে না’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০১ ঘণ্টা, আগস্ট ১৯, ২০২৩
‘লেখক-শিল্পীরা ঐক্যবদ্ধ না হলে ধ্বংস কেউ ঠেকাতে পারবে না’ বিদ্যমান রাজনৈতিক বাস্তবতা: চিন্তক-লেখক-শিল্পী-সাহিত্যিকদের ভূমিকা শীর্ষক মতবিনিময় সভা | ছবি: শাকিল

ঢাকা: ‘দেশের বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতা নজিরবিহীন ও ভয়াবহ। দেশে এখন চরম দুঃশাসন চলছে।

যেকোনো সংকটে লেখক, সাহিত্যিকরা অগস্রর হলেও বর্তমানে নিশ্চুপ আছে। এর মাশুল দিতে হচ্ছে দেশকে। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন ও ভোটাধিকারের দাবিতে লেখক-বুদ্ধিজীবী-শিল্পীরা ঐক্যবদ্ধ না হলে আমাদের ধ্বংস কেউ ঠেকাতে পারবে না। ’

শনিবার (১৯ আগস্ট) জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ‘বিদ্যমান রাজনৈতিক বাস্তবতা: চিন্তক-লেখক-শিল্পী-সাহিত্যিকদের ভূমিকা’ শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করে রাষ্ট্রচিন্তা।

সাবেক অতিরিক্ত সচিব গোলাম শফিকের সভাপতিত্বে ও রাষ্ট্রচিন্তার সদস্য শিক্ষক আর রাজীর সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক আসিফ নজরুল, সাংবাদিক ও সাহিত্যিক মাহবুব মোর্শেদ, সাংবাদিক ও লেখক ফিরোজ আহমেদ, সাহিত্যিক রাখাল রাহা, শিক্ষক মোশরেকা অদিতি হক, সাংবাদিক ও সাহিত্যিক সালাহউদ্দীন শুভ্র, এহসান মাহমুদ, সাংবাদিক সেলিম খান, পরিকল্পনাবিদ খন্দকার নিয়াজ রহমান, সালাহউদ্দিন আহমেদ, আবুল কালাম আল আজাদ, হাবিবুর রহমানসহ লেখক, শিল্পী, সাহিত্যিক ও বুদ্ধিজীবীরা।

দেশের বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতাকে নজিরবিহীন ও ভয়াবহ উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশে চরম দুঃশাসন চলছে। যেকোনো সংকটে লেখক, সাহিত্যিকরা অগ্রসর থাকে। কিন্তু বাংলাদেশে দুর্ভাগ্যজনকভাবে লেখক, সাহিত্যিকরা মোটাদাগে নিশ্চুপ আছে। তারা বর্তমান সরকারের বয়ানের মধ্য বাস করতে আরাম পায়। ঝুঁকি নিতে চায় না। এর মাশুল বাংলাদেশকে দিতে হচ্ছে।

মোশরেকা অদিতি হক বলেন, সংঘবদ্ধতার কোনো বিকল্প নাই। সংঘবদ্ধ হয়ে এক প্ল্যাটফর্মে না এলে আমাদের ধবংস কেউ ঠেকাতে পারবে না। বুদ্ধিজীবীতা একটা অবিরাম সংগ্রামের ব্যাপার। আমাদের কণ্ঠস্বর রুদ্ধ করা হচ্ছে। শ্বাস কেড়ে নেওয়া হচ্ছে।

সালাহউদ্দিন শুভ্র বলেন, বর্তমান কর্তৃত্ববাদী সরকারের অধীনে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। এই সরকারকে সমর্থন দিচ্ছে লেখক, শিল্পীরা। এটা ন্যক্কারজনক। এই সরকারকে উৎখাতে বৃহত্তর মোর্চা গঠনের সময় এসেছে।

আসিফ নজরুল বলেন, সত্য, দেশ ও জনগণের পক্ষে দাঁড়াতে হবে। ভয় পেলে ভয় আপনা-আপনি জেঁকে বসে। সরকারপন্থীরা নির্লজ্জভাবে ঐক্যবদ্ধ। আমরা কেন বিচ্ছিন্ন? আমাদের কেন আলাদা থাকতে হয়? আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। সরকারের মিথ্যা বয়ানগুলো গুঁড়িয়ে দিতে হবে।

রাখাল রাহা বলেন, লেখক-বুদ্ধিজীবী-শিল্পী-সাহিত্যিকদের অন্তত দুটি বিষয়ে ঐকমত্যে আসতে হবে। ভোটাধিকার ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা। এই দুই নূন্যতম দাবিতে কোনো ছাড় নয়। যে সরকার যে আদর্শ নিয়েই ক্ষমতায় আসুক, এই দুটি জিনিস লঙ্ঘন করলে আমরা বসে থাকব না।

মাহবুব মোর্শেদ বলেন, বিদ্যমান বাস্তবতা আমরা সবাই জানি। এখন সময় অ্যাকশন প্ল্যানের। কর্মপন্থা নির্ধারণের। ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়াজ তৈরি করতে হবে। ইতিহাসের মুহূর্ত ধরা এবং মুহূর্ত তৈরি করা আমাদের কাজ। সেই কাজে বেশির ভাগ লেখক-সাহিত্যিকরা মোটাদাগে নিশ্চুপ। কিন্তু আমাদের নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে অনড় থাকতে হবে। আওয়ামী বয়ানের ছায়াতল থেকে মুক্ত হতে হবে।

ফিরোজ আহমেদ বলেন, প্রতিষ্ঠান ধ্বংসের সর্বোচ্চ দশা চলছে দেশে। খাদিজার মতো এক সাধারণ শিক্ষার্থী মাসের পর মাস জামিন পাচ্ছে না। আগে রাজনীতি করে ঘরে ফেরার ব্যাপারে কোনো দুশ্চিন্তা ছিল না। এখন ঘরে ফেরা যাবে কি না সে ব্যাপারে কোনো নিশ্চয়তা নাই। পুরনো বুদ্ধিজীবীদের আবেদন ফুরিয়ে গেছে। প্রত্যেক সময় তার নিজস্ব বুদ্ধিজীবী তৈরি করে, এখনকার বুদ্ধিজীবীদের প্রমোট করতে হবে, যারা সময়ের বেদনাকে ধারণ করে।

গোলাম শফিক বলেন, সবাই মুক্ত বাতাসে শ্বাস নিতে চায়। পরিবর্তন হবেই। এটাই প্রকৃতির ধর্ম। পরিবর্তনের রূপরেখা প্রণয়ন করতে হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৯ ঘণ্টা, আগস্ট ১৯, ২০২৩
এসসি/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।