ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১, ০৭ মে ২০২৪, ২৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

পয়ঃনিষ্কাশন শোধনাগার নির্মাতা জাপানের ডাইকি অ্যাক্সিসের কার্যক্রম শুরু

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩১৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৬, ২০২৪
পয়ঃনিষ্কাশন শোধনাগার নির্মাতা জাপানের ডাইকি অ্যাক্সিসের কার্যক্রম শুরু

ঢাকা: বিশ্বের বৃহত্তম পয়ঃনিষ্কাশন শোধনাগার নির্মাণকারী জাপানি প্রতিষ্ঠান ডাইকি অ্যাক্সিস সম্প্রতি বাংলাদেশে তাদের কার্যক্রম চালু করেছে। বাংলাদেশের চার্ম লিমিটেডের সঙ্গে জাপানের এই প্রতিষ্ঠানটি যৌথ উদ্যোগের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে এর সাবসিডিয়ারি কোম্পানি ‘ডাইকি অ্যাক্সিস বাংলাদেশ’ এর যাত্রা শুরু করেছে।

 

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) রাজধানীর রেডিসন ব্লু ওয়াটার গার্ডেনে ‘ডাইকি অ্যাক্সিস বাংলাদেশ’ কোম্পানির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করা হয়। সম্পূর্ণভাবে জাপানের বিনিয়োগে ডাইকি অ্যাক্সিস বাংলাদেশ এর কার্যক্রম পরিচালিত হবে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন- জাপান দূতাবাসের মিনিস্টার মাচিদা তাতসুয়ান। এছাড়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ডাইকি অ্যাক্সিসের চেয়ারম্যান হিরোশি ওগেম এবং প্রেসিডেন্ট হিরোকি ওগেম।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী র আ ম উবায়দুল মোক্তাদির চৌধুরী এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম। অতিথিদের মধ্যে আরও ছিলেন, রাজউকের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল সিদ্দিকুর রহমান, গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ শামীম আখতার এবং সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন।

পৃথিবীর অন্যান্য শহরগুলোর মধ্যে দূষণের দিক থেকে শীর্ষের দিকে ঢাকা। ফলে সুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট (এসটিপি) বা পয়ঃনিষ্কাশন শোধনাগার বাধ্যতামূলক করা দরকার বলে মনে করেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী।

তিনি বলেন, ঢাকার শুধু বুড়িগঙ্গা নয়, যেকোনো নদীতেই যাবেন, কোনো নদীতেই সাঁতার কাটার কিংবা গোসলের পরিস্থিতি নেই। এ অবস্থায় ডাইকি যে উদ্যোগ নিয়েছে সেটি প্রশংসনীয়। আমি আশা করি, জাপানি কোম্পানি ডাইকি অ্যাক্সিস বাংলাদেশে পানির দূষণ কমাতে সাহায্য করবে।

অনুষ্ঠানে মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, আমরা স্যুয়ারেজ কানেকশন সরাসরি ক্যানেল, স্ট্রং ড্রেনে দিতে পারি না। সেক্ষেত্রে জাপানের এ জোকাসু প্রযুক্তি মডেল সমাধান এনে দিতে পারে। যার মাধ্যমে বর্জ্য পানি নিষ্কাশন হবে। আলাদা লাইনের দরকার হবে না। তারা বাংলাদেশে ফ্যাক্টরি করার চেষ্টা করছে। আমি নিজেই এ মডেল আমার বাসায় রেখেছি, যা পরিবেশের ক্ষতি করছে না।

জাপান থেকে এই বিদেশি বিনিয়োগের মাধ্যমে ডাইকি অ্যাক্সিস দেশে স্থানীয়ভাবে পয়ঃনিষ্কাশন শোধনাগার বা স্যুয়েজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট (এসটিপি) নির্মাণ শুরু করছে। এতে পানি পরিশোধনাগার প্রক্রিয়ায় ব্যবহার করা হবে জাপানি টেকনোলজি-জোহ্‌কাসু। মূলত বর্জ্য পানির পুনর্নব্যবহার এবং পরিবেশের গ্রিন হাউস গ্যাস নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে জোহ্‌কাসু প্রযুক্তি কার্যকরী। ডাইকি অ্যাক্সিস বাংলাদেশের এই উদ্যোগের লক্ষ্য হলো দেশে সবচেয়ে টেকসই পানি ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা এবং সর্বোপরি পরিবেশ রক্ষা করা।

জোহ্‌কাসু সিস্টেম ও প্রযুক্তি সর্বপ্রথম ভূমিকা রাখে জাপানের স্যুয়েজ সিস্টেমকে উন্নত করতে। যার ব্যবহার পরবর্তীতে অন্যান্য দেশেও শুরু হয়। জোহ্‌কাসুর পণ্যগুলো জাপান সরকার কর্তৃক অনুমোদিত যা সরকারের পলিসির অংশ হিসাবে জাপান জুড়ে ব্যবহার করা হয়। জোহ্‌কাসু প্রযুক্তির এমন ব্যাপক প্রভাব থাকায় এর মাধ্যমে ‘ডাইকি অ্যাক্সিস বাংলাদেশ’ দেশের দূষিত পানি ও পরিবেশের উন্নয়নে কাজ শুরু করেছে। অপর্যাপ্ত স্যানিটেশন, নদীতে আসা কল-কারখানার আর কৃষিজ বর্জ্য সবচেয়ে বেশি এ দেশের পরিবেশ দূষিত করছে। পাশাপাশি এর ফলে বাড়ছে স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি। এমন সমস্যাগুলো দূর করতে বর্তমানে দেশের পানি ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন প্রয়োজন।

অনুষ্ঠানে গণপূর্ত বিভাগ (পিডব্লিউডি) এবং ডিএনসিসি 'ডাইকি অ্যাক্সিস গ্লোবাল অ্যাওয়ার্ড ফর এনভায়রনমেন্ট প্রোটেকশন অ্যান্ড কনজারভেশন ২০২৪'  অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়। রাজধানী ঢাকায় খাল সংরক্ষণে এবং পয়ঃনিষ্কাশন প্রকল্প স্থাপনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের জন্য ডাইকি অ্যাক্সিসের পক্ষ থেকে এই সম্মাননা দেওয়া হয়।

বাংলাদেশ সময়: ২৩১৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৬ ২০২৪
এমআইএইচ/এসএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।