ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৩ মাঘ ১৪৩১, ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৬ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

মসজিদের মেহরাবের ওপর মাদরাসার টয়লেট, ইউএনওর কাছে অভিযোগ 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপনডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০০ ঘণ্টা, আগস্ট ২৮, ২০২৩
মসজিদের মেহরাবের ওপর মাদরাসার টয়লেট, ইউএনওর কাছে অভিযোগ 

চাঁপাইনবাবগঞ্জ: মসজিদের মেহরাব ও ছাদের ওপর জোর করে দুটি টয়লেট ও দেয়াল তুলে ট্যাংকি নির্মাণ, একইসঙ্গে মসজিদের দোতলায় ক্লাসরুম ও আবাসস্থল নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে একটি মাদরাসা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে।  

এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন মসজিদ কমিটির সভাপতি।

 

টয়লেট নির্মাণে ধর্মীয় কোনো সমস্যা নেই, মাদরাসা পরিচালকের এমন দাবির পর স্থানীয় মুসল্লিদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে দুই পক্ষে উত্তেজনা বিরাজ করছে।  

ঘটনাটি চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার মনাকষা ইউনিয়নে তারাপুর শ্যামপুর সাহাপাড়া জামে মসজিদের।

স্থানীয় সূত্র ও লিখিত অভিযোগ থেকে জানা গেছে, গত ২০০১ সালে বিদেশি সংস্থার অর্থায়নে উপজেলার তারাপুর-শ্যামপুর সাহাপাড়া জামে মসজিদ স্থাপিত হয়। পরে স্থানীয়ভাবে কমিটির মাধ্যমে মসজিদটি পরিচালনা করা হয়। প্রকল্পটির মেয়াদ শেষ হলে পাশেই গড়ে ওঠা আল মাদরাসাহ আল আরাবিয়্যাহ কর্তৃপক্ষ মসজিদটি দখলে নেওয়ার চেষ্টা করে। বাইরের মুসল্লিদের আটকাতে সম্প্রতি মসজিদে আসার রাস্তা বন্ধ করে বাইরে দেয়াল ঘেঁষে মেহরাবের ওপর টয়লেট নির্মাণ করা হয়।  মসজিদের দ্বিতীয়তলায় মাদরাসার আবাসিক ভবন নির্মাণ করে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা বসবাস শুরু করে। এছাড়া মসজিদের ভেতরে প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ক্লাসও নেওয়া হচ্ছে।  

এ নিয়ে স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করলে সম্প্রতি মাদ্রাসার পরিচালক বলেন, মেহরাবের ওপর টয়লেট নির্মাণে ধর্মীয় সমস্যা নেই। মসজিরে অংশ মাদরাসার কাজে ব্যবহার করা যায়। তার এমন মন্তব্যের পর এলাকায় উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।  

পরে স্থানীয়দের পক্ষ থেকে মসজিদটির মেহরাবের ওপর থেকে টয়লেট উচ্ছেদ ও মাদরাসার আবাসিক ভবন সরিয়ে নামাজের সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়।  

স্থানীয় বাসিন্দা নুরেস আলী (৮৩) বলেন, অত্র এলাকার মানুষের একমাত্র মসজিদটির ওপর জোর করে মাদরাসা কর্তৃপক্ষ টয়লেট স্থাপন করেছে। সে টয়লেট থেকে নোংরা পানি মেহরাবের ছাদের ওপর পড়ছে। আবার যে ট্যাংকি নির্মাণ করা হয়েছে সেটিও মসজিদের দেয়াল ঘেঁষা। এমন কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ করতে গিয়ে লাঞ্ছিত হতে হয়েছে তাদের।

এ ব্যাপারে আল মাদরাসাহ আল আরাবিয়্যাহর অধ্যক্ষ শুয়াইবুর রহমান বলেন, মাদরাসায় দুইশর ওপরে শিক্ষার্থী রয়েছে। বাইরে দুটি টয়লেট থাকলেও রাতের বেলা ভয়ে বাইরে যেতে পারে না শিশুরা। অনেকে ঘরে ও সিঁড়িতে মলত্যাগ করে মাদরাসার পরিবেশ নষ্ট করে। সবদিক চিন্তা করে নতুন দুটি টয়লেট নির্মাণ করা হয়েছে। এতে মসজিদের কোনো সমস্যা হবে না।

অন্যদিকে মাদরাসার পরিচালক আবদুর রউফ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, বড় বড় আলেমদের ফতোয়া নিয়ে ছাদে টয়লেট ও ট্যাংকি নির্মাণ করা হয়েছে। মাদরাসাটি উচ্ছেদ করতে মিথ্যা অভিযোগ দেওয়া হয়েছে, এমন দাবি করে তিনি আরও বলেন, জোর করে নয়, স্থানীয়দের জানিয়ে করে এসব করা হয়েছে।

শিবগঞ্জ উপজেলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আবুল হায়াত বলেন, ৩ দিন আগে অভিযোগ পাওয়া পর সমাধানের জন্য উভয় পক্ষকে নোটিশ করা হয়েছে। দ্রুতই বিষয়টি সমাধান করা হবে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৭ ঘণ্টা, আগস্ট ২৮, ২০২৩
নিউজ ডেস্ক

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।