ঢাকা: ভেতরে প্রবেশ করতেই দেখা যায় জায়গায় জায়গায় ময়লার স্তূপ। এই ময়লার স্তূপ দেখে মনে হচ্ছে, সিটি করপোরেশনের কোন ছোটখাটো একটি ডিপো।
শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিকেল পৌনে ৩টার দিকে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালের পুরাতন ভবনের দ্বিতীয় তলায় শিশু ওয়ার্ড ২০৮, সেখানে গিয়ে জায়গায় জায়গায় ময়লার স্তূপ দেখা যায়। এছাড়া সকালে ওয়ার্ডে ঝাড়ু দেওয়ার পরে ময়লাগুলো প্লাস্টিকের বস্তায় করে ওয়ার্ডের বারান্দায় রাখা হয়েছে, যা থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।
ওয়ার্ডের ভেতর প্রবেশ করতেই দেখা যায়, ওয়ার্ড জুড়ে আনাচে-কানাচে বিভিন্ন আবর্জনার স্তূপ। ওয়ার্ডের যে দিকেই তাকানো হয় সেদিকেই ময়লা আর ময়লা। এমনকি ডাক্তারদের বসার একটি চেয়ারও ভেঙে পড়ে আছে সেখানে। তার নিচেও বিভিন্ন আবর্জনা পড়ে থাকতে দেখা যায়।
এছাড়া ওয়ার্ডের ভিতরে একটি বারান্দা আছে। সেখান দিয়েই শিশু রোগীদের নিয়ে যেতে হয় এইচডিইউতে। সেই বারান্দায় দেখা যায় পলিব্যাগে ভরা ময়লার স্তূপ। এছাড়া হাসপাতালের ময়লা সংগ্রহ করার কয়েকটি প্লাস্টিকের জার একত্রে করে সেখানে রাখা হচ্ছে। এতে বারান্দাসহ ওয়ার্ডের ভেতরেও দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিশু রোগীর স্বজনরা জানান, ওয়ার্ডে সকালে একবার ঝাড়ু দিয়ে বড় ময়লাগুলো সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। আনাচে কানাচে ধুলোবালি ও অনেক ময়লায় পড়ে থাকে। উল্টো ঝাড়ুদাররা আমাদের সঙ্গে চিল্লাচিল্লি করে। তারা বলে, নিজেদের পরিষ্কার নিজেদের করতে হবে। এখন আপনারা বলুন, আমাদের শিশু সামলাব নাকি ওয়ার্ড পরিষ্কার করব।
সেখানে দায়িত্বরত নার্সরা জানান, ডাক্তারদের বসার চেয়ারটি আজকে ভেঙে গিয়েছে। আর ময়লা পরিষ্কারের দায়িত্ব অন্যদের। এছাড়া ওয়ার্ডে আসন সংখ্যা হল ১৯টি। কিন্তু শিশু রোগী ভর্তি আছে ৪৮ জন। তাদের মধ্যে ১৫ জন ডেঙ্গু রোগী। আগামীকাল এই ওয়ার্ডে ভর্তি রোগীর সংখ্যা আরও বেড়ে যাবে।
রাতে এই বিষয়ে সেখানকার ওয়ার্ড মাস্টার আবুল হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ওই ওয়ার্ডে আসন সংখ্যা থেকে তিনগুণ রোগী ভর্তি থাকে। রোগীর স্বজনরা একটু পরপর বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে ময়লা ফেলে রাখে। ওই ওয়ার্ডের একজন মাত্র দৈনিক মজুরিতে নিয়োগপ্রাপ্ত পরিচ্ছন্ন কর্মী আছে। এছাড়া আর একজন আছে বারান্দা সংলগ্ন এইচডিইউতে। সকাল-বিকেল তারা তো পরিষ্কার করে থাকে। তবুও বিষয়টি আবারও দেখা হচ্ছে।
এদিকে ওয়ার্ড থেকে অপর একটি সূত্র জানান, পরিচালক স্যার সন্ধ্যার দিকে লোক পাঠিয়ে ওয়ার্ডটি পরিষ্কার করে ফেলে। অথচ দায়িত্বরত ওয়ার্ড মাস্টার আবুল হোসেন কিছুই জানে না।
এদিকে তাৎক্ষণিকভাবে হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজমুল হককে ওয়ার্ডে স্তূপ করে থাকা ময়লার বিষয়টি জানানোর সঙ্গে সঙ্গে তিনি কয়েকজন লোক পাঠিয়ে ওয়ার্ডটি পরিষ্কার করে ফেলেন।
বাংলাদেশ সময়: ২২০২ ঘণ্টা সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২৩
এজেডএস/এসআইএ