নীলফামারী: কী কারণে স্ত্রী ও দুই সন্তানকে হত্যা করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন আশিকুল হক মোল্লা। এর রহস্য এখনও উদঘাটন করতে পারছে না পুলিশ।
শুক্রবার সকালে (২ ফেব্রুয়ারি) সদর উপজেলার চড়াইখোলা ইউনিয়নের দারোয়ানি এলাকায় এ হত্যার ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। বিষয়টি রহস্যজনক হওয়ায় রংপুর সিআইডি ক্রাইম সিনকে খবর দেওয়া হয়। তারাও আলামত সংগ্রহ করেছে। এ ঘটনায় রাতেই থানায় মামলা হয়েছে।
নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তানভীরুল ইসলাম বলেন, মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নীলফামারী জেনারেল হাসপাতাল মর্গে নেওয়া হয়েছে। শুক্রবার রাতে নিহত গৃহবধূর ভাই আসাদুজ্জামান নূর আসাদ বাদী হয়ে স্ত্রী ও দুই সন্তানকে হত্যা ও আত্মহত্যার চেষ্টার অভিযোগে মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশি পাহারায় গুরুতর জখম আশিকুল হক মোল্লা রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
গুরুতর জখম আশিকুল হক মোল্লা সদর উপজেলার চড়াইখোলা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মরহুম আব্দুর রউফ মোল্লার ছেলে। তিনি কাঠ ও আসবাবের ব্যবসা করেন। স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে প্রথমে নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালে নেন। সেখানে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। মারা যাওয়া তিনজন হলেন- আশিকুলের স্ত্রী তহুরা বেগম (৩৫), তাদের বড় মেয়ে আয়েশা আক্তার তানিয়া (১১) ও ছোট মেয়ে জারিন আক্তার (৬)।
এলাকাবাসী জানান, ব্যবসার কারণে ব্যাংক ও লোকজনের কাছে ঋণী ছিলেন এটি সত্য। কিন্তু কী কারণে এত বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে গেল তা বুঝে উঠতে পারছি না। তিনি লোক হিসেবেও ভালো ছিলেন বলে জানান এলাকার মানুষ। আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীদের কেউই ঘটনা সম্পর্কে সুস্পষ্ট কোনো ধারণা দিতে পারছেন না। এছাড়াও একই বিছানায় মরদেহ তিনটি পাশাপাশি রাখায় পুরো হত্যা প্রক্রিয়া নিয়েও তৈরি হয়েছে নানা জল্পনা-কল্পনা।
আশিকুলের ছোট বোন সাথী আক্তার (২৭) বলেন, ভাই দীর্ঘ ছয় মাস ধরে কিডনিজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ। শ্বশুড়বাড়ি থেকে আমি প্রতি সপ্তাহে এসে ভাইয়ের খোঁজখবর নিয়ে যেতাম। শুক্রবার সকালে মোবাইল ফোনে খবর পাই- ভাবি ও আমার দুই ভাতিজি আর বেঁচে নেই, ভাইকে গলাকাটা অবস্থায় রংপুরে নেওয়া হয়েছে। এরপর এখানে এসে লোকজনের কাছে শুনি, ভাবি ও তার দুই মেয়েকে হত্যা করে গলাকেটে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন ভাই। কী কারণে এবং কেন এমন ঘটনা ঘটাল তার কোনো কূল-কিনারা খুঁজে পাচ্ছি না।
এ ব্যাপারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) সাইফুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে পরিবারের সদস্যদের শ্বাসরোধে হত্যার পর নিজের গলা কেটে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। তবে কী কারণে এমন হত্যাকাণ্ড তা এখনও অজানা। আমাদের ক্রাইম সিন ইউনিট কাজ করছে। তিনি আরও বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হচ্ছে।
** বিছানায় পড়েছিল মা ও দুই মেয়ের লাশ, গলাকাটা অবস্থায় উদ্ধার বাবা
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৩, ২০২৪
আরএ