ঢাকা: আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, আগামী জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে। আর সেই নির্বাচনে দেশের জনগণ শেখ হাসিনাকেই বেছে নেবে।
বুধবার (৩০ আগস্ট) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। ‘১৯৭৫ সালের বর্বরতা: বাংলাদেশের মানবাধিকার ও শাসনের ওপর প্রভাব’ শীর্ষক এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, শেখ হাসিনার বর্তমান সরকার গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় বিশ্বাসী। সে অনুযায়ী আগামী জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে। আর সেই নির্বাচনে দেশের জনগণ শেখ হাসিনাকেই বেছে নেবে।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ইমডেমনিটি আইন করা হলো। তবে সে সময় মানবতার কথা বলে কেউ প্রশ্ন তোলেননি। এরপর জাতীয় চার নেতা যারা বঙ্গবন্ধুর দূত ছিলেন, তারাও নিহত হয়েছিলেন। একুশে গ্রেনেড হামলা হলো। সে সময় খালেদা জিয়া জোক করে বলেছিলেন, ‘শেখ হাসিনা ভ্যানিটি ব্যাগে বোমা নিয়ে গিয়েছিলেন’। এই ঘটনায় তারেক রহমান জড়িত ছিলেন। বোমা হামলায় আওয়ামী লীগের ২১ জন নেতাকর্মী নিহত হলেন। এসব হামলায় নিহত হওয়ার ঘটনায় কেউই মানবতা লঙ্ঘনের কথা তোলেননি।
অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৭৫ থেকে ৮১ সাল পর্যন্ত নির্বাসিত হতে বাধ্য হয়েছিলেন। এমন হত্যাকাণ্ড বিশ্বে আর ঘটেনি, যেখানে একজন রাষ্ট্রনায়কের পুরো পরিবারকে হত্যা করা হয়েছে। ঘাতকরা শুধু বঙ্গবন্ধু নয়, বাংলাদেশকেই হত্যা করতে চেয়েছিলেন।
তিনি বলেন, ১৯৭৫ থেকে ৯০ সাল পর্যন্ত বিএনপি ও জাতীয় পার্টি বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ধ্বংস করে। তারা ইমডেমনিটি আইনের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার রোধ করে। তবে এটা নিয়ে কেউ মানবতার লঙ্ঘনের প্রশ্ন তোলেননি। এখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই মানবতা ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করছেন। আমরা বাংলাদেশে আর গ্রেনেড হামলা, বোমা হামলা চাই না। আসুন হাতে হাত রেখে শান্তি ও সমৃদ্ধির বাংলাদেশ গড়ি।
অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের ড. মোমেন বলেন, দুঃখের বিষয় বঙ্গবন্ধুর পরিবারকে হত্যা করা হলো তখন আমাদের বড় বড় বন্ধুরা যারা এখন মানবাধিকারের কথা বলেন, তাদের মুখ থেকে একটি কথাও বের হয়নি। তারা মানবাধিকারের কথা বলেন, কিন্তু তারা তখন নিশ্চুপ ছিলেন। বরং ঘাতক সরকারগুলোকে সাহায্য করেছে। আর যারা ঘাতক, তাদের বিভিন্ন অজুহাতে এখনও তাদের দেশে আশ্রয় দিয়ে রেখেছে। আমরা তাদের বিচারের সম্মুখীন করতে চাই। যারা আমাদের ওয়ার ক্রিমিনাল তাদের অবশ্যই জাস্টিসের সম্মুখীন করতে চাই। আজ বিদেশি বন্ধুদের একটা ইঙ্গিত দিলাম, আল্লার ওয়াস্তে এ ধরনের ঘাতকদের বিষয়ে উদ্যোগ নেন।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা সরকার আসার কারণে এ দেশে গণতন্ত্র টেকসই হয়েছে। শেখ হাসিনা আসার পর দেশে নির্বাচন হচ্ছে। শেখ হাসিনা মানবাধিকার, ন্যায়বিচার এগুলোর জন্য কাজ করছেন।
অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর দায়মুক্তির সংস্কৃতি তৈরি করা হয়েছিল। তবে ১৯৯৬ সালে প্রথম দফায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর দায়মুক্তির সংস্কৃতির অবসান ঘটিয়েছেন।
অনুষ্ঠানে বিলিয়ার চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান বলেন, বঙ্গবন্ধু আবেগের নাম নয়, এটা দর্শনের নাম। তিনি আমাদের জাতির পিতা। তার দর্শন দেশজ জন্ম নেওয়া, বাইরে থেকে কোনো দর্শন তিনি নিয়ে আসেননি। তিনি গুলশান, বনানী থেকে নয় মফস্বল থেকে এসেছিলেন। মানুষের নেতা হয়ে মানুষের কাছেই তিনি ছিলেন। তিনি ছিলেন একজন বিশ্ব নেতা।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) নাহিদ ইজাহার খান।
বাংলাদেশ সময়: ২০১২ ঘণ্টা, আগস্ট ৩০, ২০২৩
টিআর/আরআইএস