ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

টানেলে নয়া দিগন্ত, মেট্রোরেল-এক্সপ্রেসওয়ে পুরোদমে চালুর অপেক্ষা

নিশাত বিজয়, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৩, ২০২৩
টানেলে নয়া দিগন্ত, মেট্রোরেল-এক্সপ্রেসওয়ে পুরোদমে চালুর অপেক্ষা

ঢাকা: কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম টানেল ‘বঙ্গবন্ধু টানেল’র উদ্বোধনের মধ্যে দিয়ে ইতিহাসের নতুন পাতায় নাম লিখিয়েছে বাংলাদেশ। শুধু বঙ্গবন্ধু টানেলই নয়, ২০২৩ সালে দেশের প্রথম উড়াল এক্সপ্রেসওয়ের উদ্বোধনও হয়েছে।

একইসাথে মেগাপ্রকল্প মেট্রোরেলের আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত দ্বিতীয় অংশের উদ্বোধনও হয়ে গেছে। সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ করতে যুক্ত হয়েছে আরও দেড়শ সেতু।

চলতি বছর ১৯ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একদিনেই এসব সেতু উদ্বোধন করেন; যা প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সড়ক যোগাযোগে উন্নতি ঘটাবে। সেতুগুলোর মোট দৈর্ঘ্য ৯ হাজার ৪৫৪ মিটার। নির্মাণে মোট ব্যয় তিন হাজার ২৮৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা। সবচেয়ে বড় সেতুটি হচ্ছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নির্মিত ৫৫৮ দশমিক ২১ মিটার দীর্ঘ তিতাস সেতু।

ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের প্রথম অংশের উদ্বোধন হলেও চলছে দ্বিতীয় অংশের কাজ। তবে কর্তৃপক্ষ এক্সপ্রেসওয়েটি পুরোদমে চালু করতে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ছে। নগর বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও কাজ শেষ হতে বিলম্ব হতে পারে।

প্রকল্পের এক সূত্র জানিয়েছে, মালিবাগ থেকে খিলগাঁও রেলগেট পর্যন্ত অংশের অবকাঠামো নির্মাণের কাজ এখনও শুরুই হয়নি। ৮ দশমিক ২৩ কিলোমিটার মূল সড়ক ও ১৬ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক, সর্বমোট ২৪ দশমিক ২৩ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ করতে হবে যদি নির্ধারিত সময়ে কর্তৃপক্ষ কাজ শেষ করতে চায়।

এ অংশের কয়েকটি পিলার অতীশ দীপঙ্কর রোডে স্থাপন করতে চাইলেও সিটি করপোরেশনের আপত্তি রয়েছে। সেটি নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত কাজ শুরু করতে পারছে না এক্সপ্রেসওয়ে কর্তৃপক্ষ।

এ বিষয়ে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের প্রকল্প পরিচালক এএইচএমএস আকতার জানিয়েছেন, প্রকল্পের নির্মাণকাজের ৭৫ শতাংশ অগ্রগতি হয়েছে। গত তিন মাসে প্রকল্পের ৫ শতাংশ অগ্রগতি হয়েছে।

মেগাপ্রকল্প মেট্রোরেলের আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত দ্বিতীয় অংশ উদ্বোধন করা হলেও বাকি আছে অনেক কাজ। এরমধ্যে দ্বিতীয় অংশের ৮টি স্টেশনের কাজ পুরোপুরি শেষ হয়নি, চালু হতে বাকি- শাহবাগ ও কারওয়ান বাজার স্টেশন। যদিও ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন সিদ্দিক চলতি মাসে এক সংবাদ সম্মেলনে ২০২৪ সালের মার্চের মধ্যে মেট্রোরেল পুরোপুরি চালু হবে বলে জানিয়েছেন। এ সময়ের মধ্যে সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ট্রেন চলবে বলেও তিনি জানান।

বর্তমানে উত্তরা-আগারগাঁও অংশে মেট্রো চলছে সকাল সাড়ে ৭টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত। কিন্তু আগারগাঁও-মতিঝিল অংশে চলছে সকাল সাড়ে ৭টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত।

মেগা প্রকল্পের আরেকটি অংশ পাতাল রেল। চলতি বছরই দেশের প্রথম পাতাল মেট্রোলাইন নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত ২ ফেব্রুয়ারি নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের পিতলগঞ্জের ডিপো এলাকা থেকে এ নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন তিনি।  

এটি এমআরটি লাইন-১ নামে পরিচিত। প্রকল্পটি বিমানবন্দর থেকে কুড়িল, বাড্ডা, রামপুরা হয়ে কমলাপুর পর্যন্ত পুরো অংশ নির্মিত হবে মাটির নিচ দিয়ে। তবে পিতলগঞ্জ (পূর্বাচল) থেকে কুড়িল মেট্রোরেল রুটের সঙ্গে আলাদা যে অংশটি যুক্ত হবে সেটি হচ্ছে এলিভেটেড মেট্রোরেল। এ পথে দৈনিক আট লাখ যাত্রী চলাচল করতে পারবে। দেশের মেট্রোরেলের প্রথম পাতালযাত্রা নির্মাণে ব্যয় হবে ৫২ হাজার কোটি টাকা। জাপানি ঋণ ৩৯ হাজার ৪৫০ কোটি টাকা। আর বাকি অর্থ সরকারি তহবিল থেকে মেটানো হবে। এই প্রকল্প বাস্তবায়নের মেয়াদ ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত।

গত ৪ নভেম্বর হেমায়েতপুর-ভাটারা রুটে এমআরটি লাইন-৫ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এমআরটি লাইন-৫ নির্মিত হবে হেমায়েতপুর থেকে গাবতলী, মিরপুর-১০, গুলশান হয়ে ভাটারা পর্যন্ত। ১৩ দশমিক ৫ কিলোমিটার ভূগর্ভস্থ অংশ ও ৬ দশমিক ৫ কিলোমিটার এলিভেটেড অংশ নিয়ে ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ এ প্রকল্পে নির্মাণ করা হবে ১৪টি স্টেশন। এর মধ্যে নয়টি হবে পাতাল স্টেশন। ৪১ হাজার ২৩৯ কোটি টাকার এ প্রকল্পের কাজ শেষ হবে ২০২৮ সালে। এ রুটের মেট্রোরেলে প্রতিদিন প্রায় সাড়ে ১২ লাখ মানুষ যাতায়াত করতে পারবে বলে আশা করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫২৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৩, ২০২৩
এনবি/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।