ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৩ মাঘ ১৪৩১, ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৬ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

নেত্রকোনার বিরিশিরি থেকে শান্তিপুর ছয় কিমি সড়ক নয় যেন নালা

আব্দুর রহমান, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০৯ ঘণ্টা, আগস্ট ২৮, ২০২৩
নেত্রকোনার বিরিশিরি থেকে শান্তিপুর ছয় কিমি সড়ক নয় যেন নালা

নেত্রকোনা: নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার শ্যামগঞ্জ-বিরিশিরি আঞ্চলিক মহাসড়কের বিরিশিরি থেকে শান্তিপুর এলাকা পর্যন্ত প্রায় ছয় কিলোমিটার সড়কের খানাখন্দ সৃষ্টি হয়েছে। ফলে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে জনগণকে।

এই ভোগান্তি এক দিনের নয়, বছরের পর বছরের।  

প্রধান এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিনই লাখো মানুষ জেলা শহর, বিভাগসহ বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করে। এখন দুর্ভোগের প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে সড়কের খানাখন্দ-কাদা ও যানজট। ভেজা ও অতিবোঝাই বালু পরিবহনে সড়ক নষ্ট হয়ে বিভিন্ন স্থানে সৃষ্টি হয়েছে খানাখন্দ আর বড় বড় গর্ত। এতে প্রতিনিয়ত যানজট লেগেই থাকছে। অন্যদিকে এইসব বালুর গাড়ি থেকে চুঁইয়ে পড়া পানিতে সবসময়ই সড়কটি কাদাপানিতে একাকার থাকে। ফলে সবাইকে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

এ সড়ক দিয়ে যেমন যেতে হয় জেলাশহর ও বিভাগীয় শহরে অপরপথে আসতে হয় উপজেলা সদর, অফিস-আদালতসহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে।  

তাছাড়া সোমেশ্বরী নদী, সাদামাটির পাহাড় ও পাহাড়ি প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে এখানে সারাবছরই বেড়াতে আসেন বিপুল সংখ্যক পর্যটক। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে তাদেরও।  

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, দুর্গাপুর উপজেলার ১২ কিলোমিটার সড়কের প্রায় ছয় কিলোমিটার সড়কেরই বেহাল দশা। খানাখন্দ আর কোথাও কোথাও প্রায় দুই ফুট গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সেই গর্তে জমেছে পানি। আর পুরো সড়কজুড়ে কাদা আর কাদা। যেন পা ফেলাই দায়। ওই সড়কটি দিয়েই শত শত যানবাহনসহ মানুষ চরম দুর্ভোগ নিয়ে চলাচল করছে।

এদিকে সড়ক ও জনপদ বিভাগের আওতায় সড়ক সংস্কারের অংশ হিসেবে ২৪শ মিটার পৃথক পৃথক স্থানে আরসিসি সড়ক নির্মাণের কাজ করা হচ্ছে। তবে সড়কের কিছু স্থানে এক পাশের কাজ শেষ হলেও ফেলে রাখা হয়েছে অন্যপাশের অংশটি। এতে সড়কের একপাশ দিয়ে যানবাহন চলাচলে দীর্ঘ সময়ের যানজট সৃষ্টি হচ্ছে।  

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অসংখ্য যানবাহন চলাচল করায় সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রেখে এক সঙ্গে দুইপাশের কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব না।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ভেজা ও অতিরিক্ত বালু বহন করায় সড়কের বারোটা বেজে গেছে। সর্বদাই কাদায় ডুবে থাকছে এবং দীর্ঘ সময় যানজট লেগে থাকে। এতে যাতায়াতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

স্থানীয় বাসিন্দা নুরুল আমিন জানান, কাদা আর ট্রাকের জ্যামে অতিষ্ঠ সবাই। আমার বাড়ি লক্ষ্মীপুর থেকে দুর্গাপুর যেতে ২০ মিনিটের রাস্তা এখন দুই ঘণ্টাও লাগে। এই দুরবস্থা যেন দেখার কেউ নেই।  

আব্দুল আলী জানান, সড়কটি দিয়ে অসুস্থ রোগী নিয়ে উপজেলা সদর হাসপাতালে যেতে হয়। তাছাড়াও জরুরি রোগীদের ময়মনসিংহ নিয়েও যেতে হয়। কিন্তু সড়কের এই অবস্থায় সময় মতো পৌঁছানোটাই ঝুঁকি হয়ে যায়।

এইচএসসি পরীক্ষার্থী উজ্জ্বল মিয়া জানান, বাড়ি থেকে সকাল সাড়ে ৬টায় বের হই। সড়কের এই পরিস্থিতিতে অটোও যেতে চাই না যার কারণে খুব কষ্ট হয়, আর কতক্ষণে কেন্দ্রে পৌঁছাবো এই নিয়ে টেনশনে থাকি।

এ প্রসঙ্গে নেত্রকোনা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহমুদ আলনূর সালেহীন জানান, ওই সড়কে বালুর ট্রাক চলাচলে রাস্তা টিকিয়ে রাখায় মুশকিল হয়ে পড়েছে। মানুষের কষ্ট তো থাকছেই। সড়কের পৃথক পৃথক স্থানে মোট ২৪শ মিটার আরসিসি'র কাজ চলমান রয়েছে।

আরও জানান, সড়কের এক পাশের কাজ শেষ করে ২৮দিন পর অপর পাশের কাজ ধরতে হচ্ছে। এ সড়কে অনেক গাড়ি চলাচল রয়েছে তাই সড়ক বন্ধ রেখে কাজ করা যায় না।

বাংলাদেশ সময়: ১৬০৫ ঘণ্টা, আগস্ট ২৮, ২০২৩
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।