ঢাকা: সিন্ডিকেট করে ডিমের দাম বাড়ানোর প্রমাণ পাওয়ায় দুই কোম্পানিকে সাড়ে তিন কোটি টাকা জরিমানা করেছে বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন (বিসিসি)। এর মধ্যে ডায়মন্ড এগ লিমিটেডকে আড়াই কোটি টাকা এবং সিপি বাংলাদেশ কোম্পানি লিমিটেডকে এক কোটি টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
বুধবার (২৪ জানুয়ারি) এ মামলার রায় প্রকাশ করা হয়। এর আগে সোমবার (২২ জানুয়ারি) এ বিষয়ে চূড়ান্ত আদেশ দেয় প্রতিযোগিতা কমিশন।
জানা গেছে, বাজারে কারসাজির মাধ্যমে ডিমের দাম বাড়ানোর অভিযোগে ২০২২ সালে দেশের ১০টি পোলট্রি ফার্ম ও পোলট্রি সংশ্লিষ্ট সংগঠনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছিল। এর মধ্যে মামলা নম্বর ৩৯/২০২২ (ডায়মন্ড এগ লিমিটেডের বিরুদ্ধে) এবং মামলা নম্বর ৪৪/২০২২ (সিপি বাংলাদেশ কোম্পানি লিমিটেডের বিরুদ্ধে) এর চূড়ান্ত আদেশ এলো। প্রতিষ্ঠান দুইটির বিরুদ্ধে করা পৃথক দুই মামলার নিষ্পত্তি করে এই জরিমানা করা হয়।
এ বিষয়ে কমিশনের সদস্য হাফিজুর রহমান বলেন, কোম্পানি দুইটি পারস্পরিক যোগসাজশের মাধ্যমে ডিমের দাম বাড়িয়েছে বলে প্রমাণিত হয়েছে। এ কারণে প্রতিযোগিতা আইনের ১৫ ধারায় এই দুই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তবে তারা এ রায়ের বিষয়ে রিভিউ বা আপিল আবেদন করতে পারবে।
এর আগে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে পণ্যের দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়িয়ে বাজার ‘অস্থিতিশীল’ করার অভিযোগে নিত্যপণ্য প্রস্তুতকারক ও সরবরাহকারী ৪৪টি কোম্পানির বিরুদ্ধে মামলা করেছিল বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন। চাল, তেল, সাবান, আটা, ডিম ও মুরগি উৎপাদন ও সরবরাহ খাতের এসব কোম্পানির বিরুদ্ধে দাম বাড়ানোসহ আরও কিছু অভিযোগের প্রমাণ পাওয়ায় তখন কমিশনেই পৃথকভাবে এসব মামলা করা হয়।
এদিকে নিত্যপণ্যের বাজারে অস্থিরতা নিয়ন্ত্রণে সরকারের বিভিন্ন সংস্থা অভিযানে নামে। এর মধ্যে বিভিন্ন খাতে উৎপাদন, পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে অভিযানকালে বেশ কিছু অনিয়ম চিহ্নিত করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। বিভিন্ন কোম্পানির প্রতিনিধিদের ডেকে বৈঠক করে সংস্থাটি। নিত্যপণ্যের মূল্য অযৌক্তিকভাবে বাড়াতে ভোক্তা অধিকারের চিহ্নিত অনিয়ম এবং বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে আসা দাম নিয়ে কারসাজির তথ্য যাচাই-বাছাই করা হয়। এসব কোম্পানির বিরুদ্ধে নিয়ম ভাঙার তথ্য পেয়ে প্রতিযোগিতা কমিশন মামলায় যায়। বেশি মামলা করা হয়েছিল চাল ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত কোম্পানির বিরুদ্ধে। এ খাতের ১১টি বড় প্রতিষ্ঠান ও আটটি করপোরেট প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
এছাড়া আটা-ময়দা উৎপাদন ও সরবরাহের সঙ্গে যুক্ত আটটি, ডিম উৎপাদনের সঙ্গে যুক্ত ছয়টি, ব্রয়লার মুরগি উৎপাদন ও বাজারজাতকরণের সঙ্গে যুক্ত ছয়টি, সাবান ও ডিটারজেন্ট উৎপাদন ও বিপণনে যুক্ত ছয়টি কম্পানির বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। গতকালের দুইটি রায়ের আগে পোলট্রি খাতের আরও দুইটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত রায় দেয় কমিশন। বাকিগুলোর তদন্ত এখনও চলছে।
প্রতিযোগিতা আইন অনুযায়ী, উৎপাদন, সরবরাহ, খুচরা ও ভোক্তা যেকোনো পর্যায় থেকে কমিশনে মামলা করার সুযোগ আছে। আবার কমিশন নিজেও মামলা করতে পারে। এসব কোম্পানির বিরুদ্ধে কমিশন নিজেই মামলা করেছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪০১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৫, ২০২৪
জিসিজি/এফআর