পাথরঘাটার উপকূল ঘুরে: কাঁধে একটি গামছা, গায়ে পাতলা গেঞ্জি। দেখলেই মনে হবে কতদিন যেন ধোয়া হয়নি।
আ. মোতালেব পাথরঘাটা সদর ইউনিয়নের উত্তর চরলাঠিমারা (পাঁচ চূঙ্গা) এলাকার বাসিন্দা। দীর্ঘ বছর বিষখালী নদীর পাড়ে বেড়িবাঁধের ওপরেই বসবাস করছেন এই দম্পতি। চার সন্তান তারা নিজেদের সংসার নিয়েই আছেন। কোনো রকম বেঁচে আছেন তারা। ৯৮ বছরে তার বাড়ি চার বার নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।
কথা হলো আ. মোতালেব শরীফের সঙ্গে। জিজ্ঞেস করতেই কান্না জড়িত কণ্ঠে বললেন, ‘বাবারে বাইচা আছি এডাই কপাল। কি জিগাবেন আর কি কমু...। মোগো পোড়া কপাল নিয়া জন্মাইছি’। মোতালেব বলেন, ‘বাপ দাদার যে জমি আছিল তা নদীতে খাইয়া হালাইছে। বহু বছর বইরা ওয়াপদায় থাহি। এই বয়সে ৭০ এর বইন্যা দেখছি, সিডরসহ কত বইন্যা কিন্তু এবারের (রিমাল) বইন্যার মতো দেখি নাই’।
তিনি আরও বলেন, ‘৭০ এর ও সিডরের বইন্যায় দেখছি পানি আইছে আর গ্যাছে। কিন্তু এই বইন্যার মতো এতো সময় পানি থাহে নায় কোনো বইন্যায়। হাত দিয়ে ভাঙা ঘরটি দেখাচ্ছেন মোতালেব আর বলছেন মোর মরণও অইবে হয় মাটি চাপা, না হয় গাছের চাপায় আর না হয় ঘর চাপায়; মোগো তো কপালে এইয়াই আছে’।
একই গ্রামের বাদল সরদার বলেন, বন্যায় কোনো মানুষের মৃত্যু কম হয়েছে ঠিক কিন্তু ঘরবাড়ি, গাছপালা কৃষি ও মাছের যে ক্ষতি হয়েছে তা পূরণ হওয়ার নয়। দীর্ঘ সময় পানি থাকায় ও বেড়িবাঁধ কয়েক জায়গা ভেঙে যাওয়ায় এমন অবস্থা।
পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. রোকনুজ্জামান খান বলেন, ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকায় প্রায় চূড়ান্ত। ডিসি স্যারের নেতৃত্বে এবং সংসদ সদস্যের দিক নির্দেশনায় আমাদের কাজ চলমান। ক্ষতিগ্রস্তরা কেউ সহায়তা থেকে বাদ পড়বে না আশা করছি। তবে এ ক্ষেত্রে সরকারের বরাদ্দ আরও বাড়ানো দরকার।
বাংলাদেশ সময়: ১১৩৪ ঘণ্টা, জুন ১, ২০২৪
এসএম