ঢাকা, রবিবার, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৯ মে ২০২৪, ১০ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

বজ্রপাত থেকে কৃষকদের জীবনরক্ষায় তিন নির্দেশনা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১৬ ঘণ্টা, মে ৬, ২০২৪
বজ্রপাত থেকে কৃষকদের জীবনরক্ষায় তিন নির্দেশনা

ঢাকা: দেশে বজ্রপাতে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে বেশির ভাগই কৃষক। সবশেষ গত ৩ মে বজ্রপাতে ১১ জনের প্রাণহানি হয়েছে।

আহত হয়েছেন ৯ জন। এ বছর এখন পর্যন্ত মারা যাওয়া বেশির ভাগই কৃষক। তাই জীবনরক্ষায় মাঠে কাজ করা কৃষকদের তিন দফা নির্দেশনা পালন করার আহ্বান জানিয়েছে সামাজিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সেভ দ্য সোসাইটি অ্যান্ড থান্ডারস্টর্ম অ্যাওয়ারনেস ফোরাম (এসএসটিএফ)। পাশাপাশি বজ্রপাত হলে কৃষকেরা কীভাবে নিজেদের নিরাপদ রাখবেন সেই কৌশলও জানিয়েছেন সংগঠনটির সদস্যরা।

শনি ও রোববার (৪ ও ৫ মে) দুই শতাধিক কৃষকের মাঝে তিন দফা নির্দেশনাসহ বজ্রপাত সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করেছে এসএসটিএফ।  

দুই দিনে এসএসটিএফ’র একাধিক প্রতিনিধিদল মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান ও ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন মাঠে ধান কাটায় ব্যস্ত কৃষকদের বজ্রপাত থেকে নিজেদের জীবনরক্ষার কৌশল জানায়।

কৃষকদের জন্য দেওয়া নির্দেশনাগুলো হলো—
১. খোলা আকাশের নিচে থাকলে আকাশে কালো মেঘ দেখার সঙ্গে সঙ্গে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় গ্রহণ।
২. বৃষ্টি হলে গাছের নিচে অবস্থান না করা।
৩. খোলা আকাশের নিচে কাজ করার সময় পায়ে জুতা পরিধান করা। মাঠে থাকা অবস্থায় হঠাৎ বজ্রপাত হলে নিচু হয়ে শুয়ে পড়া।

সচেতনতামূলক এ কার্যক্রম পরিচালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রাশিম মোল্লা, গবেষণা সেলের প্রধান আব্দুল আলিম, যুগ্ম সম্পাদক মোস্তাক আহমেদ ও স্বেচ্ছাসেবী মো. শরিফুল ইসলাম। এ সময় কৃষকদের মাঝে কোমল পানি, শরবত ও স্যালাইন বিতরণ করা হয়।

কৃষকদের বলা হয়, খোলা আকাশে কাজ করার সময় জুতা পায়ে রাখতে হবে, বজ্রপাত হলে নিচু হয়ে শুয়ে পড়তে হবে। তবে আকাশে কালো মেঘ দেখা গেলে মাঠে না থেকে নিরাপদ স্থানে অবস্থান নেওয়ার কথাও বলা হয়। বৃষ্টি হলে গাছের নিচে অবস্থান করা বিপজ্জনক। তাই যত দ্রুত সম্ভব নিরাপদ আশ্রয়ে অবস্থান নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।

সেভ দ্য সোসাইটি অ্যান্ড থান্ডারস্টর্ম অ্যাওয়ারনেস ফোরামের সাধারণ সম্পাদক রাশিম মোল্লা সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে দ্রুত মাঠে মাঠে আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণের দাবি জানান। পাশাপাশি বছরের মার্চ থেকে জুন এই চার মাস কৃষকদের মাঝে বজ্রপাত সচেতনামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করারও পরামর্শ দেন।

ফোরামের গবেষণা সেলের প্রধান আবদুল আলীম জানান, বজ্রপাত বেড়ে যাওয়ার প্রধান কারণ দুটি। বৈশ্বিক উষ্ণতা বেড়ে যাওয়া এবং বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে বিশেষ করে মাঠের উঁচু গাছ কেটে ফেলা। হাওর অঞ্চলের মাঠে আগেও তেমন গাছ ছিল না। এখন অন্যান্য এলাকার গাছও কেটে ফেলা হয়েছে। ফলে মাঠে বা খোলা জায়গায় যে সব মানুষ থাকেন বজ্রপাতের এক কিলোমিটারের মধ্যে বিদ্যুৎ পরিবাহী উঁচু জিনিস হিসেবে সেই মানুষকেই পায়। মানুষ না থাকলে মাঠের গবাদি পশু। ফলে মানুষ মারা যায়, গবাদি পশুও মারা যায়।

তিনি আরও বলেন, অনেকে মনে করেন ওই সময় গাছের তলায় আশ্রয় নেওয়া নিরাপদ, আসলে এটা ঠিক নয়। আশ্রয় নিতে হবে বাড়িঘরে বা পাকা স্থাপনার নিচে।

আবদুল আলীমের মতে, সনাতন পদ্ধতিতে লাইটেনিং অ্যারেস্টার লাগালে বজ্রপাতে হতাহতের হাত থেকে বাঁচা যায়। এতে খরচ কম। একটি বাড়িতে ১০ হাজার টাকা খরচ করেই লাগানো যায়। আর সরকার হাওর এবং খোলা জায়গায় এগুলো লাগানোর উদ্যোগ নিতে পারে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫১৪ ঘণ্টা, মে ০৫, ২০২৪
এসএমএকে/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।