ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

এলজিইডি’র কর্মীর স্ত্রীর লাইসেন্সেই মিলল কোটি টাকার কাজ!

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২০, ২০২৩
এলজিইডি’র কর্মীর স্ত্রীর লাইসেন্সেই মিলল কোটি টাকার কাজ!

পিরোজপুর: স্ত্রীকে সামনে রেখে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) পিরোজপুর জেলা কর্যালয়ের উচ্চমান সহকারী মৃণাল কান্তি দাস নিজেই ঠিকাদারি ব্যবসা করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।  

সম্প্রতি আইআরআইডিপি প্রকল্পের প্রায় ১ কোটি ১৬ লাখ টাকার একটি রাস্তার কাজ পায় ‘রায় কনস্ট্রাকশন’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান।

ওই রায় কনস্ট্রাকশনের লাইসেন্সটির প্রোপ্রাইটর ঘাটলে দেখা যায়, এলজিইডি’র কর্মচারী মৃণাল কান্তি দাসের স্ত্রী রিনা রানী মণ্ডলের নাম এবং লাইসেন্সটির প্রোপ্রাইটরে যে মোবাইল ফোন নম্বরটি দেওয়া হয়েছে, সেটি মৃণাল কান্তির নিজেরই নম্বর। অভিযোগ রয়েছে, নামে স্ত্রীর হলেও এ লাইসেন্স আসলে মৃণালই দেখাশোনা করেন।  

শুধু তাই নয়, এ কাজের টেন্ডারের লটারি নিয়েও রয়েছে এলজিইডি’র পেশাদার ঠিকাদারদের বিভিন্ন অভিযোগ।

তেমনই একজন ঠিকাদার মো. আব্দুল আলিম। তিনি বলেন, গত ১২ সেপ্টেম্বর দুপুরে এলজিইডি’র জেলা প্রকৌশলীর কার্যালয়ে টেন্ডারের লটারি হয়। যা আমরা কেউ জানতাম না বা কোনো ঠিকাদার উপস্থিত ছিলেন না। একজন সহকারী প্রকৌশলী তার অফিসে কোনো ঠিকাদারের উপস্থিতি ছাড়াই লটারি করেছেন এবং সেই সময় উচ্চমান সহকারী মৃণাল কান্তি দাসও উপস্থিত ছিলেন। তাহলে তো এখানে পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে, টেন্ডারে অনিয়ম হয়েছে। পিরোজপুর এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী একজন দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তা। তার আমলেই যতসব দুর্নীতি ও অনিয়ম হচ্ছে। এলজিইডি’র কার্যালয় নিয়ে অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে।

আরেক ঠিকাদার মো. মুরাদ বলেন, এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুস সাত্তারের কাছে আমরা ঠিকাদাররা অসহায়। তিনি যত অনিয়মের মূল হোতা। এলজিইডিতে চাকরি করে এমন কর্মী পেছনে থেকে কীভাবে ঠিকাদারি লাইসেন্স করল এবং সেই লাইসেন্সে কোটি টাকার কাজ পেল? নিশ্চয় এখানে নির্বাহী প্রকৌশলীর হাত আছে। আমরা এ আইআরআইডিপি প্রকল্পের টেন্ডারটি বাতিল করে নতুনভাবে করার দাবি জানাচ্ছি এবং এ দুর্নীতিগ্রস্ত প্রকৌশলীর পদত্যাগ বা বদলি দাবি করছি।

এসব বিষয়ে এলজিইডি’র সহকারী প্রকৌশলী ফজলে রাব্বি জানান, টেন্ডারের লটারিতে কোনো অনিয়ম হয়নি। লটারির সময় আমরা ঠিকাদারদের ডেকেছিলাম, তারা কেউ আসেননি।

আর এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুস সাত্তার এ বিষয়ে বলেন, আমাদের প্রতিষ্ঠানের কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীর ঠিকাদারি লাইসেন্স আছে বলে আমার জানা নেই। যদি এমনটা হয়ে থাকে, তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখব।  

তিনি আরও বলেন, কার্যালয়ের উচ্চমান সহকারী মৃণাল কান্তি দাসের চাকরির বয়স প্রায় শেষ। তার এ বছরের ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত চাকরির মেয়াদ আছে। যদি আইআরআইডিপি প্রকল্পের কাজ পেয়ে থাকেন, সেটি আমরা তদন্ত করে টেন্ডার বালিত করব। ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত তিনি কোনো ঠিকাদারি কাজে যুক্ত হতে পারবেন না।

উচ্চমান সহকারী মৃণাল কান্তি দাস জানান, লাইসেন্সটি তার স্ত্রীর। এ পর্যন্ত ওই লাইসেন্সে একটি কাজ মিলেছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২০, ২০২৩
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।