ঢাকা: বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অধিকারের ক্ষেত্রে ইতিবাচক অগ্রগতি হলেও শ্রম ও মানবাধিকার উভয় ক্ষেত্রেই চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে বলে মনে করে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। একই সঙ্গে সংস্থাটি বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতে নিরাপত্তার মান নিয়ে অগ্রগতির প্রশংসা করেছে।
বুধবার (১৫ নভেম্বর) ইইউ প্রতিনিধিদলটি বাংলাদেশ সফর নিয়ে দেওয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় বিভাগের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক পাওলা প্যাম্পালোনির নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধিদলের ৫ দিনের বাংলাদেশ সফর নিয়ে এই বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে।
আর্থ-সামাজিক অধিকারের ক্ষেত্রে ইতিবাচক অগ্রগতি হলেও শ্রম ও মানবাধিকার উভয় ক্ষেত্রেই চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে। মানবাধিকারের ক্ষেত্রে ইবিএ’র মূল সনদগুলো মেনে চলার ক্ষেত্রে আরও উদ্যোগের প্রয়োজন। বিশেষ করে নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার বিষয়ক আন্তর্জাতিক চুক্তি (আইসিসিপিআর) বাস্তবায়ন, মতপ্রকাশ, সমাবেশ এবং সংগঠিত হওয়ার স্বাধীনতার সুরক্ষা এবং নাগরিক সমাজের দায়িত্ব পালনের সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টি করা। এ ক্ষেত্রে ইইউ বাংলাদেশকে ২০২৩ সালের ইউপিআরের সুপারিশ গ্রহণ করে তা বাস্তবায়নে উৎসাহিত করেছে।
শ্রম অধিকার চর্চার বিষয়ে ইইউ প্রতিনিধিদলটি বাংলাদেশকে নীতি এবং তা বাস্তবায়নে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) মানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ কিনা, তা নিশ্চিত করার জন্য প্রচেষ্টা জোরদারের সুপারিশ করেছে। ইইউর শ্রম বিষয়ক পর্যালোচনায় যুক্ত প্রতিনিধিদলটি শ্রম খাতে জাতীয় কর্মপরিকল্পনা (এনএপি) পুরোপুরি বাস্তবায়নের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছে। বিশেষ করে ত্রিপক্ষীয় পরামর্শের মাধ্যমে সংগঠিত হওয়ার স্বাধীনতা, সম্মিলিত দর কষাকষির এবং শ্রমিক ইউনিয়নগুলির একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং প্রতিনিধিত্বমূলক অংশগ্রহণের নিশ্চয়তা দেওয়ার বিষয়ে উল্লেখ করেছে।
বাংলাদেশ শ্রম আইনের সবশেষ সংশোধনীতে আংশিকভাবে ইইউ এবং আইএলওর উদ্বেগ দূর করায় প্রতিনিধিদল উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। এই লক্ষ্যে মিশন এসব উদ্বেগ দূর করার বিষয়ে দ্রুত বাংলাদেশ শ্রম আইনের আরও সংশোধনীর বিষয়ে সরকারের প্রতিশ্রুতিকে স্বাগত জানায়। জাতীয় কর্মপরিকল্পনার অধীনে সম্মত সময়সূচিতে লক্ষ্য অর্জনে বিলম্ব হওয়ায় দ্রুত প্রয়োজনীয় সংস্কারের তাগিদ দিয়েছে।
পাওলা প্যাম্পালোনি বলেছেন, বাংলাদেশ সফর ইবিএ’র আওতায় মানবাধিকার এবং শ্রম অধিকার সুরক্ষার গুরুত্বের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশীজনদের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার একটি মূল্যবান সুযোগ দিয়েছে। প্রয়োজনীয় সংস্কার ত্বরান্বিত করার জন্য আমরা বাংলাদেশ সরকার, ব্যবসায়ী, নাগরিক সমাজ এবং ট্রেড ইউনিয়নের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ চালিয়ে যাব।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের শ্রম খাতের অগ্রগতি দেখতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন প্রতিনিধিদল গত ১২ নভেম্বর ৫ দিনের সফরে ঢাকায় আসেন। প্রতিনিধিদল ঢাকা সফরকালে শ্রম আইন সংশোধন পরবর্তী পরিস্থিতি, শিশুশ্রম বিলোপ ও শ্রমিকবিরোধী সব ধরনের সহিংসতা নিরসনসহ নানা বিষয়ে আলোচনা করছে।
বাংলাদেশ সময়: ২১১৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০২৩
টিআর/এমজেএফ