ঢাকা, মঙ্গলবার, ৮ আশ্বিন ১৪৩২, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০০ রবিউস সানি ১৪৪৭

জাতীয়

‘আইজ অইতে মোনে অয় শীতের কষ্টডা গ্যাছে’

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১:৫৭, জানুয়ারি ২২, ২০২৪
‘আইজ অইতে মোনে অয় শীতের কষ্টডা গ্যাছে’

পটুয়াখালী: ‘আমার বয়স বাবা আটাত্তুর বছর। প্রেত্যেক বচ্ছর শীতে চিরা খেতা (কাঁথা) গায়ে দেই, কিন্তু শীত মানে না।

মাঘের শীত, বাঘের গায়ও লাগে। আর আমি তো বুড়া মানুষ! আমারে তো কাপাইয়া দেয় শীতে। রাইতে শীতে বড় কষ্ট করি। ঘরে একটা বিলই (বিড়াল) আছে, ওইডারে লগে (সাথে) লইয়া ঘুমাই শরীলডা গরম রাহার লইগ্যা। আইজ অইতে মোনে অয় শীতের কষ্টডা আমার গ্যাছে। এই জীবনে একটা ল্যাপ কোম্বল আমারে কেউ দেয় নাই। সব সময় মনে অইতে আমি মানুষই না। এই লইগ্যা কেউ আমারে একটা শীতের কোম্বল দেয় নাই। অ্যাহন মোনে অইছে আমি মানুষ, আমার মতো মানুষের খোঁজ লওয়ার লইগ্যা ভালো মানুষও আছে। যেরা আমারে খুশি করছে, আল্লায় হেগোরে সব সময় খুশি রাহুক। ’

এসব কথা বলতে বলতে চোখ বেয়ে পানি ঝড়ছিল প্রতিবন্ধী আব্দুর রহিমের। তবে সেই অশ্রু ছিল আনন্দের। পটুয়াখালী লঞ্চঘাট এলাকার বাসিন্দা তিনি। বসুন্ধরা শুভসংঘের একটি কম্বল উপহার পেয়ে এভাবে আনন্দ প্রকাশ করেন তিনি।

১০৪ বছর বয়সী কালিপদ সাহা বলেন, ‘বাবা আমার অনেক উপকার হয়েছে। এবার শীতে বড় কষ্টে আছিলাম। যেরা বোম্বল দেছে গরিবের পাশে এভাবেই তারা সব সময় থাকুক। ’

সোমবার (২২ জানুয়ারি) বসুন্ধরা শুভসংঘের কম্বল উপহার পেয়ে এভাবেই নানা অভিমত ব্যক্ত করেন দুস্থ শীতার্ত মানুষরা। এ দিন সকালে পটুয়াখালী সদর উপজেলার হাজী আক্কেল আলী হাওলাদার কলেজ মাঠে নিম্ন আয়ের ৫০০ মানুষের মাঝে কম্বল বিতরণ করে বসুন্ধরা শুভসংঘ।

এ সময় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পটুয়াখালী জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও শুভসংঘ পটুয়াখালী শাখার উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট মো. হাফিজুর রহমান, পুলিশ সুপার মো. সাইদুল ইসলাম, শুভসংঘের উপদেষ্টা পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজের প্রফেসর ডা. ওহিদুজ্জামান শামীম।



এছাড়াও শুভসংঘ পটুয়াখালী শাখার সভাপতি রাশেদুল রাশেদ, সহ-সভাপতি শ ম দেলোয়ার হোসেন দিলীপ ও কামরুন্নাহার জেসমিন, সাধারণ সম্পাদক মো. জাকির হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লিটন চন্দ্র দাস ও রুদ্র মুহম্মদ জাহিদুল, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আমিনুল ইসলাম, পটুয়াখালী সরকারি মহিলা কলেজ শাখার বসুন্ধরা শুভসংঘের সভাপতি আফরোজা মনি এবং সাধারণ সম্পাদক ইসরাত জাহান এপি ও সংগঠনের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

পটুয়াখালীর পুলিশ সুপার মো. সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘বসুন্ধরা শুভসংঘ একটি মানবিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে ইতোমধ্যে সারা দেশে তাদের পরিচিতি গড়তে সক্ষম হয়েছে। পিছিয়ে পড়া মানুষের পাশে যেভাবে বসুন্ধরা শুভসংঘ দাঁড়িয়েছে, তাতে সমাজ পরির্বতনে সংগঠনটি একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে অচিরেই। শুধু পটুয়াখালী নয়, দেশব্যাপী একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়ে বসুন্ধরা শুভসংঘ এগিয়ে যাচ্ছে। আমি সংগঠনটিসহ বসুন্ধরা গ্রুপের সাফল্য কামনা করছি। ’

জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও বসুন্ধরা শুভসংঘের উপদেষ্টা মো. হাফিজুর রহমান বলেন, ‘প্রতিষ্ঠানটি অসহায় মানুষের জন্য নিবেদিত হয়ে কাজ করছে। এ সংগঠনের উপদেষ্টা হিসেবে আমি গর্বিত। ’

বাংলাদেশ সময়: ২১৫৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২২, ২০২৪
এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।