ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

রড চুরির অভিযোগে কিশোরকে পিটিয়ে হত্যা: গ্রেপ্তার ২

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১১৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৯, ২০২৩
রড চুরির অভিযোগে কিশোরকে পিটিয়ে হত্যা: গ্রেপ্তার ২

ঢাকা: রাজধানীর মোহাম্মদপুরে রড চুরির অভিযোগে এক আকাশ (১৫) নামে এক কিশোরকে বেঁধে পিটিয়ে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িত দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।  

শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) রাতে সিরাজগঞ্জ সদর থানা এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ।

 

গ্রেপ্তাররা হলেন- মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বাবু (২১) ও মো. আব্দুল বারেক বাবু (২৩)। হত্যাকাণ্ডের পর তারা আত্মগোপন করতে সিরাজগঞ্জে চলে যান।

 আকাশকে মারধরের সময় ব্যবহৃত লাঠি, লোহার রড, ক্রিকেট খেলার স্ট্যাম্প ও অন্যান্য আলামত জব্দ করে পুলিশ।  

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও বিভাগের মোহাম্মদপুর জোনের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) মৃত্যুঞ্জয় দে সজল বিষয়টি নিশ্চিত করেন।  

তিনি বলেন, নিহতের ঘটনায় ভুক্তভোগীর ফুফু মালতী আক্তার বাদী হয়ে মোহাম্মদপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। কিশোর হত্যার বিষয়টি মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত শুরু করে। পুলিশ ঘটনাস্থলের আশপাশের সাক্ষীদের জিজ্ঞাসাবাদসহ সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে।  

পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ঘটনার স্পর্শকাতরতা বিবেচনায় মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনার রহস্য উদ্‌ঘাটন ও জড়িতদের গ্রেপ্তারে তৎপরতা শুরু করে। ঘটনাস্থলের আশেপাশে ভবনে বসবাসকারী ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ৭ সেপ্টেম্বর ভোরে তারা নির্মাণাধীন প্লটে চিৎকার ও কান্নার শব্দ শুনতে পান। তবে তারা ধারণা করতে পারেননি যে, কাউকে আটকে রেখে নির্যাতন করা হচ্ছে। পুলিশ নির্মাণাধীন ভবনের শ্রমিক এবং নির্মাণ কাজের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের তথ্য সংগ্রহের পর তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তার মাধ্যমে ঘটনায় জড়িত কয়েকজনের অবস্থান শনাক্ত করতে সক্ষম হয়।

ঘটনায় জড়িতদের অবস্থান শনাক্তের পর তাদের গ্রেপ্তারে মোহাম্মদপুর থানা এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করা হয়। পরে সিরাজগঞ্জ সদর থানা এলাকা থেকে ঘটনায় নেতৃত্বদানকারী আসামি জহিরুল ইসলাম বাবু ও আব্দুল বারেক বাবুকে গ্রেপ্তার করা হয়।  

গ্রেপ্তার আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনা প্রসঙ্গে জানা গেছে, ৭ সেপ্টেম্বর ভোরে চোর সন্দেহে আকাশকে তারা প্রথমে আটক করে এবং পরে সেখানে থাকা অন্যরা তাদের সঙ্গে যুক্ত হয়ে ৬-৭ জন মিলে তাকে দীর্ঘ সময় মারধর করে।  

এডিসি মৃত্যুঞ্জয় দে সজল বলেন, অতিরিক্ত মারধরের কারণে আকাশ গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে গ্রেপ্তার জহিরুল তার ফোন থেকে আকাশের ফুফু মালতী আক্তারকে (৩০) ফোন করে ডেকে এনে আকাশকে বাসায় পাঠিয়ে দেন। কিছুক্ষণ পর আকাশের মৃত্যুর সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে তারা সবাই ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান।

তিনি আরও বলেন, আসামিরা ঘটনায় জড়িত অন্যান্য সহযোগীদের নাম-ঠিকানা জানিয়েছে। ঘটনায় জড়িত পলাতক বাকি আসামিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।  

গত ৬ সেপ্টেম্বর রাতে আকাশকে মোহাম্মদপুর থানাধীন টিক্কাপাড়া বরাবো সরকারি প্রাইমারি স্কুলের নির্মাণাধীন প্লটে চোর সন্দেহে সেখানে থাকা নিরাপত্তাকর্মী এবং নির্মাণ শ্রমিকরা আটক করে। পরে রাত থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত বেধরক মারধর করে। এতে ভুক্তভোগী আকাশ গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হয় এবং পরে বাসায় যাওয়ার পর৭ সেপ্টেম্বর সকাল ৮টার দিকে সে মৃত্যুবরণ করে। এ ঘটনা ভুক্তভোগীর ফুফু মালতী আক্তার বাদী হয়ে মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।  

নিহত আকাশ কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ থানার গুজাইদ্দা গ্রামের রহমত আলীর ছেলে। আকাশের মায়ের নাম মৃত আম্বিয়া বেগম। সে বর্তমানে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের টিক্কা পাড়ার পানির পাম্পের গলির ১৫/১৫ সি, ইঞ্জিনিয়ারের বাড়িতে বসবাস করত।  

** মোহাম্মদপুরে কিশোরকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ

** মোহাম্মদপুরে শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে হত্যা: মূলহোতাসহ আটক ৩

বাংলাদেশ সময়: ০১০৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৯, ২০২৩
এসজেএ/এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।