ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

খালের পাড়ে বসবে সিসি ক্যামেরা, ময়লা ফেললে আইনি ব্যবস্থা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪৫ ঘণ্টা, মে ২৮, ২০২৪
খালের পাড়ে বসবে সিসি ক্যামেরা, ময়লা ফেললে আইনি ব্যবস্থা

ঢাকা: রাজধানীর খালের পাড়ে সিসি ক্যামেরা বসানো হবে। খালগুলোয় কেউ ময়লা ফেললে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।

মঙ্গলবার (২৮ মে) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণের পথে টেকসই নগরায়ন শীর্ষক অষ্টম নগর সংলাপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিজাস্টার সায়েন্স অ্যান্ড ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্স বিভাগ ও ২০টি আন্তর্জাতিক বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার কনসোর্টিয়াম আরবান আইএনজিও ফোরাম যৌথভাবে এই সংলাপ আয়োজন করেছে।

অনুষ্ঠানে আতিকুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নত দেশে পদার্পণের লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছে। উন্নত বাংলাদেশে জনগণের জন্য সব পর্যায়ে স্মার্ট সেবা নিশ্চিত হবে। স্মার্ট নগর গড়তে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন কাজ করছে।

আমরা দেখছি অনেকে অসচেতনভাবে গৃহস্থালির বর্জ্য খাল, ডোবা, নালা, ড্রেনে ফেলে দেয়। সারফেস ড্রেনে ও খালে এমন কোনো ময়লা নেই পাওয়া যায় না। পরিত্যক্ত লেপ, তোশক, সোফা, লাগেজ, খাট, ক্যাবল, টায়ার, কমোড, ফুলের টব, রিকশার অংশবিশেষ, টেবিল, চেয়ার, বেসিন, ব্যাগ, প্লাস্টিকের বিভিন্ন পাত্রসহ নানা পরিত্যক্ত পণ্য; এগুলোর কারণেই মূলত পানি প্রবাহ নষ্ট হচ্ছে, সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতার। খালের পাড়ে ক্যামেরা বসানো হবে। কেউ ময়লা ফেললে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ডিএনসিসি মেয়র বলেন, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সুস্থ ও আধুনিক নগর গড়তে ডিএনসিসি অনলাইন ভিত্তিক স্মার্ট সেবা বাড়াতে কাজ করছে। বর্তমান প্রজন্ম সেকেলে পদ্ধতিতে চলতে চায় না। তারা চায় অনলাইনভিত্তিক স্মার্ট সেবা। ডিএনসিসিতে ইতিমধ্যে অনলাইনে হোল্ডিং ট্যাক্স গ্রহণ এবং ট্রেড লাইসেন্স প্রদান করা হচ্ছে। ঘরে বসেই নগরবাসী এসব সেবা পাচ্ছে। সবার ঢাকা অ্যাপ চালু করেছি। যেকেউ ডাউনলোড করে শহরের যেকোনো সমস্যা ছবি তুলে শেয়ার করে দেন, দ্রুতই সমাধান করা হবে।

মেয়র বলেন, একসময় সেবা পেতে অনেক সময় ও ভোগান্তি ছিল। আমরা সেবাগুলো সহজীকরণে গুরুত্ব দিচ্ছি। ডিএনসিসি হটলাইন চালু করেছি। ১৬১০৬ হটলাইন নম্বরে চব্বিশ ঘণ্টা যেকোনো অভিযোগ জানাতে পারছেন নগরবাসী। গতকাল ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ভারী বৃষ্টিতে বিভিন্ন জায়গায় পানি জমা ও গাছ উপড়ে পড়ার তথ্য জানিয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে কুইক রেসপন্স টিম পৌঁছে ব্যবস্থা নিয়েছে। একদিনে ২৪ ঘণ্টায় ডিএনসিসির হটলাইনে ২৮১ নাগরিক ফোন করেছেন। তাদের সেবা দেওয়া হয়েছে।

আতিকুল ইসলাম বলেন, সড়কে শৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে অন স্ট্রিট স্মার্ট পার্কিং চালু করেছি। গুলশানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক (এআই) ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম পরীক্ষামূলক চালু করেছি। আমিনবাজার ল্যান্ডফিলে বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেটির বাস্তবায়নও শুরু করেছি।

আধুনিক নগর গড়ায় জনগণকেও দায়িত্ব পালন করতে হবে উল্লেখ করে ডিএনসিসি মেয়র বলেন, একসময় ৫৪টি খাল ছিল ঢাকায়। সময়ের ব্যবধানে খালগুলো দখল হয়ে গেছে। সিটি কর্পোরেশন খালগুলো বুঝে পাওয়ার পর উদ্ধার করে খালের উন্নয়ন করছি। কিছুদিন আগে মোহাম্মদপুরে লাউতলা খালে অবৈধ ১০ তলা ভবন ভেঙে দিয়েছি। ভবন সরিয়ে নিতে ১৫ দিন সময় দেওয়ার পরেও সরিয়ে না নেওয়ায় আমরা নিলামে মাত্র ৬০ হাজার টাকায় বিক্রি করে দিয়েছি। দখলদারদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।

ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে ভারী বৃষ্টিতে ডিএনসিসি এলাকার জলাবদ্ধতা পরিস্থিতি নিয়ে সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, ২৪ ঘণ্টায় ঢাকায় ২২৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এমন ভারী বৃষ্টিতেও ডিএনসিসি এলাকার প্রধান প্রধান সড়কগুলো থেকে শতভাগ পানি নিষ্কাশন করা হয়েছে। সারারাত ডিএনসিসির ১০টি কুইক রেসপন্স টিম এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা কাজ করে ডিএনসিসি এলাকার সব প্রধান সড়কগুলো থেকে পানি সরিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে সক্ষম হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস পাওয়ার পরই আমরা প্রস্তুতি নিয়েছি। সংশ্লিষ্ট সকলের ছুটি বাতিল করেছি। নগর ভবনের কেন্দ্রীয় মনিটরিং সেন্টার থেকে সার্বক্ষণিক তদারকি করা হচ্ছে। আমি নিজে মনিটরিং সেন্টার পরিদর্শন করেছি। সার্বক্ষণিক হটলাইন নম্বর চালু রাখাসহ কুইক রেসপন্স টিম ও পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা কাজ করেছে৷ সবাই এখনো কাজ করছে এবং আবারও বৃষ্টি হলে সর্বদা প্রস্তুত থাকবে।

সংলাপে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৩ ঘণ্টা, ২৮ মে, ২০২৪
এমএমআই/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।