মেহেরপুর: পাওনা টাকা ও ন্যায় বিচার না পেলে পরিবারসহ আত্মহত্যার হুমকি দিয়েছেন মেহেরপুর জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য দেবাশিষ বাগচি মনু।
মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) সকালে মেহেরপুর সোডাপ মিলনায়তনে জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক শহীদ সরফরাজ মৃদুলের বিরুদ্ধে করা সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ হুমকি দেন।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আমি আওয়ামী পরিবারের সন্তান এবং আমি নিজেও বর্তমানে মেহেরপুর জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য। পারিবারিক সূত্রে বহু বছর ধরে ঠিকাদারি ব্যবসা করে আসছি। সেই ধারাবাহিকতায় ২০১৫ সালে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ও মেহেরপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য ফরহাদ হোসেনের ছোট ভাই জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক শহীদ সরফরাজ মৃদুলের সঙ্গে যৌথভাবে ঠিকাদারি ব্যবসা শুরু করি।
২০১৫ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত গণপূর্ত, জনস্বাস্থ্য, শিক্ষা প্রকৌশলী, এলজিইডিসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৩০ থেকে ৩৫টা নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ করেছি। যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ২৫ থেকে ২৭ কোটি টাকা। ২০২১ সালের প্রথম দিকে যৌথ ঠিকাদারি ব্যবসা পরিসমাপ্তি ঘটালে তার সঙ্গে আমার মূলধন ও লভ্যাংশসহ আনুমানিক দুই কোটি ৫০ লাখ টাকার বেশি পাওনা হয়। প্রাপ্য টাকা না পেয়ে আমার ও তার পরিবারের লোকজনসহ জেলা যুবলীগের অন্যান্য নেতাকে অবহিত করি। এক সময় সবার হস্তক্ষেপে ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে আমার সঙ্গে হিসাব করতে রাজি হন। আমি হিসাবে বসতে বললে বিভিন্ন অজুহাতে সময় ক্ষেপন করেন তিনি। একপর্যায়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বললে তখন তিনি মৌখিকভাবে এক কোটি ৮০ লাখ টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে মীমাংসা করেন এবং আমাকে চলতি বছরের জুলাই মাসের ১৬ তারিখে ঢাকায় যেতে বলেন। ঢাকার আদাবরে তার বাসার সামনে গেলে রিংরোড সাহাবুদ্দিন প্লাজার ওসিস কফি শপে বসে আমাকে ২৪/০৭/২০২৩ তারিখ দিয়ে রুপালী ব্যাংক মেহেরপুর শাখার এক কোটি ৮০ লাখ টাকার একটি চেক দেন। আমি চেকে দেওয়া তারিখ অনুযায়ী ২৪ জুলাই টাকা উত্তোলনের জন্য অগ্রণী ব্যাংকে চেক জমা করি। এক সপ্তাহ পর ব্যাংক থেকে চেক ডিজঅনার দেখিয়ে সার্টিফিকেট দেয়। যেখানে লেখা আছে গত ৪ এপ্রিল ২০২১ তারিখে একাউন্ট বন্ধ করা হয়েছে। কিন্তু ওই চেক ব্যাংকে জমা দেওয়ার দিনই চেকদাতা শহীদ সরফরাজ মৃদুল চেকটি হারিয়ে গেছে বলে মেহেরপুর থানায় একটি মিথ্যা জিডি করেন, যার নম্বর ১২৭৫। এর পর থেকে তিনি আমাকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়ে আসছেন।
আমি নিরুপায় হয়ে গত ৩০ আগস্ট শহীদ সরফরাজ মৃদুলের নামে একটি আইনগত নোটিশ পাঠাই। একই দিন আমার বিরুদ্ধে তিনি আদালতে একটি পিটিশন মামলা করেন। ওই মামলার কারণে ১ সেপ্টেম্বর আমার বাড়িতে পুলিশ তল্লাশি চালায়।
তিনি আরও বলেন, আমাকে দেওয়া চেক ছিনিয়ে বা প্রশাসনিক ক্ষমতায় নিয়ে নেওয়া হলে এবং আমি ন্যায় বিচার না পেলে পরিবারসহ আত্মহত্যা করা ছাড়া আমার কোনো উপায় থাকবে না।
সংবাদ সম্মেলনে মেহেরপুর জেলায় কর্মরত বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। তবে এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক শহীদ সরফরাজ মৃদুলের মোবাইলে ফোন করা হলে তিনি কল রিসিভ করেননি।
বাংলাদেশ সময়: ১৯০৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৫, ২০২৩
আরএ