ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১, ০৩ মে ২০২৪, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

রাঙামাটিতে বৈসাবির রং লেগেছে

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৩৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ৪, ২০২৪
রাঙামাটিতে বৈসাবির রং লেগেছে

রাঙামাটি: পাহাড়ে রং লেগেছে বৈসাবি উৎসবের। রাঙামাটি জেলায় চার দিনব্যাপী বিজু, সাংগ্রাই, বৈসুক, বিষু, বিহু মেলার মধ্য দিয়ে পাহাড়ের ঐতিহ্যবাহী বৈসাবি উৎসবের শুভ সূচনা হয়েছে।

পার্বত্য জেলা রাঙামাটিতে যেকোনো উৎসবের রংয়ে সব জাতিসত্তা মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়, আবদ্ধ হয় সম্প্রীতির বন্ধনে। মূল বৈসাবির উৎসব শুরু হওয়ার আগে বৈসাবির শুভ সূচনা হিসেবে প্রতি বছরের মতো এ বছরও জেলায় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গণে চার দিনব্যাপী বিজু, সাংগ্রাই, বৈসুক, বিষু, বিহু মেলার আয়োজন করা হয়েছে।  

বুধবার (৩ এপ্রিল) বিকেলে উৎসবের সূচনা লগ্নে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয়ে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে মেলা প্রাঙ্গণ এসে শেষ হয়।

প্রধান অতিথি থেকে এ মেলার উদ্বোধন করেন, দেশের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নাহিদ ইজাহার খান এমপি। এরপর স্থানীয় ক্ষুদ্র নৃ- গোষ্ঠী জাতিসত্তার শিল্পীরা তাদের ভিন্ন ভিন্ন সংস্কৃতির  নাচে-গানে পুরো অনুষ্ঠান স্থল মাতিয়ে রাখে। এদিকে  ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ঐতিহ্যবাহী পোশাক-পরিচ্ছদ এবং তাদের খাবার নিয়ে মেলা প্রাঙ্গণ সেজে উঠেছে।

ছোট-বড় প্রায় ৫০টি স্টল বসেছে মেলায়। সবগুলো স্টলে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মাচাং ঘরের আদলে বাঁশ আর কাঠ দিয়ে তৈরি। এসব স্টলে ঠাঁই পেয়েছে চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, তঞ্চঙ্গ্যা, ম্রো, বম, চাক, পাংখোয়া, লুসাই, খুমী ও খিয়াং নৃ-গোষ্ঠীর ঐতিহ্যবাহী কৃষ্টি, সংস্কৃতি, খাবার, নিত্য ব্যবহার্য দ্রব্যাদি ও বিভিন্ন পণ্যসামগ্রী।

মেলায় অংশ নেওয়া ক্ষুদ্র জাতিসত্তার উদ্যোক্তারা বলছেন, মেলার দিন যত গড়াবে বিকিকিনি ততই বাড়বে। মেলায় আশা দর্শনার্থীরা বলছেন, এমন সৌন্দর্য দেশের অন্য কোথাও দেখা যায় না।

মেলায় অংশ নেওয়া লিটন দেওয়ান এর স্বত্বাধিকারী মন্টি দেওয়ান বলেন, আমি এই প্রথম ছোট বাচ্চাদের পোশাক নিয়ে হাজির হয়েছি। অনেক ভালো লাগছে। আশা করছি দু’দিনের মধ্যে বিকিকিনি বাড়বে।

তঞ্চঙ্গ্যা সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি লিকা তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, এ মেলায় আসতে পেরে ভালো লাগছে। এখানে আমাদের সম্প্রদায়ের লোকজনের পাশাপাশি ভিন্ন সম্প্রদায়ের লোকজনও এসেছে।

অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া ঝিনুক ত্রিপুরা বলেন, এ মেলার মাধ্যমে রাঙামাটিতে বৈসাবির সূচনা হয়েছে। আমরা চাই পুরো অঞ্চলে সম্প্রতি গড়ে উঠুক, সব হাঙ্গামা নিপাত যাক।

রাঙামাটি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অংসুই প্রু চৌধুরী বলেন, বৈসাবি উৎসবে পার্বত্য চট্টগ্রামে সম্প্রতি মেলবন্ধন দৃঢ় হয়। সারাবিশ্বে এখানকার বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর ভাষা, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, ইতিহাস তুলে ধরতে এমন মেলার আয়োজন করা হয়েছে।

চেয়ারম্যান আরও বলেন, সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পাহাড়ের উন্নয়নে দু’হাত ভরে দিচ্ছে। আমরা চাই পার্বত্য চট্টগ্রামে সম্প্রতি ও শান্তির জনপদ গড়ে উঠুক।

সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নাহিদ আজাহার খান এমপি বলেন, দেশের উন্নয়নে পার্বত্য চট্টগ্রামের সবাইকে নিয়ে এগিয়ে যেতে চাই। এখানকার কৃষ্টি-কালচারের উন্নয়নে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় সব সময় পাশে থাকবে।

এ মেলায় পাহাড়ে বসবাসরত ক্ষুদ্র জাতিসত্তার গোষ্ঠীরা যেমন তাদের কৃষ্টি, কালচার তুলে ধরতে পারছেন তেমনি মেলায় আসা দর্শনার্থীরা নতুন নতুন সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচিতি হতে পারছেন। আগামী ৬ এপ্রিল এ মেলার পর্দা নামার মধ্যে দিয়ে শুরু হবে বৈসাবির মূল উৎসব।

বাংলাদেশ সময়: ১২২৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৪, ২০২৪
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।