ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ডেঙ্গু নিয়ে সাঈদ খোকনের বক্তব্যের বিষয়টি এড়িয়ে গেলেন তাপস

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫৬ ঘণ্টা, মে ১৯, ২০২৪
ডেঙ্গু নিয়ে সাঈদ খোকনের বক্তব্যের বিষয়টি এড়িয়ে গেলেন তাপস ছবি: শাকিল আহমেদ

ঢাকা: ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন সফলতার সাথে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়েছে এমন মন্তব্য করেছেন ডিএসসিসির মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।  

যদিও ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সমীকরণ নিয়ে সাবেক মেয়র মো. সাঈদ খোকন প্রশ্ন তুললেও এ বিষয়ে মেয়র কোনো মন্তব্য করেননি।

 

বিষয়টি এড়িয়ে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছু বলতে চাই না।  

এসময় সফলতার সঙ্গে ডিএসসিসি ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়েছে দাবি করে মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, দায়িত্ব নেওয়ার পর মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম ঢেলে সাজাতে আমরা সবচেয়ে বেশি মনোযোগ দিই। সে লক্ষ্য বাস্তবায়নে ২০২০ সালের ৬ জুন আমরা বছরব্যাপী সমন্বিত মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম শুরু করি। বর্তমানে সূচি অনুযায়ী সারাবছরই আমরা এ কার্যক্রম পরিচালনা করে চলেছি।

রোববার (১৯ মে) নগর ভবনে ‘উন্নত ঢাকার উন্নয়ন অগ্রযাত্রার ৪ বছর’ প্রতিপাদ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের বিগত ৪ বছরের সামগ্রিক কার্যক্রম নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে মেয়র তাপস এসব কথা বলেন।  

সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন।  

মেয়র তাপস বলেন, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে যে কর্মপরিকল্পনা রয়েছে সেটি ২০০০ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত কেউই এরকম পরিকল্পনার উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। কিন্তু আমরা সেটি করেছি। এই কর্মপরিকল্পনার মাধ্যমে প্রতিটি ওয়ার্ডে সকালে সাতজন এবং বিকেলে ছয়জন মশককর্মী গিয়ে যেখানে মশা বেশি থাকে সেখানে ওষুধ ছিটায়। প্রত্যেকটা ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর বাসায় আমার মশককর্মীরা গিয়েছে।  

তিনি বলেন, আগে কীটনাশকের মান নিয়ে কথা এলেও এখন কিন্তু কীটনাশক নিয়ে আর কোনো কথা শোনা যায় না। আমরা কীটনাশকের মান ধরে রেখেছি। আমাদের সুশাসন নিশ্চিত হয়েছে।

ডিএসসিসির মেয়র বলেন, মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম বেগবান করতে নতুন মশককর্মী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আগে ৪২৪ মশককর্মী এ কার্যক্রম পরিচালনা করতেন। বর্তমানে এক হাজার ৫০  জন মশককর্মী ও মশক সুপারভাইজার নিয়মিতভাবে মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছেন। একইসঙ্গে আমরা প্রয়োজনীয় যান-যন্ত্রপাতিও বাড়িয়েছি।

তিনি আরও বলেন, আমার দায়িত্বভার নেওয়ার পূর্বে ৫৫১টি ফগার মেশিন, ৪৩১টি হস্তচালিত মেশিন ও ১৭টি হুইলব্যারো মেশিন দিয়ে মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম পরিচালনা করা হতো। বিগত চার বছরে আমরা নতুন আরও ৫৩৫টি ফগার মেশিন, ৬০০টি হস্তচালিত মেশিন ও ২৯টি হুইলব্যারো মেশিন কিনেছি।

তাপস জানান, কোনো ওয়ার্ডে সপ্তাহে ১০ জনের বেশি ডেঙ্গুরোগী শনাক্ত হলে সে ওয়ার্ডকে লাল চিহ্নিত এলাকা (রেড জোন) ঘোষণা করে চিরুনি অভিযান পরিচালনা করা হয়ে থাকে। কর্পোরেশনের ১০টি অঞ্চলেই ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হচ্ছে।  

তিনি  বলেন, গত বছরের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত আমরা ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় নয় হাজার ৭৬৪ জন ডেঙ্গুরোগী পেয়েছি। তখন সারা দেশে রোগী ছিল ২ লাখ ৭১ হাজার ১৭৫ জন, যা সারাদেশের মোট রোগীর মাত্র ৩ দশমিক ৬০ শতাংশ। ফলে সফলতার সঙ্গে আমরা ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়েছি।

এর আগে গেল বুধবার (১৫ মে) মালিবাগ মোড় সংলগ্ন উড়ালসেতুর নিচে ১২ নম্বর ওয়ার্ডের গণশৌচাগার উদ্বোধন শেষে ডিএসসিসি মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস দাবি করেন, মশা নিয়ন্ত্রণের কারণে ২০১৯ সালের তুলনায় (সাঈদ খোকনের আমল) ২০২৩ সালে ঢাকায় ডেঙ্গু রোগী অর্ধেক কমেছে।  

মেয়র তাপসের এই বক্তব্যের প্রেক্ষিতে গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে প্রতিক্রিয়া দেন সাবেক মেয়র সাঈদ খোকন।

গতকাল ডেঙ্গু নিয়ে তাপসের বক্তব্যের পাল্টা জবাবে সাঈদ খোকন বলেন, ২২ বছরের রেকর্ড ভঙ্গ করে ২০২৩ সালে ডেঙ্গুর আক্রান্তের সংখ্যা তিন লক্ষের অধিক ছিল এবং সারা দেশে মৃতের সংখ্যা ছিল এক হাজার ৭০৫ জন। এটি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সূত্রে একটি জাতীয় দৈনিকের সংবাদে প্রকাশিত হয়। সেই সংবাদে বলা হয়, ২০১৯ এর চেয়ে ২০২৩ সালে ঢাকায় ডেঙ্গু রোগী বেশি ছিল। সেখানে সিটি করপোরেশনের একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তি বলেছেন, ২০১৯ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে ঢাকায় ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ৪১ হাজার কম ছিল। যা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, অসত্য। এতে আমি অত্যন্ত কষ্ট পেয়েছি, দুঃখ পেয়েছি। নগরবাসী হতভম্ব হয়েছে। নগরবাসী অবাক হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৯ ঘণ্টা, মে ১৯, ২০২৪
ইএসএস/এসএএইচে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।