ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৮ ফাল্গুন ১৪৩১, ০৪ মার্চ ২০২৫, ০৩ রমজান ১৪৪৬

জাতীয়

ন্যায়বিচার চান আব্দুল্লাহর বাবা, ক্লোজড এসআই রিয়াদ 

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৩৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৩, ২০২৩
ন্যায়বিচার চান আব্দুল্লাহর বাবা, ক্লোজড এসআই রিয়াদ  উপ-পরিদর্শক (এসআই) রেদওয়ান হোসেন রিয়াদ

বরিশাল: দাবিকৃত টাকা না পেয়ে ছেলে আব্দুল্লাহ বিন লাদেনকে মিথ্যা অভিযোগের মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার অভিযোগ এনে কাউনিয়া থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) রেদওয়ান হোসেন রিয়াদ ও তার সঙ্গে থাকা সদস্যদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দবি জানিয়েছেন কৃষক বাবা মোসলেম জমাদ্দার।

পাশাপাশি তিনি পুরো ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করে মামলা থেকে ‘নিরপরাধ’ ছেলের মুক্তি ও ন্যায়বিচারের দাবি জানিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার বরাবর এ সংক্রান্ত একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন তিনি। মোসলেম জমাদ্দার বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়নের চরফেনুয়া এলাকার বাসিন্দা।  

তার ছেলে আব্দুল্লাহ আলেকান্দা সরকারি কলেজের এইচএসসি প্রথম বর্ষের ছাত্র। গত ২১ নভেম্বর তিন পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধারের অভিযোগে এসআই রিয়াদের দায়ের করা মামলায় তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। অবশ্য জামিন আবেদনের পর বৃহস্পতিবারই মুক্তি দেওয়া হয়েছে তাকে।

মোসলেম জমাদ্দার জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরে তিনি ও তার ভাতিজাসহ তিনজন বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে দেখা করেন। এসময় তিনি ২১ নভেম্বরের পুরো ঘটনা তাকে খুলে বলেন এবং বিচার দাবি করেন। পরে তিনি এসআই রিয়াদ ও তার সঙ্গে থাকা ব্যক্তির বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ পুলিশ কমিশনারের হাতে তুলে দেন।  

তিনি বলেন, পুলিশ কমিশনার স্যারের কথায় আমি আশ্বস্ত যে, আমার ও আমার ছেলের সঙ্গে ঘটা অন্যায় ঘটনার ন্যায়বিচার পাব। আর ছেলে নিরাপরাধ সেটারও প্রমাণ ঘটবে।

এদিকে কৃষক মোসলেম জমাদ্দারের লিখিত অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. সাইফুল ইসলাম। তিনি বলেন, পুরো ঘটনাটি এরইমধ্যে উপ-পুলিশ কমিশনারকে (উত্তর) খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে। তিনি কাজ করছেন। আর প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের ওই উপ-পরিদর্শক (এসআই রিয়াদ) যে নিজ থানা এলাকার বাইরে গিয়েছিলেন, সে বিষয়টি উঠে এসেছে। তাই তাকে এরইমধ্যে ক্লোজড করে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে।

জমি সংক্রান্ত এক মামলায় আদালতে হাজিরা দিতে গত ২১ নভেম্বর সকালে উপবন নামক লঞ্চযোগে শ্রীপুর থেকে বরিশালের লঞ্চঘাটে আসেন মোসলেম ও তার ছেলে আব্দুল্লাহ। কোতোয়ালি মডেল থানাধীন লঞ্চঘাটের গেট থেকে বের হওয়ার সময় আইনের লোক পরিচয় দিয়ে এসআই রেদওয়ান হোসেন রিয়াদ ও তার সঙ্গে থাকা আরেকজন বাবা-ছেলেকে তল্লাশি করে।  

মোসলেমের অভিযোগ, এরপর মাদক উদ্ধারের নামে দিনভর তাদের সঙ্গে নিয়ে নগরের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে এক লাখ টাকা দাবি করেন রিয়াদ। ওই টাকা নিতে তিনি বিকাশ নম্বর দেন এবং বাবাকে ছেড়ে দিয়ে ছেলেকে কাউনিয়া থানায় আটকে রাখেন। পরে বিষয়টি স্বজনদের মাধ্যমে গণমাধ্যম ও পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানতে পারেন।  

আব্দুল্লাহর স্বজনদের দাবি, রিয়াদ কথিত তিন পিস ইয়াবা উদ্ধারের রহস্যময় কাহিনী জুড়ে দিয়ে কাউনিয়া থানায় আটক থাকা আব্দুল্লাহকে কোতোয়ালি থানায় হস্তান্তর করেন এবং বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন।  

এদিকে দায়েরকৃত মামলায় আদালত আব্দুল্লাহকে প্রথমে কারাগারে পাঠান। তবে জামিন আবেদনের মাধ্যমে একদিন পরই কারাগার থেকে মুক্তি মিলেছে আব্দুল্লাহর। তার বাবা বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায়ই বিষয়টি বাংলানিউজকে নিশ্চিত করেছেন।

আব্দুল্লাহর আইনজীবী মুনসুর আহম্মেদ জানান, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক আমাদের বক্তব্যে সন্তুষ্ট হয়ে আব্দুল্লাহর জামিন দিয়েছেন। আলোচিত এ ঘটনার বিষয়টি আদালতের নজরে আনার চেষ্টা চলছে।

এ সংক্রান্ত খবর
বাবা-ছেলেকে ইয়াবা দি‌য়ে ফাঁসিয়ে টাকা দাবির অ‌ভি‌যোগ এসআইয়ের বিরু‌দ্ধে
* কলেজছাত্র আব্দুল্লাহকে কোতোয়ালি থানায় হস্তান্তর, মাদক মামলা দায়ের

বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৩, ২০২৩
এমএস/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।