নীলফামারী: নীলফামারীর সৈয়দপুরে বর্তমানে পাটের চেয়ে পাটকাঠির চাহিদাই বেশি। বাজারে পাট উঠলেও কাঙ্ক্ষিত দাম পাচ্ছেন না কৃষকরা।
এক মুঠো পাটকাঠি বিক্রি হচ্ছে ৮ থেকে ১০ টাকায়। ফেরি করে বিক্রি করছেন একশ্রেণীর বিক্রেতারা।
চলতি বছর নীলফামারীর সৈয়দপুরে পাটের বাম্পার ফলন হলেও জাগ দেওয়া নিয়ে সমস্যায় পড়েন উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নের কৃষকরা। অনেক কষ্টে তারা পাট ঘরে তোলেন। কিন্তু বাজারে দাম নেই সেই পাটের।
হাট বাজারে প্রতি মণ পাট বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৯০০ থেকে ২ হাজার ২০০ টাকা দরে। একই মানের পাট গত বছর বিক্রি হয়েছে ৩ হাজার থেকে ৩ হাজার ২০০ টাকা দরে। সেই হিসাবে এবারে পাট চাষিরা প্রতি মণে ১ হাজার টাকা কম পাচ্ছেন।
উপজেলার বোতলাগাড়ি ইউনিয়নের পাটচাষি ফজলার রহমান বলেন, পাটের আবাদ করে লোকসান গুণতে হচ্ছে। এছাড়া পাটের মৌসুমে পানি সমস্যা আমাদের কাছে অনেক বড় হয়ে দাঁড়ায়। তাই পাট আবাদ কমিয়ে দিয়েছি। যেটুকু আবাদ করছি, সেটি জ্বালানির জন্য পাটকাঠির দরকারে। চুলা ধরাতে গেলে এই পাটকাঠি খুবই প্রয়োজন।
পাটের দাম খুব একটা ভালো না পেলেও পাটকাঠির দাম দিয়ে ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন কৃষকরা। গ্রামে রান্নার কাজে ব্যবহৃত একসময়ের অন্যতম প্রধান জ্বালানি ছিল পাটখড়ি। জ্বালানি ছাড়াও গৃহস্থালির নানা কাজে এটি ব্যবহার করত সাধারণ মানুষ। গ্রামাঞ্চলে ঘরের বেড়া, চালা নির্মাণে পাটখড়ি ব্যবহার হয়। মাটির চুলায় রান্নায় জ্বালানি খড়ির সঙ্গে এই পাটখড়ি থাকে। রান্নার জ্বালানি হিসেবে গ্রামের পাশাপাশি শহরের রয়েছে পাটখড়ির ব্যাপক চাহিদা।
সৈয়দপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ধীমান ভূষণ জানান, আগে শুধু পাটকাঠি রান্নার কাজে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হতো। কিন্তু এখন পাটকাঠি দিয়ে ঘরও নির্মাণ করা হচ্ছে। এছাড়া এগুলো দিয়ে পার্টিক্যাল বোর্ড ও পাটকাঠি পুড়িয়ে এর ছাই দিয়ে কম্পিউটারের প্রিন্টিং মেশিনের কালি হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। চারকলগুলোতে ব্যাপক হারে ব্যবহার হচ্ছে পাটখড়ি। অন্যদিকে পাটখড়ি পুড়িয়ে তার ছাই ব্যবহার হচ্ছে ফসলের ক্ষেতে। ফলে চাহিদাও বেড়েছে পাটকাঠির।
বাংলাদেশ সময়: ১১২৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ১০, ২০২৩
এফআর