পাথরঘাটা (বরগুনা): ঈদ মানে খুশি। এ খুশি দিনেও কাজ করতে হয় উপকূলে থাকা জেলেদের।
আজ ঈদের দিন, এক শ্রেণীর মানুষ ঈদের খুশিতে আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে যাওয়া আসা করছে, দেখাশোনা করছে কোলাকুলি করছে। অন্যদিকে অধিকাংশ জেলেরা নদীতে সারিবদ্ধ হয়ে মাছ শিকার করছে। এখানেই যেন তাদের ঈদ আনন্দ। পরিবারের সঙ্গে ঈদের আনন্দের সময় না কাটিয়ে নদীতে মাছ শিকারে নেমে পড়েছেন।
উপকূলীয় উপজেলা পাথরঘাটা। এখানকার মানুষের প্রধান পেশা মাছ ধরা, দ্বিতীয় পেশা কৃষি কাজ। এখানকার নিম্ন শিক্ষিতদের সঙ্গে শিক্ষিত বেকার যুবকেরাও জীবিকা নির্বাহ করে। নগদ টাকা পাওয়ায় প্রতিদিনই তারা ঝুঁকছে এ পেশায়। সাগর ও নদীবেষ্টিত এ অঞ্চলের বেকার যুবকেরা পূর্ব পুরুষের মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহের পথ বেছে নিয়েছে। ঈদুল ফিতরের দিনও তারা এ কাজে নিয়োজিত।
গভীর বঙ্গোপসাগরের পাশাপাশি নদ-নদীতেও দিনরাত বিরামহীন কর্মযজ্ঞ। এ বিরামহীন এ কাজ ঈদের দিনেও থেমে নেই। প্রতিদিনের মতো ভোর রাতে নদীতে জাল ফেলে আবার সময় মতো জাল টানতে হবে। তাই ঈদের নামাজ শেষে বিষখালী ও বলেশ্বর নদে জাল টানতে যান কবির হোসেন, আ. জব্বার, সোহরাব ভাণ্ডারিসহ অনেক জেলে।
তারা বলেন, আমাদের কোনো বিশেষ দিন নেই। প্রতিদিনই আমাদের কাছে সমান। ঈদ ছাড়া যেমন আমাদের দিন কাটে, ঈদের দিনও ঠিক এমনভাবেই কাটে। প্রতিদিনের মতো ভোর রাতে নদীতে জাল ফেলে আসছি ঈদের নামাজটা পড়ে আবার জাল টানতে যাচ্ছি।
আ. জব্বার বলেন, ঈদের দিন সকালে বাবা-মায়ের কবর জেয়ারত করে, ঈদের নামাজ শেষ করে নদীতে জাল টানার জন্য রওয়ানা হয়েছি। যদি কয়েকটা মাছ পাই তা বিক্রি করে পোলাপাইনের জন্য নতুন জামা কিনবো।
একই গ্রামের নুরুল আলম বলেন, বংশপরম্পরায় এ কাজ করছি। আমরা এ পেশা ছাড়া আর কোনো কাজ শিখিনি। তিনি মুঠোফোনে বলেন, ভোর রাতেই নদীতে আইছি, এখন পর্যন্ত বাড়িতে যাইতে পারি নাই, ঈদের নামাজও পড়তে পারি নাই। এটাই আমাদের ঈদ।
বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বলেন, পাথরঘাটে অসংখ্য জেলে রয়েছে তাদের মূল পেশা হচ্ছে মাছ শিকার। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত, সন্ধ্যা হয়ে সকাল পর্যন্ত কর্মব্যস্ত থাকতে হয় এসব জেলেদের।
বাংলাদেশ সময়: ১০০০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১১, ২০২৪
এসএম