লালমনিরহাট: পানির স্রোতে তিস্তা নদীতে ভেসে আসা আরও দুই ভারতীয় নাগরিকের মরদেহ হস্তান্তর করেছে পুলিশ। এ নিয়ে মোট ৬টি মরদেহ হস্তান্তর করা হলো।
শনিবার (৭ অক্টোবর) মধ্যরাতে লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী জিরো পয়েন্ট ও নীলফামারীর ডোমার সীমান্তে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মাধ্যমে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে।
এ নিয়ে তিনদিনে মোট ছয়টি মরদেহ ভারতীয় পুলিশের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা হলো। গেল বন্যায় রংপুর বিভাগে তিস্তা নদী থেকে মোট ৬টি মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। যার মধ্যে একজন নারী বাকিরা ভারতীয় জওয়ান বলে দাবি করেছে ভারতীয় সেনাবাহিনী।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, প্রবল বর্ষণে ভারতের সিকিমে বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় বাংলাদেশের দিকে ধেয়ে আসে তিস্তা নদীর পানি। সেই বন্যায় সেনা সদস্যসহ ভারতে ব্যাপক প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। বাংলাদেশ অংশে তিস্তা অববাহিকায় বন্যা দেখা দেয়। বুধবার রাতে বন্যা হলেও বৃহস্পতিবার সকালে পানি কমে যায় তিস্তা নদীতে। কম পানিতে মাছ ধরতে নেমে হাতীবান্ধা উপজেলার সিন্দুর্না এলাকায় তিস্তা নদী থেকে অজ্ঞাত ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
একইভাবে নীলফামারীর ডোমার থানা পুলিশও তিস্তা নদী থেকে একটি মরদেহ উদ্ধার করে। উদ্ধারকৃত এসব মরদেহ ভারতীয় বলে শনাক্ত করলে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে ভারতীয় পুলিশের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করে বাংলাদেশ পুলিশ।
পাটগ্রামের বুড়িমারী জিরোপয়েন্ট সীমান্তে একটি মরদেহ হস্তান্তর করেছে পাটগ্রাম থানা পুলিশ। অপর দিকে নীলফামারীর ডোমারে অপর একটি মরদেহ হস্তান্তর করে ডোমার থানা পুলিশ।
বন্যার পরে তিনদিনে তিস্তা নদী থেকে ছয়টি মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। যার মধ্যে একজন নারী বাকি পাঁচজন পুরুষ। সব কটি মরদেহ আনুষ্ঠানিকতা শেষে কফিনে করে ভারতীয় পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে বাংলাদেশ পুলিশ।
রংপুর বিজিবির সেক্টর কমান্ডার কর্নেল ইয়াছির জাহান হোসেন বলেন, তিস্তা বিপর্যয়ের কারণে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ২৩ সদস্যের একটি কনভয় ভেসে যায়। একই সঙ্গে কিছু গোলাবারুদও ভেসে যায়। আমরা ছয়টি মরদেহ উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছি। এর মধ্যে নারীর মরদেহটি ছাড়া প্রাথমিকভাবে পাঁচটি মরদেহই সেনাবাহিনীর জোয়ান বলে ভারতীয় সেনাবাহিনী নিশ্চিত করেছে।
তিনি আরও বলেন, ‘বুড়িমারী স্থলবন্দর সীমান্তের ওপারে চ্যাংড়াবান্ধায় ভারতীয় সেনাবাহিনী একটি অস্থায়ী ক্যাম্প স্থাপন করেছে। হস্তান্তর হওয়া মরদেহগুলোর শারীরিক গঠন ও বয়স দেখে তারা তাদের সদস্য বলে দাবি করেছে। তারা তাদের ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে নিশ্চিত হয়ে আমাদের জানাবে।
কর্নেল ইয়াছির জাহান হোসেন বলেন, ‘আমরা স্থানীয় প্রশাসন ও জনসাধারণকে সতর্ক থাকতে বলেছি। কেননা, ভারতীয় সেনাবাহিনীর কিছু অস্ত্র গোলাবারুদ তিস্তায় বানের পানিতে ভেসে এসেছে। এগুলো কেউ যেন হাত না দেয়। দেখামাত্র স্থানীয় পুলিশ বা বিজিবিকে খবর দেওয়া হয়। কেউ হাত দিলে বিস্ফোরিত হয়ে ক্ষতি হতে পারে। বিষয়টি গণমাধ্যমসহ সবাইকে সজাগ থাকার অনুরোধ করা হয়েছে।
** তিস্তায় ভেসে এলো দুই ‘ভারতীয় নাগরিকের’ মরদেহ
** তিস্তায় ভেসে আসা দুই ভারতীয় নাগরিকের মরদেহ হস্তান্তর
** তিস্তায় ভেসে আসা আরও ২ ভারতীয় নাগরিকের মরদেহ হস্তান্তর
বাংলাদেশ সময়: ১১০৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৮, ২০২৩
আরএ