ঢাকা, রবিবার, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি বন্ধে হাইকোর্টের নির্দেশনা বাস্তবায়নের দাবি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২১ ঘণ্টা, মার্চ ৮, ২০২৪
কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি বন্ধে হাইকোর্টের নির্দেশনা বাস্তবায়নের দাবি

ঢাকা: নারীর জন্য কাজের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে ঠিকই কিন্তু নারীর প্রতি সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি এখনো ততটা পরিবর্তিত হয়নি। ফলে কর্মস্থলে নারীর কাজের পরিবেশও তেমন অনুকূল হয়ে উঠেনি।

তাই আইএলও কনভেনশন ১৯০ ও কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি বন্ধে হাইকোর্টের নির্দেশনা যথাযথ বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছে ন্যাশনাল ওয়ার্কার্স ইউনিটি সেন্টার ও গ্রীণ বাংলা গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ফেডারেশন নামের দুটি সংগঠন।

শুক্রবার (৮ মার্চ) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক নারী শ্রমিক সমাবেশ ও র‍্যালিতে এ দাবি জানানো হয়।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, কর্মক্ষেত্রে জেন্ডার বৈষম্যসহ যে কোনো ধরনের বৈষম্য-আইনত: নিষিদ্ধ। যদিও প্রতিটি কর্মক্ষেত্রেই নারীরা বহু ধরনের বৈষম্যের শিকার হাচ্ছে। এখনও আমাদের পরিবারগুলোতে নারীকেই পারিবারিক দায়দায়িত্বের পুরোটাই পালন করতে হয়। পারিবারিক দায়িত্বের বিশাল বোঝা, সামাজিক বাধা উপেক্ষা করে নারী কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করছে। নারীর জন্য কাজের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে ঠিকই কিন্তু নারীর প্রতি সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি এখনও ততটা পরিবর্তিত হয়নি। দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন না ঘটার ফলে কর্মস্থলে নারীর কাজের পরিবেশও তেমন অনুকূল হয়ে উঠেনি।

সভাপতির বক্তব্যে ন্যাশনাল ওয়ার্কার্স ইউনিটি সেন্টার ও গ্রীন বাংলা গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি সুলতানা বেগম বলেন, বাংলাদেশে পোশাক রপ্তানি খাতে অধিংকাশই নারী এবং সবাই দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করে। এ শিল্প প্রসারের ফলে সমবাজারে নারীর অংশগ্রহণ আশাতীতভাবে বৃদ্ধি পায়। এ শিল্পে বর্তমানে কাজ করে প্রায় ৭০ ভাগ নারী শ্রমিক। কিন্তু এ খাতে শ্রমিকদের সর্বাধিক অবদান থাকলেও তারা তাদের ন্যূনতম আইনগত অধিকারসহ মানবাধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। সামাজিক অনাচার অবক্ষয় থেকে নারীকে রক্ষার জন্য আইন প্রণয়ন করা হলেও আইনের যথাযথ প্রয়োগ না থাকার কারণে এমন কি আইনের ভুল ব্যাখ্যার কারণে আইনের আশ্রয়লাভ নারীর পক্ষে সম্ভব হয় না। ফলে নারীকে পদে পদে নিগৃহীত হতে হয়, লাঞ্ছিত হতে হয়। নারীর এ বঞ্চনা- লাঞ্ছনা শতগুণ বৃদ্ধি পায় একজন কর্মজীবী- শ্রমজীবী নারীর ক্ষেত্রে।

সুলতানা বেগম বলেন, পারিবারিক ও সামাজিক নানাবিধি সমস্যার পাশাপাশি তাকে কর্মক্ষেত্রের নানা ধরনের সমস্যা ও বৈষম্যের শিকার হতে হয়। বেতন বৈষম্য, স্বাস্থা সম্মত কর্মপরিবেশের অভাব, অতিরিক্ত কাজ, রাত্রিকালীন কাজ, সাপ্তাহিক ছুটি সহ অন্যান্য ছুটি না পাওয়া, ট্রেড ইউনিয়ন করতে না দেওয়া, এমনকি কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানির মতো জঘন্য ঘটনাও ঘটছে। আমরা আইএলও কনভেনশন ১৯০ ও কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি বন্ধে মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশনা যথাযথ বাস্তবায়ন চাই।

সমাবেশ শেষে একটি বর্ণাঢ্য র‍্যালি জাতীয় প্রেসক্লাব, হাইকোর্ট মোড়, তোপখানা রোড এবং পল্টন মোড় প্রদক্ষিন করে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এসে সমাপ্ত হয়।

নারী সমাবেশে ন্যাশনাল ওয়ার্কার্স ইউনিটি সেন্টার ও গ্রীন বাংলা গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি সুলতানা বেগমের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মো. ইলিয়াস, কেন্দ্রীয় নেতা খাদিজা রহমান, সুইটি, মো. ফরিদ উদ্দীন, রোজিনা আক্তার সুমি, সেলিনা হোসাইন, রাবেয়া ইসলাম, মো. তাহেরুল ইসলাম, আঞ্চলিক নেতা মো. ফারুক, মো. সুমন হোসেন মোল্লা, স্বপ্না আক্তার, শাবনুর, নুরজাহান, সালমা বেগম, জোসনা বেগম ও খাদিজা আক্তার।

বাংলাদেশ সময়: ১৪২০  ঘণ্টা, মার্চ ৮, ২০২৪
ইএসএস/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।