ঢাকা: দেশজুড়ে বাংলা নববর্ষের রঙ লেগেছে। সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গেই নানান কর্মসূচিতে পালিত হচ্ছে বর্ষবরণের নানান আয়োজন।
রাজধানীজুড়ে ১৪৩১ বঙ্গাব্দের সকাল থেকেই নানা আয়োজনে অংশ নিচ্ছেন জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল শ্রেণিপেশার মানুষ। এবারের অনুষ্ঠানে বিদেশিদের অংশগ্রহণও চোখে পড়ার মতো।
ভোর থেকে রমনার বটমূল থেকে গান, কবিতায় বরণ করা শুরু হয় বাংলা নতুন বছর। এরপর সকাল সোয়া ৯টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা থেকে বের হয় মঙ্গল শোভাযাত্রা।
রমনা-ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রিক বর্ষবরণের মূল আয়োজনসহ রাজধানীজুড়ে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেখা গেছে। নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা বলয়ে রয়েছে উৎসবস্থল ও এর আশপাশের এলাকা।
রোববার (১৪ এপ্রিল) নববর্ষের দিন সকাল থেকে রাজধানীর শাহবাগ মোড়কে কেন্দ্র করে বাংলামোটর, মৎসভবন মোড়, টিএসসি রোড এবং কাটাবনের দিকে যাওয়ার প্রতিটি প্রধান সড়কের বাইরে পাশের রোডগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে ব্যাপক সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতি দেখা গেছে। পোশাকধারী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের পাশাপাশি দায়িত্ব পালন করছেন সাদা পোশাকে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা। ওয়াচটাওয়ার ও সিসিটিভি ক্যামেরার মাধ্যমে সার্বক্ষণিক নজরদারির পাশাপাশি রয়েছে র্যাব-পুলিশের টহল টিম।
মঙ্গল শোভাযাত্রার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত র্যাব-পুলিশ-সোয়াত সদস্যদের পাশাপাশি ঘিরে ছিল বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরা। নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যেই মঙ্গল শোভাযাত্রায় সকলে নেচে-গেয়ে অংশ নিয়েছেন।
পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তায় নববর্ষের সকল অনুষ্ঠান শান্তিপূর্ণভাবে পালিত হচ্ছে। অনুষ্ঠান শেষ হওয়া পর্যন্ত প্রতিটি স্থান পুলিশ সদস্যদের নজরদারিতে থাকবে।
শনিবার (১৩ এপ্রিল) রমনা বটমূলের নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ শেষে ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান বলেন, পহেলা বৈশাখ বাঙালি জাতিসত্তার অসাম্প্রদায়িক চেতনার প্রকাশ। এ কারণে বার বার এ আয়োজনে আঘাত হানা হয়েছে, জঙ্গি হামলা হয়েছে। তাই সবকিছু মাথায় রেখেই আমাদের নিরাপত্তা পরিকল্পনা সাজানো হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত সুনির্দিষ্ট কোনো হামলার শঙ্কা নেই।
তিনি বলেন, পহেলা বৈশাখ বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে দিনটি সারা দেশে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনায় পালিত হচ্ছে। প্রধান অনুষ্ঠান ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রমনা বটমূল, সংসদ ভবন এলাকা, হাতিরঝিল, রবীন্দ্র সরোবরসহ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজন করা হচ্ছে। ডিএমপির পক্ষ থেকে সব অনুষ্ঠান ঘিরেই ব্যাপক পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। যেসব জায়গায় অনুষ্ঠান হবে সিসিটিভি দ্বারা পুরো এলাকার নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। এছাড়া ওয়াচটাওয়ার, ড্রোনের মাধ্যমে আশপাশের এলাকায় নজরদারি করা হচ্ছে।
র্যাব মহাপরিচালক (ডিজি) এম খুরশীদ হোসেন বলেন, বর্ষবরণ ঘিরে যেকোনো হামলা মোকাবিলায় আামাদের স্পেশাল কমান্ডো টিম প্রস্তুত থাকবে। জঙ্গি হামলার সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি, তবুও আমরা আত্মতৃপ্তিতে ভুগছি না। গোয়েন্দা তথ্য ও সাইবার মনিটরিংয়ের মাধ্যমে জঙ্গিদের যেকোনো ধরনের নাশকতার পরিকল্পনা নস্যাৎ করে দিতে র্যাব সার্বক্ষণিক প্রস্তুত রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩০০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৪, ২০২৪
পিএম/এসএএইচ