ঢাকা: ফিলিস্তিনিদের পুরোপুরি নিধন করতে ইসরায়েল পরিকল্পিতভাবে সেখানে সামরিক অভিযান চালাচ্ছে। ফিলিস্তিনিরা আজ নিজ ভূখণ্ড থেকে উৎখাত হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম- মুক্তিযুদ্ধ'৭১ আয়োজিত মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাত, গাজার চলমান গণহত্যা ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের প্রাসঙ্গিকতা শীর্ষক এক আলোচনা সভায় বক্তারা এ কথা বলেন।
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, ফিলিস্তিনিদের পুরোপুরি নিধন করতে ইসরায়েল পরিকল্পিত সামরিক অভিযান চালাচ্ছে। গাজা ভূখণ্ডে তারা খাদ্যদ্রব্যসহ সব ধরনের পণ্য ও সেবা সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে। গাজায় এখন দুর্ভিক্ষ চলছে। গাজাবাসীর এক তৃতীয়াংশ জনগণ এই দুর্ভিক্ষের শিকার।
তারা বলেন, গত ছয় মাস ধরে একদিকে নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিদের হত্যার মহোৎসব চলছে, অন্যদিকে, পরিকল্পিতভাবে খাদ্যের অভাব করে বাকিদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। সর্বশেষ হিসাব মতে, ইজরায়েলি আগ্রাসনে ৩০ হাজার ফিলিস্তিনি মারা গেছেন। তাদের বেশিরভাগই সাধারণ বেসামরিক মানুষ।
আলোচনা সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ড. মোহাম্মদ সামাদ বলেন, আজকে ফিলিস্তিন ইস্যুতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ জুড়ে এতো মিছিল হচ্ছে, কিন্তু সেটা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কানেই তুলছে না। আজকে যদি ফিলিস্তিন ও ইসরায়েল দুটি রাষ্ট্র হতো, তাহলে এই সমস্যা অনেকটাই সমাধান হয়ে যেতো। ইসরায়েলকে সমর্থন দিচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এটা বাইডেনের অবস্থান দেখেই বোঝা যায়। তিনি একবার বলছেন যুদ্ধ বন্ধ করতে হবে। আবার সিকিউরিটি কাউন্সিলে কথা উঠলেই তিনি সেখানে ভেটো দিচ্ছেন। বাইডেনের এই দ্বিচারিতার বিরুদ্ধে তরুণ সমাজকে একত্রিত করতে হবে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. সারওয়ার আলী বলেন, গণহত্যার সংজ্ঞা হচ্ছে কোনো জাতি বা গোষ্ঠীকে পুরো দমে নির্মূল করে দেওয়া। আজকে ফিলিস্তিনরা আপন দেশে আপন রাষ্ট্রভূমি থেকে উৎখাত হচ্ছে। তারা নিজ দেশে উদ্বাস্তু হয়ে জীবন যাপন করছে। তাদের অবস্থানটাকে আরও সংকুচিত করার জন্য এই আক্রমণটা এখনও চলছে। এর চাইতে নিষ্ঠুর নির্মম হত্যাকাণ্ড আর হয় না। আজকে বিশ্বের বিবেককে জাগ্রত করা প্রয়োজন। এই চেষ্টাটাই আমাদের করতে হবে।
সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের কার্যনির্বাহী সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. নূরুল আলমের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ফোরামের মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা হারুন হাবীব। এছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন সাবেক রাষ্ট্রদূত মুন্সি ফয়েজ আহমেদ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. আব্দুল মান্নান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য ড. আনোয়ার হোসেন, বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক ও সংগঠনটির যুগ্ম মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মাবুদ প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৯, ২০২৪
এসসি/এসআইএ