রাজবাড়ী: বটগাছের নিচে বাসা বানিয়েছে উইপোকা। এই উইয়ের বাসাকে বলা হয় ঢিবি।
এমনই আজব এক মাজারের সন্ধান মিলেছে রাজবাড়ী সদর উপজেলার বসন্তপুর ইউনিয়নের মজলিশপুর-রঘুনাথপুর গ্রামে।
স্থানীয়রা জানান, অনেক বছর আগে স্থানীয় নুর আমিন খাঁ নামে এক ব্যক্তি হঠাৎই সরকারি জমির ওপর গড়ে ওঠা উইয়ের টিবিতে ভক্তি করা শুরু করেন। এরপর থেকে এখানে প্রতিবছর ওরস পালন করতেন তিনি। দূর-দূরান্ত থেকে এখানে আসতে শুরু করে ভক্তরা। ছাগল, মোরগ-মুরগি ও টাকাসহ বিভিন্ন জিনিস দিয়ে যান ভক্তরা। তবে করোনা মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত এখানে কোনো ওরস হয়নি। দুই বছর আগে মারা যান নুর আমিন। বর্তমানে স্থানীয় কিছু যুবক এই উইয়ের টিবিকে ঘিরে মাজার ব্যবসা শুরুর পাঁয়তারা করছেন।
বুধবার (১ মে) বিকেলে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উইপোকার ঢিবিকে ঘিরে একটি পাকা ঘর তোলা হয়েছে। ঘরের ভেতরে মাটির তৈরি ছোট ছোট ২০-২৫টি মূর্তি রাখা আছে। বাইরে টাঙানো হয়েছে একটি ব্যানার।
ব্যানারটিতে লিখা রয়েছে, ‘উইরপুতা মাজারে আগামী শুক্রবার (৩ মে) পবিত্র ওরস শরীফ। ওই ওরসে জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকলকে শরিক হওয়ার জন্য দাওয়াত করা যাইতেছে। যে সব ভক্তদের মানত আছে, তারা সকাল সকাল নিয়ে আসবেন। ’
স্থানীয় মান্নান মাস্টার, রহমান খাঁ, বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিউদ্দিন বিশ্বাস বলেন, এখানে মাজার বলতে কিছু নেই। নুর আমিন খাঁ নামে এখানে একজন প্রতিবছর শিরনি করতেন। তার মৃত্যু হয়েছে। তবে করোনার সময় থেকে তা বন্ধ রয়েছে। বর্তমানে এলাকার কিছু যুবক এটাকে মাজার আখ্যা দিয়ে ব্যানার টাঙিয়ে ব্যবসার পাঁয়তারা করছেন। এরা প্রকাশ্যে শিরক করছেন। এলাকায় এই ভণ্ডামি ব্যবসা বন্ধ করা হোক।
রাজবাড়ী জেলা ইমাম কমিটির সভাপতি হাফেজ মাওলানা মো. ইলিয়াস মোল্লা বলেন, মাজার পূজা করা হচ্ছে সরাসরি আল্লাহর সঙ্গে শিরকের শামিল। আমরা এ বিষয়টি খোঁজ নিয়ে ওই এলাকার মুসলমান ভাইদের কাছে ইসলামের বাণী পৌঁছানোর ব্যবস্থা করব। যারা এ ধরনের শিরক করছেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসনের কাছে সহযোগিতা চাইব। আল্লাহ তায়ালা আমাদের এমন ঈমান বিধ্বংসী শিরকি কর্মকাণ্ড থেকে বেঁচে থাকার তওফিক দান করুন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯১০ ঘণ্টা, মে ০২, ২০২৪
এসআরএস