ঢাকা: তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বেগম জিয়াকে বিদেশে পাঠানোর বিষয়টি আদালতের এখতিয়ার। তাদের সেটি করতে হলে আদালতের শরণাপন্ন হতে হবে।
সোমবার (০৯ অক্টোবর) বিকেলে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বঙ্গবন্ধু বায়োপিকের নির্মাণ সমাপ্তি ও দেশব্যাপী প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির জন্য সিনেমা হল মালিক সমিতির পক্ষ থেকে মন্ত্রীকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন ও সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় নিয়োজিত মেডিকেল বোর্ড আজকে বলেছে, তার লিভার প্রতিস্থাপন করা দরকার, তার মৃত্যু ঝুঁকিও রয়েছে, এ অবস্থায় বিদেশে চিকিৎসা নিতে দেওয়া উচিৎ- এ বিষয় মতামত জানতে চাইল তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমি মহান স্রষ্টার কাছে প্রার্থনা করি, বেগম জিয়া যেন দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠেন বারংবারের মতো। অতীতেও যখন খালেদা জিয়া অসুস্থ হয়েছেন, তখনও বিএনপি বলেছিলো বেগম জিয়ার মৃত্যু ঝুঁকি রয়েছে, তাকে বাঁচানো যাবে না যদি বিদেশ নেওয়া না হয়। তখনও মেডিকেল টিম এ ধরনের ব্রিফ করেছিলো। কিন্তু আল্লাহর রহমতে বাংলাদেশের চিকিৎসকদের চিকিৎসা সেবায় তিনি প্রতিবারই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। আমি প্রার্থনা করি তিনি, দ্রুত সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যাবেন। তিনি যাতে সর্বোচ্চ স্বাস্থ্যসেবা পান সেজন্য সরকার আন্তরিক এবং যে ধরনের সহযোগিতা প্রয়োজন সেটি করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, দেশের সবচেয়ে ভালো একটি হাসপাতালে তার ইচ্ছা অনুযায়ী চিকিৎসা নিচ্ছেন। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যদি বাইরের ডাক্তার আনার প্রয়োজন পড়ে, তারা আনতে পারেন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক-নির্বাচন পর্যবেক্ষক টিম আজকে বিএনপির সঙ্গে বৈঠক করেছে, সেখানে বিএনপি বলেছে, বর্তমান সরকারের অধীন তারা নির্বাচনে অংশ নেবে না- এ বিষয়ে মতামত জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপি বারংবার এ কথা বলে আসছে। ২০১৮ সালের নির্বাচনে বলেছিলো, পরে আবার নির্বাচনে অংশগ্রহণও করেছিলো। আমি আশা করবো এবারও তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে।
তিনি বলেন, বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলো কি করলো না তার চেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে জনগণ অংশগ্রহণ করলো কি না। জনগণের অংশগ্রহণে কোনো কোনো রাজনৈতিক দল যদি অর্থাৎ বিএনপিসহ তাদের মিত্ররা যদি নির্বাচন বর্জনও করে সঠিক সময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। জনগণের অংশগ্রহণে একটি আন্তর্জাতিক মানের নির্বাচন বাংলাদেশে যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হবে।
বিএনপি বলেছে, আওয়ামী লীগ চায় না বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক এ বিষয়টি কিভাবে দেখছেন, জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমরা চাই তারা নির্বাচনে আসুক। আমরা না চাইলে বারংবার কেন আহ্বান জানাচ্ছি নির্বাচনে আসার জন্য। আসলে বিএনপি চায় নির্বাচনে জেতার নিশ্চয়তা। তাদের বক্তব্যটা এরকম- নাচতে না জানলে উঠান বাঁকা। তাদের বক্তব্য সে রকম যে নির্বাচনের পরিবেশ নাই, এজন্য আমি নাচবো না বা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবো না। তারা যদি এতো জনপ্রিয় হয় তাহলে নির্বাচনে আসুক।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, নির্বাচনের সময় কার্যত সরকারের কোনো কার্যক্রম থাকে না। কাউকে ট্রান্সফারের ক্ষমতা থাকে না। সরকার রুটিন কাজ ছাড়া কিছুই করতে পারে না। ক্ষমতা মূলত নির্বাচন কমিশনের কাছে ন্যাস্ত হয় নির্বাচনী আইন অনুযায়ী। এটি অত্যন্ত স্বচ্ছ নির্বাচনী আইন এবং আন্তর্জাতিকভাবে স্বকৃীত একটি ব্যবস্থা। এই ব্যবস্থার ওপর যদি আস্থা না থাকে তাহলে তাদের দেশ রাষ্ট্র জনগণ কোনো কিছুর ওপর আস্থা নেই। তাদের দেশের ওপর আস্থা নেই দেখেই ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছিলেন, পাকিস্তান আমল ভালো ছিলো। যারা এ কথা বলে তাদের দেশে রাজনীতি করার অধিকার থাকা উচিত নয় বলে মনে করেন বোদ্ধা ব্যক্তিরা। তবে আমরা মনে করি, তারা যেহেতু রাজনীতি করছে তারা নির্বাচনে আসুক, আমরা তাদের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূ্র্ণ একটি নির্বাচন চাই।
বাংলাদেশ সময়: ১৭০২ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৯, ২০২৩
জিসিজি/এমএম