ফরিদপুর: ফরিদপুর জেলার মধুখালীতে আবাদি জমির মাটি কেটে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি ওবায়দুর রহমানের বিরুদ্ধে।
জানা গেছে, ওবায়দুর রহমান উপজেলার মেগচামী ইউনিয়ন আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ৭ নম্বর মেগচামী ইউনিয়ন পরিষদের পাশেই ফসলি জমি থেকে এক্সকেভেটর (ভেকু) বসিয়ে কাটা হচ্ছে মাটি। পশ্চিম পাশের ক্ষেতে রয়েছে গম, তার পাশে রয়েছে পেঁয়াজ ও মুশুরি ক্ষেত। তিন ফসলি মাঠে এভাবে মাটি কেটে বিক্রি করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা। সেই সঙ্গে মাটি পরিবহনের সময় গাড়ির চাকায় পিষ্ট হয়ে নষ্ট হচ্ছে ফসল। মাটি পরিবহনের কারণে দুলায় আশেপাশের পরিবেশ দূষিত হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা ফজল আলী বলেন, দিনে রাতে মাটি কেটে নেওয়ার কারণে যেমন ঝুঁকিতে পড়ে যাচ্ছে এলাকার ঘরবাড়ি। তেমনি ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে ফসলি জমি। এছাড়া মাটিবোঝাই ভারি ডাম্প ট্রাক চলার কারণে ধুলোবালিতে দূষিত হচ্ছে ওই এলাকার পরিবেশ। এসব মাটির ডাম্প ট্রাক ও গ্রামীণ সড়কে নিষিদ্ধ থাকলেও দিনরাত ড্রামট্রাক দিয়ে মাটি নিয়ে যাচ্ছেন ওবায়দুর রহমান ও মাসুদ ফকির।
স্থানীয় আরও কয়েকজনের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, ওবায়দুর রহমান ক্ষমতাসীন দলের ক্ষমতা ব্যবহার করে দিনের পর দিন ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকার তিন ফসলি কৃষি জমিতে খননযন্ত্র (ভেকু) বসিয়ে মাটি কেটে স্থানীয় বসতবাড়ি ভরাটের কাজ করে আসছেন। অন্যের ফসলি জমির ওপর দিয়ে ট্রাক চলাচলের জন্য বানানো হয়েছে রাস্তা, এসব রাস্তায় ভারি ট্রাক চলাচলের কারণে অন্যান্য জমির ফসল নষ্ট হচ্ছে।
জমির মালিক নিতিশ বিশ্বাস বলেন, আমার জমি চাষবাস করার লোক নেই। আর এখানে নিচু জায়গা। এজন্য আমার জমির মাটি এমনিতেই দিয়েছি তাদের।
এ বিষয়ে মাটি ব্যবসায়ী মো. ওবায়দুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে ফসলের জমি কাটার বিষয়টি ভিত্তিহীন দাবি করে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, আমি কোনো ফসলি জমি থেকে মাটি কাটছি না। আমি একটি ছোট্ট খাল থেকে মাটি কাটছি, যাতে ওই এলাকায় বর্ষার সময়ে পাট জাগ দেওয়া এবং জমির পাট কেটে আনা-নেওয়া করা যায়। জনস্বার্থে এ মাটি কাটা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, আমি যার জমিতে মাটি কাটছি সে নিজ ইচ্ছায় টাকার বিনিময়ে আমার কাছে মাটি বিক্রি করেছেন। এটাও কি অন্যায়।
মধুখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মামনুন আহমেদ অনীক বাংলানিউজকে বলেন, আমি তাদের ডেকেছিলাম। তারা দাবি করেছেন ওই জায়গাটা ডোবা ছিল। তবে, জায়গাটা যে ডোবা ছিল সেটা প্রমাণ করার মতো কোনো কাগজপত্র কিংবা ছবি তারা দেখাতে পারেনি। আমি সরেজমিনে গিয়ে দেখে পরবর্তী ব্যবস্থা নেব।
বাংলাদেশ সময়: ১৯১৬ ঘণ্টা, মার্চ ০৪, ২০২৪
এসএম