ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

ভোরের ফাঁকা ঢাকায় পুলিশ পরিচয়ে ডাকাতি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫৬ ঘণ্টা, মার্চ ১১, ২০২৪
ভোরের ফাঁকা ঢাকায় পুলিশ পরিচয়ে ডাকাতি মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ

ঢাকা: দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে রাজধানীতে আসা সাধারণ মানুষকে টার্গেট করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে ডাকাতি করে আসছিল একটি চক্র।  

সোমবার (১১ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

 

তিনি জানান, সম্প্রতি বরগুনা থেকে আসা তিনজনের রিকশা থামিয়ে ছিনতাইয়ের ঘটনায় জড়িত একটি ডাকাত দলের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) গোয়েন্দা (ডিবি) ওয়ারি বিভাগ।

ডিবি বলছে, চক্রটি রিকশায় করে গন্তব্যে যাওয়া যাত্রীদের টার্গেট করত। এরপর পুলিশসহ নানা পরিচয়ে মারধর করে সর্বস্ব লুটে নিত। এমন কি টার্গেট করা ব্যক্তিদের বহনকারী রিকশাও লুটে নিত ডাকাত দলের সদস্যরা।

গ্রেপ্তার আসামীরা হলেন- ডাকাত দলের সরদার নাহিদ হোসেন ওরফে আনন্দ ও তার সহযোগী মো. বাবুল (৬৩), মো. দেলোয়ার ওরফে রিপন (৩৮), মো. মনতাজুল (৪০), মো. রতন ইসলাম (৩৮)। অভিযানে তাদের কাছ থেকে ডাকাতি করে নেওয়া টাকা ও ব্যবহৃত দুটি রিকশা উদ্ধার করা হয়।

মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, চলতি মাসের ৪ তারিখ ভোরে বরগুনা থেকে বাসে করে কবির হোসেনসহ তিনজন ঢাকায় আসেন। তারা মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরবে যাওয়ার জন্য পুরানা পল্টনের একটি এজেন্সির কাছে (ফিটনেস) মেডিকেল করার কাগজ জমা দিতে আসেন। ঘটনার দিন ভোর সাড়ে ৫টার দিকে বাস থেকে নেমে তিনজন মিলে যাত্রাবাড়ি সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে রিকশায় করে পল্টনের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। কিছুদূর আসার পরে ডিএমপির ওয়ারি থানার শশী মোহন বসাক লেনে এলাকায় একটি নিরিবিলি স্থানে পুলিশ পরিচয়ে রিকশার গতিরোধ করা হয়। পরে রিকশা থেকে নামিয়ে ভুক্তভোগী কবিরের কাছে থাকা প্রায় ৩৩ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেওয়া হয়। এমন কি ডাকাত সরদার নাহিদ ভুক্তভোগী কবিরের মাথা ধরে সজোরে দেওয়ালে আঘাত করে। এই ঘটনায় কবির বাদী হয়ে ওয়ারি থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার ছায়া তদন্তে নামে ডিবির ওয়ারি বিভাগ।

তিনি বলেন, ঘটনাস্থলের আশপাশ এলাকার সিসিটিভির ফুটেজ বিশ্লেষণ ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় রিকশায় করে ঘুরে ঘুরে ডাকাতি করা এই চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। এই ঘটনায় গ্রেপ্তার মনতাজুল ও রতন দায় স্বীকার করে ছয়জনের সম্পৃক্ততা কথা জানিয়ে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি দিয়েছে। গ্রেপ্তার ডাকাত দলের সরদার নাহিদের বিরুদ্ধে তিনটি ছিনতাই, একটি মাদকসহ পাঁচটি, বাবুলের বিরুদ্ধে পাঁচটি ছিনতাই, দুটি দ্রুত বিচার আইন ও তিনটি মাদক মামলাসহ ১০টি ও দেলোয়ারের বিরুদ্ধে দুটি ছিনতাই মামলা রয়েছে।

ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, রাজধানীর কারওয়ান বাজার, সায়েদাবাদ, গাবতলী, গুলিস্থান, সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালসহ আন্তঃজেলা বাসও লঞ্চে করে ঢাকায় আসা যাত্রীদের টার্গেট করে দীর্ঘদিন ধরে ছিনতাই ও ডাকাতি করে। কেউ তাদের কাজে বাঁধা দিলে আঘাত করে সর্বস্ব ছিনিয়ে নেয়।  

ভোরে চলার পথে কেউ ডাক দিলে থামা যাবে না। কেউ ভোরে ঢাকায় এলে টার্মিনালে একটু অপেক্ষা করে বেলা বাড়লে বের হওয়ার অনুরোধ জানান তিনি।  

রমজানকে কেন্দ্রে করে ইফতার, সেহরিসহ নির্জন সময়গুলোতে এমন ডাকাতি বা ছিনতাই প্রতিরোধে ডিবি পুলিশ মাঠে থাকবে।  

কিশোর গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে চলা অভিযানের বিষয়ে এক প্রশ্নে গোয়েন্দা প্রধান বলেন, কিশোর গ্যাং ও ছিনতাইকারীদের বিরুদ্ধে আমাদের সাঁড়াশি অভিযান চলমান রয়েছে।  

বাংলাদেশ সময়: ২০৫৫ ঘণ্টা, মার্চ ১১, ২০২৪
এসজেএ/এসআইএস
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।