ঢাকা: দেশের ১১ ভাগ মানুষ আর্সেনিক দূষণের ঝুঁকিতে রয়েছেন বলে সংসদে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, আর্সেনিকের কবল থেকে সাধারণ মানুষকে সুরক্ষা দেওয়ার জন্য সরকার বিভিন্ন প্রকল্প নিয়েছে।
মঙ্গলবার (১১ জুন) জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে মন্ত্রী এ তথ্য জানান।
স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য খসরু চৌধুরীর এক প্রশ্নের লিখিত জবাবে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী জানান, ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাবের কারণে ড্রোনের মাধ্যমে মশার প্রজননকেন্দ্র চিহ্নিত করে কীটনাশক প্রয়োগ করা হচ্ছে। সিটি করপোরেশনের সব ওয়ার্ডে প্রতিদিন লার্ভিসাইডিং এবং অ্যাডাল্টিসাইডিং করা হয়। এছাড়া, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে তাৎক্ষণিকভাবে রোগীর বাড়ি পরিদর্শন ও এর চারপাশে লার্ভিসাইডিং এবং অ্যাডাল্টিসাইডিং করা হয়ে থাকে।
সরকার দলীয় সংসদ সদস্য শফিউল আলম চৌধুরীর প্রশ্নের জবাবে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী জানান, দেশের ১২টি সিটি করপোরেশনের এডিপি'র ডেঙ্গু মোকাবিলা ও পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমের জন্য চলতি অর্থবছরের ৩২ কোটি এবং পৌরসভায় ২০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, ইউনিয়ন পরিষদের উন্নয়ন সহায়তা খাতের আওতায় ইউনিয়নের অনগ্রসরতা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং রোগের প্রাদুর্ভাব মোকাবিলার জন্য ১০০ কোটি টাকা সংস্থান রাখা হয়েছে।
সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য ফরিদুন্নাহার লাইলীর প্রশ্নের জবাবে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, ঢাকা শহরে মশক নিধনে সরকার নতুনভাবে ‘ঢাকা মশক নিবারণী দফতরের কার্যক্রম’ দেশব্যাপী বিস্তৃত করতে এই দপ্তরের বিদ্যমান সাংগঠনিক কাঠামো (অর্গানোগ্রাম) সংশোধন করে একটি পূর্ণাঙ্গ অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা নেওয়া যেতে পারে।
তিনি বলেন, ঢাকা মশক নিবারণী দপ্তরের বিদ্যমান সাংগঠনিক কাঠামো পরিবর্তন করে নতুন জনবল সৃষ্টি, যন্ত্রপাতি ও মানসম্মত কীটনাশক কেনার পাশাপাশি মশক কীট পরীক্ষার জন্য একটি স্থায়ী ল্যাব প্রতিষ্ঠা করা হবে।
আর্সেনিক দূষণের ঝুঁকিতে ১১ ভাগ মানুষ
সংসদ সদস্য মোরশেদ আলমের প্রশ্নের জবাবে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী জানান, দেশের ১১ ভাগ মানুষ আর্সেনিক দূষণের ঝুঁকিতে রয়েছেন। আর্সেনিকের কবল থেকে সাধারণ মানুষকে সুরক্ষা দেওয়ার জন্য সরকার বিভিন্ন প্রকল্প নিয়েছে। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের মাধ্যমে গ্রামাঞ্চলে একাধিক প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এর আওতায় ২০২৫ সালের মধ্যে ১০ লাখ ৬৫ হাজার আর্সেনিকমুক্ত পানির উৎস স্থাপন করা হবে। এক্ষেত্রে গভীর নলকূপ ছাড়াও পাইপের মাধ্যমে পানি সরবরাহের ব্যবস্থা, বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ ব্যবস্থা এবং পুকুর খনন ও পুনঃখননসহ সৌরচালিত পন্ড স্যান্ড ফিল্টার স্থাপন করা হবে। এতে ২০২৫ সালের মধ্যে আর্সেনিক দূষণ ঝুঁকি ৫-৬ ভাগে নেমে আসবে।
শিশুর জন্মের ৪৫ দিনের মধ্যেই জন্ম নিবন্ধন
শিশুর জন্মের ৪৫ দিনের মধ্যে কোনো ধরনের ফি ছাড়াই জন্ম নিবন্ধন সম্পন্ন করা হয়ে থাকে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী তাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, শিশুর জন্মের পরপরই জন্ম নিবন্ধন ইস্যুর ব্যবস্থা আছে। জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন আইন অনুযায়ী, শিশুর পিতা বা মাতা বা অভিভাবক বা নির্ধারিত ব্যক্তি শিশুর জন্মের ৪৫ দিনের মধ্যে জন্ম সংক্রান্ত তথ্য নিবন্ধকের কাছে প্রদানের জন্য বাধ্য থাকবেন। এছাড়া হাসপাতালে জন্ম গ্রহণকারী শিশুর জন্মের পরপরই হাসপাতাল থেকে নিবন্ধকের কার্যালয়ে জন্ম নিবন্ধনের জন্য ই-নোটিফেকশন পাঠানো হয়ে থাকে। প্রাপ্ত তথ্য এবং ই-নোটিফেকশন অনুযায়ী, নিবন্ধক (সিটি করপোরেশনের মেয়র, পৌরসভার মেয়র বা তাদের দেওয়া ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তি, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, ক্যান্টনমেন্ট এক্সিকিউটিভ অফিসার এবং বিদেশে বাংলাদেশ দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) নিবন্ধন শেষ করে থাকেন।
বাংলাদেশ সময়: ২১১১ ঘণ্টা, জুন ১১, ২০২৪
টিএ/এমজেএফ