ফরিদপুর: জেলার সালথায় টাকার বিনিময় নির্বাচন কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিদের সহযোগিতায় পাঁচজন রোহিঙ্গা জাতীয় পরিচয়পত্র নেওয়ার জন্য আবেদন করার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় তাপস কুমার হোড় নামে এক ইউপি সদস্যকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
তাপস উপজেলার বল্লভদী ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য। তিনি ফুলবাড়িয়া গ্রামের মৃত নির্মল কান্তি হোড়ের ছেলে। তবে এই ঘটনার নেপথ্যে থাকা নির্বাচন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) সালথা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আনিচুর রহমান বালী এ কথা জানান।
তিনি বলেন, সালথা নির্বাচন অফিসে ভোটার হওয়ার জন্য রোহিঙ্গাদের আবেদনের ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্তে করে দেখা যায়, রোহিঙ্গাদের আবেদনপত্রে সনাক্তকারী হিসেবে সই করেন ইউপি সদস্য তাপস কুমার হোড়। পরে তাকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
রোহিঙ্গাদের ভোটার হওয়ার আবেদনে সহযোগিতায় থাকা অন্যদের বিষয় ইউএনও বলেন, এ ঘটনায় অন্য কারও জড়িত থাকার প্রমাণ প্রাথমিকভাবে পাওয়া যায়নি। তবে, প্রমাণ পেলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জানা যায়, ২০২৩ সালের গত ১০ সেপ্টেম্বর অভিভাবকের ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র এবং বাংলাদেশি জন্মসনদ ও নাগরিক সনদ দিয়ে ভোটার হওয়ার জন্য উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কাছে আবেদন করেন উপজেলার বল্লভদী ইউনিয়নের ফুলবাড়ীয়া গ্রামের খোরশেদ আলীর মেয়ে দিলদারা বেগম, মনিরুল ইসলামের ছেলে নূর মোস্তফা, খোকন মিয়ার ছেলে হাফিজুর রহমান, কালা মিয়ার মেয়ে বুশরা বেগম, আব্দুল মানিকের ছেলে নূর বাশার। তবে এসব নামে ফুলবাড়িয়া গ্রামে কারও হদিস পাওয়া যায়নি।
আবেদনে তারা যে জন্মসনদগুলো জমা দেন, সেগুলো সব কিশোরগঞ্জের নিকলি উপজেলার ছাতিরচর ইউনিয়ন পরিষদ থেকে করা। তাদের নামে গত ১০ সেপ্টেম্বর বল্লভদী ইউনিয়ন থেকে নাগরিক সনদ দেওয়া হয়। এতে সই করেন ইউপি চেয়ারম্যান খন্দকার সাইফুজ্জামান শাহীন। জাতীয় পরিচয়পত্রের আবেদনপত্রে সনাক্তকারী হিসেবে সই করেন বল্লভদী ইউপির আট নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য তাপস কুমার হোড়।
অভিযোগ রয়েছে, টাকার বিনিময়ে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আব্দুর রশিদ, ইউপি চেয়ারম্যান খন্দকার সাইফুজ্জামান শাহীন, ইউপি সদস্য তাপস কুমার হোড় ও করিম টেলিকমের সত্ত্বাধিকারী করিম বাওয়ালীর সহায়তায় পাঁচ রোহিঙ্গা জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্য আবেদন করেন। কিন্তু চুক্তি অনুযায়ী রোহিঙ্গারা টাকা না দেওয়ায় ঘটনাটি ফাঁস হয়ে যায়। পরে ইউএনওর নির্দেশে বাধ্য হয়ে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ওই পাঁচটি আবেদন বাতিল করে দেন।
বাংলাদেশ সময়: ২১২৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৫, ২০২৪
এসআইএ