ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

গ্রামের নাম ‘ভণ্ডগ্রাম’, বিড়ম্বনায় পরিবর্তন চান এলাকাবাসী 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩০৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২৩
গ্রামের নাম ‘ভণ্ডগ্রাম’, বিড়ম্বনায় পরিবর্তন চান এলাকাবাসী 

ঠাকুরগাঁও: গ্রামটির নাম ভণ্ডগ্রাম। এ নামেই রয়েছে বহুতল ভবন স্কুল, হাট-বাজার, কমিউনিটি ক্লিনিকসহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান।

 

নিজের গ্রামের নাম বললেই হাসিঠাট্টা, কটাক্ষ ও বিদ্রুপের শিকার হতে হয় গ্রামবাসীকে৷ এমন কটাক্ষ থেকে বাদ পড়ে না স্কুলের শিক্ষার্থীরাও৷

নাম নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়ে এখন গ্রামটির নাম পরিবর্তন করে নতুন নাম দেওয়ার দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী৷ 

ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার নন্দুয়ার ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের একটি গ্রাম ভণ্ডগ্রাম।  

নাম ভণ্ড হলেও গ্রামটিতে রয়েছে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা। প্রাথমিক, মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কমিউনিটি ক্লিনিক, মসজিদ-মন্দির রয়েছে সেখানে। দেখতেও বেশ মনোরম। সুজলা-সুফলা ফসলে মাঠ আর চারপাশ সবুজের সমারোহ। সকাল বেলা গবাদিপশু সহ কৃষক-কৃষাণীর মাঠে বেড়িয়ে যাওয়া, শিক্ষার্থীদের স্কুলে আসা- যাওয়া, তপ্ত দুপুরে বয়ে যাওয়া ছোট নদীতে কিশোরদের গোসল আর বিকেলে গ্রামে বসা হাটে চলে কেনা-বেচা। একটি আদর্শ গ্রামের যা বৈশিষ্ট্য তার সবকিছুর যেন উদাহরণ গ্রামটি৷ 

তবে গ্রামটির নাম নিয়ে যত কষ্ট গ্রামবাসীর। গ্রামের নাম বললেই ‘ভণ্ড’ বলে সম্বোধন করে বসেন অনেকে। এ গ্রামে কি ভণ্ডদের বসবাস বেশি - এমন কটাক্ষও শুনতে হয়।

গ্রামের এমন নাম প্রভাব ফেলছে পড়াশোনা, চাকরি, কৃষি, ব্যবসা-বাণিজ্যসহ সব ক্ষেত্রে।  

বিশেষ করে এ গ্রামের স্কুল, মাদরাসা থেকে পড়াশোনা করা শিক্ষার্থীদের প্রতিনিয়তই পড়তে হয় বিড়ম্বনায়। অন্য কোথাও ভর্তি হতে বা চাকরি ক্ষেত্রে নিজের পরিচয় দিলে উপহাস শুনতে হয় তাদের। নাম শুনলেই দৃষ্টিকটু চোখে সম্বোধন করেন সকলে। আর এর প্রভাব ফেলে উচ্চ শিক্ষা অর্জন করার ক্ষেত্রে।  

তাই স্কুল ও গ্রামের নাম পরিবর্তন করে নতুন নাম দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে স্কুলের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।

কী কারণে গ্রামের এমন নাম দেওয়া হলো তা জানেন না গ্রামবাসীর কেউ৷ অনেকের ধারণা ব্রিটিশ আমলের আগে থেকে এ নামেই চলে আসছে গ্রামটি।  

এখন অবশ্য ইতিহাস জানার আগ্রহ আর নেই, নামটি বদলে দিয়ে নতুন কোনো নাম হলেই এমন বিড়ম্বনা থেকে বাঁচেন তারা।

নামটি বদলে গেলে জন্মস্থানের পরিচয় দিতে সম্মানিত বোধ করবেন বলে জানান গ্রামবাসী।  

রাণীশংকৈল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহরিয়ার রহমান বলেন, ভণ্ডগ্রাম নামটিতে বিরূপ প্রতিক্রিয়া পড়ছে গ্রামটিতে৷ দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্রামের বিদ্যালয়গুলোর নাম পরিবর্তনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  

ঠাকুরগাঁওয়ের জেলা প্রশাসক মাহবুবুর রহমান বলেন, বিদ্যালয়গুলোর নাম পরিবর্তনে কাজ করছে জেলা প্রশাসন৷ যদিও এটি জটিল প্রক্রিয়া তবে গ্রামের নাম পরিবর্তনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবেন।  

বাংলাদেশ সময়: ১২৪৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২৩
টিআর/এসএএইচ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।